Image result for australia flag student

এক সময়ে পৃথিবীর যেকোনো দেশের নাগরিকদের যেকোনো রাষ্ট্রে অবাধে প্রবেশাধিকারের সুযোগ বিদ্যমান ছিলো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় নিজ দেশের বাইরে গমন করা বেশ জটিল। বর্তমান সময়ে নানাবিধ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে হয়। এসব প্রক্রিয়া রাষ্ট্র অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত মানুষ উচ্চশিক্ষা অর্জন ও কর্মজীবন শুরু করার জন্য বিদেশে গমন করে থাকে।

Source: finder.com

উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া যতটা সহজ, বরং কর্মজীবন শুরু করা তারচেয়ে বেশ কঠিন। আপনি যদি দেশের বাইরে কর্মজীবন শুরু করতে চান, তবে আপনার শুধুমাত্র ব্যক্তিগত দক্ষতা থাকলেই হবে না, বরং যে দেশে ক্যারিয়ার গড়তে চান, সে দেশে কীভাবে বাহিরের রাষ্ট্রের নাগরিকেরা কাজ করার সুযোগ পেতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে এবং তদানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তবেই আপনি সে দেশে কাজ করার সুযোগ পাবেন, অন্যথায় আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আপনি ক্যারিয়ার গড়তে ব্যর্থ হবেন। বিশ্বের বেশ কিছু রাষ্ট্র রয়েছে, যেসব দেশে সাধারণত মানুষ ক্যারিয়ার গড়তে ইচ্ছা পোষণ করে থাকে। তেমনি একটি রাষ্ট্র হলো অস্ট্রেলিয়া। বসবাসের জন্য অস্ট্রেলিয়াকে পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম একটি সেরা দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এদেশের জীবনযাত্রার মান খুবই উন্নত এবং দেশটি সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ানেরা শিক্ষিত, উদার ও খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়ার জন্য সুপরিচিত। আপনার যদি স্বপ্ন থাকে অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার শুরু করবেন, তাহলে আপনার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে, অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে যা যা জানা দরকার, তা এই আর্টিকেলটিতে পাবেন। তাই আপনি অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে প্রথমেই এই আর্টিকেলটি পড়ুন।

দেশ পরিচিতি

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে পাপুয়া নিউগিনি, ইন্দোনেশিয়া ও পূর্ব তিমুরের অবস্থান, উত্তর-পূর্বে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও ভানুয়াতু এবং দক্ষিণ-পূর্বে নিউজিল্যান্ড অবস্থিত। এই দেশটি আয়তনে বেশ বড়। পার্থ থেকে সিডনির দূরত্ব প্রায় ২৫ হাজার মাইল। আর এই পথ অতিক্রম করতে ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। কারণ বিভিন্ন টাইমজোন এবং মরুভূমির মধ্য দিয়ে এই পথ অতিক্রম করতে হয়। আয়তনের তুলনায় এই দেশে জনসংখ্যা খুবই কম। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে মাত্র ৩.২ জন।

Image result for australia visit

এমনকি এই দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ রাজ্য ভিক্টোরিয়া, এই অঞ্চলেও প্রতি বর্গ কিলোমিটারে মাত্র প্রায় ২৪ জন মানুষ বাস করে। সিডনি, মেলবোর্ন, ব্রিসবেন, পার্থ এবং অ্যাডিলেড হলো অস্ট্রেলিয়ার জনবহুল পাঁচটি শহর। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী জনসংখ্যার মধ্যে তরুণদের হার সংখ্যায় বেশি। বসবাসকারীদের মধ্যে ২৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সীদের হার প্রায় ৪১ শতাংশ। বেশিরভাগ মানুষই বাস করে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল রেখা বরাবর। ব্রিটিশরা ১৭৮৮ সালে এই দেশে প্রথম বসতি স্থাপন করেছিলো বলে মনে করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্যাপক হারে অভিবাসী অস্ট্রেলিয়ায় ঢুকতে শুরু করে। ফলে জনতাত্ত্বিক পরিবর্তন খুব দ্রুত ঘটে। শুরুর দিকে অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রমুখী থাকলেও, গত ২০ বছর ধরে এশিয়ার সঙ্গেও তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।

Source: hostelworld.com

এতে বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মানুষদের, অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার গড়ার অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে অনেকেই অস্ট্রেলিয়ায় সফল ক্যারিয়ার গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। আপনিও যদি অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার গঠন করার স্বপ্ন দেখে থাকেন, তবে আপনার দক্ষতা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী চেষ্টা করুন। প্রত্যাশা করা যায়, খুব সহজেই নান্দনিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার গঠন করতে সক্ষম হবেন।

Image result for australia visit

ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সমূহ

অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদ বিদ্যমান রয়েছে। যেমন: ইউরোনিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস, খনিজ তেল, সোনার খনি ইত্যাদি। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর হওয়ার কারণে, এই দেশে ধাতু ও খনি শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। আপনি ইচ্ছা করলে, খুব সহজেই ধাতু ও খনি শিল্পের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবন শুরু করতে পারবেন। আবার সাম্প্রতিক সময়ে নিউ সাউথ ওয়েলসে পঞ্চাশ বিলিয়নের পরিবহন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, এতে ম্যাটেরিয়াল এবং পরিবহন শিল্পে প্রচুর চাকরির পদ সৃষ্টি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া আর্থিক শিল্পেও বেশ সমৃদ্ধ ; কমনওয়েলথ ব্যাংক, ওয়েস্টপ্যাক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়া ও এএনজেডয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এই শিল্পের অগ্রগতিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

Source: ayrbackpackers.com

এসব কোম্পানির পাশাপাশি বিভিন্ন বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান, যেমন: আইবিএম, ওরাকল, আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং, ডেলোয়েট ইত্যাদি কোম্পানিগুলোও প্রচুর কর্মপরিবেশ তৈরি করেছে। এসব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বাইরেও অস্ট্রেলিয়ায় আরো কিছু চাকরির ক্ষেত্র বিদ্যমান আছে। যেমন,
১. ভ্রমণ খাত
২. রাসায়নিক শিল্প
৩. ইস্পাত কারখানা
৪. খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান
৫. তথ্য প্রযুক্তি খাত
৬. শিক্ষা খাত
৮. কৃষি। অস্ট্রেলিয়া কৃষি শিল্পের উপরেও অনেকটাই নির্ভরশীল। এই দেশে প্রায় ৩৭ হাজার শ্রমিক কৃষিতে কর্মরত আছে।

Image result for australia flag student

স্নাতক স্তরের চাকরি

যেসব চাকরিতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর কিংবা আরো উচ্চতর ডিগ্রিধারীরা কর্মজীবন শুরু করা সুযোগ পেতে পারে, সাধারণত সেসব চাকরিগুলোই স্নাতক পর্যায়ের চাকরি বলা হয়ে থাকে। এসব চাকরিতে নিয়োগ পেতে হলে, আপনাকে অবশ্যই স্নাতক পর্যায়ের ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। এছাড়াও ভালো যোগাযোগের দক্ষতা, লিডারশিপ, সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা ইত্যাদি গুণাবলি থাকা জরুরী। অস্ট্রেলিয়ার স্নাতক পর্যায়ের চাকরিগুলোকে বিশ্বের প্রথম সারির চাকরি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। কারণ এসব চাকরিতে কর্মজীবন শুরু করে, খুব সহজেই উন্নতমানের জীবনযাপন করা সম্ভব হয়। অস্ট্রেলিয়াতে স্নাতক পর্যায়ের বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্র রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-
১. হিসাব সংক্রান্ত
২. ব্যাংকিং ও আর্থিক
৩. নির্মাণ শিল্প
৪. সরকারি ও সরকারি সেবা সংক্রান্ত

Source: news.com


৫. আইন
৬. খনি, তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র
৭. প্রযুক্তি খাত
৮. পরিবহন ও সরবরাহ ক্ষেত্র
৯. শিক্ষকতা
আমি এই আর্টিকেলটির প্রথম পর্বে অস্ট্রেলিয়া দেশটির পরিচয় তুলে ধরেছি এবং বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্র সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনি এসব চাকরিতে কীভাবে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। এ সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও তথ্য জানতে ২য় তথা শেষ পর্বটি পড়ুন। ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

F

Image result for australia visit