দুই যুগ ধরে ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করেছেন। ক্রিকেট পাগল ভারতে শচীন টেন্ডুলকার ছিলেন দেবতার আসনে। প্রায় দুই যুগ ধরে প্রচারণার আলোতে থাকার পরও তাঁর সুশৃঙ্খল জীবন সবার কাছেই ছিল বিস্ময়ের ব্যাপার। কীভাবে সম্ভব হল তাঁর এই দীর্ঘ ক্যারিয়ার? খেলা ছাড়ার প্রায় দুই বছর পর টেন্ডুলকার নিজেই জানিয়েছেন তাঁর লম্বা ক্যারিয়ারের রহস্য। বলেছেন, তিনি কোনো দিন মদ স্পর্শ করেননি, ঠোঁটে দেননি জলন্ত সিগারেট।

পুরো ক্যারিয়ারে তিনি তাঁর বাবাকে আদর্শ মেনেছেন। শিক্ষক বাবার নির্দেশই ছিল সংযমী জীবন-যাপনের। ভারতের অন্যতম বড় সেলিব্রেটি হয়েও সাধারণ জীবন-যাপনই ছিল তাঁর ব্রত। অর্থের থলে নিয়ে অনেক অ্যালকোহল ও সিগারেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তাঁর পেছনে ঘুরলেও কোনো দিনই এসবের প্রচারে অংশ নেননি। শতকোটি রুপির অর্থের প্রলোভনও তিনি পায়ে ঠেলেছিলেন অবলীলায়। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে অসংখ্য পণ্যের প্রচারণা-দূত হলেও ক্ষতিকর পণ্য থেকে দূরেই থেকেছেন তিনি।

যে মানুষটা তাঁর ‘আদর্শ জীবনাচরণে’র নেপথ্যের নায়ক, সেই বাবার স্মৃতি উদ্বেলই করে তাঁকে, ‘আমার বাবা একটি জিনিস বলেছিলেন, কখনো ধূমপান বা মদ্যপানের প্রচারণা করো না। আমি সব সময় এই দুটি জিনিস থেকে দুরে থেকেছি।’

শচীন উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার এক অনুষ্ঠানে। নিজের বক্তৃতায় তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারের রহস্য বলে দেখিয়েছেন সাফল্যের রাস্তাটাও। ‘হাল ছেড়ো না’—শচীনের দৃষ্টিতে সাফল্যের অনুষঙ্গ এটিই। সাফল্যের কোনো শর্টকাট নেই সেটাও সকলকে জানিয়েছেন তিনি। সাফল্যে বাধা আসবে, এই সত্যকে ধ্রুব ধরেই সবাইকে এগিয়ে যেতে বলেছেন তিনি, ‘আমি নিজেও মাঝে-মধ্যে হতাশ হয়ে পড়তাম। অনেক পরিশ্রম করার পরেও সাফল্য না পেলে অনেকেই রণে ভঙ্গ দেন। কিন্তু এটা ঠিক না। এই সময়টাতেই চেষ্টা করতে হবে বাড়তি কিছু করার। এই বাড়তি পরিশ্রমই সাফল্য নিয়ে আসবে। সুতরাং কখনোই হাল ছেড়ে দিলে চলবে না।

 

সূত্র: prothom-alo