যেভাবে চাকরির আবেদন করবেন

চাকরি পাওয়ার জন্য প্রথমে আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সামনে এগোতে হয়। যদিও আবেদন করার সুনির্দিষ্ট কোনো প্রক্রিয়া নেই, তবুও পোস্টের উপর ভিত্তি করে আবেদনের ধরন ভিন্ন হতে পারে। এর জন্য আপনাকে গবেষণা করতে হবে এবং তথ্য অনুসন্ধান করতে হবে। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সর্ব প্রথম কাজ বা ধাপ হলো আবেদন করা। এজন্য প্রথমে সিভি তৈরি করতে হবে। সেখানে প্রার্থীর নাম, ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ সকল তথ্য দেওয়া থাকবে। প্রয়োজনে যেকোনো দুই বা তিনজন ব্যক্তির রেফারেন্স দেয়া যেতে পারে।

আপনি কোন ধরনের চাকরি করতে চান তা ভাবুন

আপনি কোন ধরনের চাকরি করতে চান বা কোন পোস্টে চাকরি করতে চান এইসব বিবেচনায় রেখে আবেদন করতে হবে। প্রতি বছর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে। কোন ক্ষেত্রে বা কোন সেক্টরে কাজ করতে চান তা আগে স্পষ্ট করে ভাবুন। আপনি চাকরি থেকে কী পেতে চান সে কথাও ভাবুন। উক্ত চাকরি বা কাজ করতে হলে কি ধরনের যোগ্যতার অধিকারী হতে হয় তাও দেখুন।

Photo: bayshorestaffing.com

বিজ্ঞপ্তির সাথে মিলিয়ে দেখুন, আপনার সে সকল যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে কিনা। তাছাড়া উক্ত চাকরি থেকে আপনি কত বেতন বা সম্মানী পাবেন তাও মুখ্য বিষয়। তাই যে চাকরি করবেন তার সম্মানী বা অর্থের পরিমাণ আপনার প্রত্যাশার সাথে মেলে কিনা  ভেবে দেখুন। কারণ চাকরি থেকে আপনি কত আয় করবেন তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে।

গবেষণা চালিয়ে যান

আপনি যে ধরনের চাকরি পছন্দ করেন সে ধরনের চাকরিতে সিভি ও কভার লেটার পাঠান। তবে সিভি পাঠানোর আগে কিছু জিনিস ভালো করে জেনে নিন। শুধু তাই নয়, যেসব কোম্পানিতে সিভি পাঠাবেন সেসব কোম্পানির উদ্দেশ্য, কাজ, সিস্টেম, পণ্য, বিক্রয় ও  বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া, মূল্যবোধ ইত্যাদি সম্পর্কে ভালো করে জানুন। ইন্টারনেট থেকেও যথাসম্ভব তথ্য জানার চেষ্টা করুন।

Photo: rantnow.com

আপনি যেসব কোম্পানি আবেদন করবেন, সেসব কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে সকল তথ্য জেনে নিন। কারণ ওয়েবসাইটে তাদের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য সহ সব কিছুর তথ্য দেয়া থাকে।

সিভি পাঠান

চাকরির আবেদনের জন্য সিভি একটি মুখ্য বিষয়। তাই একটি তথ্যবহুল ও নির্ভুল সিভি পাঠান। সিভিতে আপনার সকল তথ্যের বানান, ছবি ইত্যাদি ঠিক আছে কিনা খেয়াল রাখুন। শুধু শিক্ষাগত যোগ্যতা, নাম, পরিচয় থাকলেই হবে না। আপনার কাজের অভিজ্ঞতা, গুণাগুণ, দক্ষতার কথাও উল্লেখ করুন। কোনো প্রজেক্টে কাজ করে যদি কোনো পুরষ্কার বা অ্যাওয়ার্ড পেয়ে থাকেন তাহলে তাও উল্লেখ করুন।

Photo: fairygodboss.com

আবেদন প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হবে তা কর্মরত ব্যক্তির কাছে জিজ্ঞেস করুন

সিভি প্রস্তুত করার পর আপনি যে প্রতিষ্ঠানে সিভি দিতে চান সে প্রতিষ্ঠানের যেকোনো একজন কর্মীর কাছে সিভি কীভাবে পাঠাতে হবে, মেইলে পাঠাতে হবে নাকি সশরীরে জমা দিতে হবে, সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে পারেন।

Photo: recruitmentagencynow.com

অনেক সময় নতুন কোনো প্রতিষ্ঠান কর্মী খুঁজলে আলাদা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে আশে পাশের পরিচিত ও যোগ্য ব্যক্তিকে কর্মী হিসেবে নিয়ে নেয়। তাই কিভাবে সিভি জমা দিতে হবে তা সম্পর্কে নিশ্চিত হন।

যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে কভার লেটার লিখুন

যদি আপনার মনে হয় আলাদা করে কভার লেটার লেখার প্রয়োজন আছে তাহলে লিখুন। কভার লেটারের উপরে কিছু বিষয় স্পষ্ট করে লিখুন। কোম্পানির ব্যক্তিত্ত্ব ও মিশন কিভাবে আপনার মূল্যবোধের সাথে যায়, আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতা কিভাবে কোম্পানির জন্য সম্পদ হতে পারে, উক্ত ভূমিকায় কাজ করে আপনি কি অর্জন করতে চান, এই চাকরির উক্ত পদটি পেতে আপনার অনন্য ও অসাধারণ কোন যোগ্যতাটি রয়েছে যা অন্য কারো নেই, কোন বিশেষ দিকগুলোর কারণে আপনি উক্ত চাকরি করতে চান ইত্যাদি কভার লেটারে লিখুন।

অন্যদের মতামত নিন

আপনার সিভি ও কভার লেটার ঠিক আছে কিনা তা অভিজ্ঞ কোনো একজনকে দেখান। সে হতে পারে আপনার বন্ধু কিংবা বড় আপু, বড় ভাই। তাদের দেখালে আপনার সিভির ছোট ছোট ভুল ভ্রান্তি ধরে দিতে পারবে এবং কোনো কিছু বাদ পড়লে সংযোজন করে দিতে পারবে।

Photo: nottingham.ac.uk

তাছাড়া আপনার আত্মীয় বা কাছের মানুষদের মধ্যে যদি কেউ উক্ত চাকরি করে থাকেন তাহলে তাদের পরামর্শ নিতে পারেন।

রেফারেন্স দিন

আপনি সিভিতে দুইজন বা তিনজন ব্যক্তির রেফারেন্স যোগ করতে পারেন। তবে যাকে রেফারেন্স হিসেবে দিবেন, তার পদমর্যাদা কী তা আগে থেকে জেনে নিন। আপনি যাদের রেফারেন্স দিতে চান তাদের তথ্য নির্ভুল ও সঠিক কিনা তা জেনে নিন। তাদের মেইল এড্রেস, বাসার ঠিকানা, ফোন নম্বর, পদমর্যাদা, বর্তমান কোম্পানির নাম যেন সঠিক থাকে তা খেয়াল করুন।

আবেদন করুন

সিভি ও কভার লেটার প্রস্তুত হয়ে গেলে আবেদন করুন। আবেদন মেইল, অনলাইন বা সশরীরে গিয়েও করতে পারেন। উক্ত কোম্পানিতে গিয়ে ফ্রন্ট ডেস্কে যিনি কর্মরত আছেন তার সাথে কথা বলে সিভি জমা দিতে পারেন।

Photo: cv-library.co.uk

তবে আপনার আচরণ ও ব্যবহার যেন বিনয়ী ও ভদ্র থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। তাছাড়া মেইলের মাধ্যমেও আবেদন করতে পারেন।

ফলোআপ

আবেদন করার পর, সিভি জমা দেওয়ার পর তাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন।তারা কী কী তথ্য নতুনভাবে দেয় বা সাক্ষাতকারের তারিখ সম্পর্কে কিছু বলে কিনা তা জানুন। যেকোনো সময় যেকোনো সিদ্ধান্তের পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাছাড়া সশরীরে সিভি জমা দিলেও কারো কাছে ফোন দিয়ে  সাক্ষাতকারের তারিখ কবে নাগাদ হতে পারে সে ব্যাপারে জেনে নিতে পারেন।

Photo: monster.ca

এক সপ্তাহ পর পরও খোঁজ নিতে পারেন। তবে খোঁজ নেয়ার সময় বিনয়ী ও ভদ্র ব্যবহার করবেন। এমন কোনো আচরণ করবেন না যার কারণে কোন কর্মী বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হতে পারেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *