পেশাগত জীবন মানেই নিজের কর্মক্ষেত্রের দায়িত্বগুলো আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করা এবং সততার সাথে তা পূরণ করা। কিন্তু অতীতে বেশিরভাগ মানুষ মনে করতেন পেশাগত জীবন মানেই দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ এবং নিয়মনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রকাশ পরিচালনা করা। বর্তমানেও মানুষ এই ধারণাটি নিজেরদের মাঝে বয়ে বেড়াচ্ছে।

মানুষ কতিপয় কিছু বিষয়কে পেশা বিরোধ আচরণ হিসেবে বিবেচনা করাটাই স্বাভাবিক নিয়মের আওতাভুক্ত করে নিয়েছে। যদি কেউ আপনাকে অপেশাদার বলে থাকে তাহলে বুঝবেন আপনি নিশ্চয় এমন কিছু বলেছেন অথবা করেছেন যা অন্যদের জন্য অস্বছন্দবোধ সৃষ্টি করেছে। পেশাদার হওয়া মানেই এই নয় যে আপনি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ এবং নিয়মনিষ্ঠ ব্যক্তি শুধুমাত্র আপনার পেশাগত জীবনে। এটা যেকোনো পরিবেশে হতে পারে। হতে পারে আপনার বাড়ি পরিচালনার কাজ। তাই পরিচালনা করার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিষয় সম্বন্ধে ধারনা থাকতে হবে। তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে ব্যক্তির আচারআচরন; কারণ অবশ্যয়ই বাজে আচরন আপনার অবস্থানকে নষ্ট করে দেয়। তেমনই সাতটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে আমরা আলোচনা করব যেগুলো পেশাগত জীবনে একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের থাকা চায়। 

ওয়াদা রক্ষা করাঃ

প্রায় সবাই বলেআমি কথা রক্ষা করিকিন্তু অনেকেই তা করে না। মনে রাখবেন আপনার প্রতিটা কথা গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থবহুল। তাই ভেবেচিন্তে কথা বলুন যেন নিজের কথা রক্ষা করতে পারেন এবং নিজের অবস্থান সুরক্ষিত থাকে। আর চাকরিক্ষেত্রে কথা রক্ষা না করা মানে নিজের কাজ দায়িত্বকে এড়িয়ে চলা।

নিজের ভুলের জন্য অন্যকে দোষী না করাঃ

কাজের মাঝে যদি নিজের কোন ভুল হয়ে থাকে তা ঠিক করে নতুন করে কাজ করা। তবে মনে রাখবেন নিজের ত্রুটির জন্য অন্য কাউকে দোষারোপ করবেন না। এতে অন্যের ক্ষতির সাথে আপনি নিজের কাজের এবং মানবিকতার ক্ষতি করছেন। এটা আপনার অবস্থান নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।

অসৎ কাজে লিপ্ত হওয়াঃ

এক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম কাজ রয়েছে। যেমন নেশা জাতীয় কিছু গ্রহণ করা। এটা অনেক বড় একটি অপেশাদার আচরন। কারণ এই কাজগুলো মানুষের মস্তিষ্কের বিকার করে মানুষের সুস্থতা নষ্ট করে দেয়। আর যদি আপনি পরিচালক হিসেবে কাজ করেন তবে আপনি কখনোই ভাল কিছু দিতে পারবেন না আপনার প্রতিষ্ঠান তথা সমাজকে।

মানুষের ব্যক্তিগত ব্যপারে হস্তক্ষেপ করাঃ

পেশাগত জীবনে অনেক মানুষের সাথে কাজ করতে হয়। একেকজন মানুষ একেক রকম ধারনা মানুষিকতা নিয়ে থাকে। তাই কখনোই অন্যদের ব্যক্তিগত পছন্দ নিয়ে নিন্দা করতে নেই এমনকি তাদের অভিরুচির উপর নিজের অভিরুচির প্রয়োগ করতে নেই। এতে মানুষ আপনাকে সম্মান করার কারণ খুঁজে পাবে না।

সহকর্মীকে তুচ্ছ না করাঃ

কাজের ক্ষেত্রে অনেক সহকর্মীর মাঝে সবাই যে ভাল কাজ পারবে তা আশা করা ভুল। মানুষের কাজের ক্ষমতা বিভিন্ন। তাই কেউ যদি কম কাজ পারে তার জন্য তাকে ছোট করা ঠিক নয়। বরং তাকে সাহায্য করার মানুষিকতা রাখুন।

সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষাঃ

আমরা জীবনে যথেষ্ট সময় পাই নিজেদের কাজ সম্পন্ন করার। তাই ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে সবার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার মানেই হয় না। সুতরাং যতটুকু সম্ভব আশেপাশের মানুষের সাথে সাক্ষাৎ, ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখুন।

অশ্রাব্য শব্দ প্রয়োগ না করাঃ

অনেকই আছেন যারা গালাগালি করে অভ্যস্ত। এটা মানুষের অনেক বড় একটি দোষ। কারণ এতে পরিবেশের সাথে নিজের অবস্থান নষ্ট হয়ে যায়। যাকে গালি দেওয়া হয় এটা তার জন্য অনেক বেশী অপমানজনক। তাই কখনোই অশ্রাব্য শব্দ প্রয়োগ করা উচিৎ নয়।

এই বিষয়গুলো যদি একজন ব্যক্তি মনে রাখেন এবং এই অনুযায়ী নিজেকে পরিচালনা করেন তবে আপনার পেশাগত জীবন অনেক বেশী মসৃণ, সুন্দর, সম্মানজনক সফল হবে।