ভারতে বিনা খরচে পড়াশোনার সুযোগ

10 Top Reasons To Visit India

উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন কার না থাকে, আর সেটা যদি হয় বিনা খরচে, তাহলে তো কথাই নেই। কোনো খরচ ছাড়া পড়াশোনা করতে হলে আপনার প্রয়োজন স্কলারশিপ। আর সেই সুযোগ আছে পৃথিবীর সব দেশেই। আজ কথা বলব আইসিসিআর স্কলারশিপ নিয়ে। কোনো খরচ ছাড়াই পড়াশোনার সুযোগ দিচ্ছে ভারত সরকার। চলুন জেনে নেওয়া যাক আমি কীভাবে ভারতে স্কলারশিপ পেয়েছি ও আপনাদের কী কী করতে হবে।
সুযোগ–সুবিধাসমূহ।
* সম্পূর্ণ টিউশন ফ্রি।
* প্রতি মাসে উপবৃত্তি ১৮ হাজার ভারতীয় রুপি।
* যাওয়া-আসার ফ্লাইট ভাড়া।

{ "slotId": "2452885053", "unitType": "in-article" }

Indian Culture for Cultural Relations (ICCR) প্রতিবছর ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে ভারতে পড়তে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ফুল স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। তারা মূলত ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে।
প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ২০০ জনকে স্কলারশিপ দিচ্ছে আইসিসিআর। বিদেশে পড়তে যাওয়া মানে যে আপনাকে অনেক টাকা খরচ করতে হবে, বিষয়টি কিন্তু তা নয়। যদি আপনি একটু বুদ্ধি খাটান, একটু পরিশ্রম ও অনেক ইচ্ছা আর আগ্রহ থাকে, তাহলেই আপনার পক্ষে সম্ভব সম্পূর্ণ বিনা খরচে পড়াশোনা করা।

13 AMAZING Things to Do and See in India in 2021

আবেদন প্রক্রিয়া

আইসিসিআর প্রতিবছর জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফরম ছাড়ে। যোগ্যতার ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসিতে ৬০ শতাংশ মার্কস থাকলে আবেদন করতে পারবেন। আইইএলটিএস প্রয়োজন পড়ে না। থাকলে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে এ স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আগের রেজাল্টের চেয়ে পরীক্ষা ও ভাইভা ভালো করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের সময় আবেদনের পর লিখিত পরীক্ষা (ইংরেজি গ্রামারের ওপর) হতো। পরীক্ষায় ফলের পর ভাইভা হয়। এরপর ভাইভাতে টেকার পরই ইন্ডিয়ান হাইকমিশন অফার লেটার পাঠায়। অফার লেটার পাওয়ার পরপরই ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। ভিসা পাওয়ার অল্প কয়েক দিনের মধ্যে ইন্ডিয়ায় চলে আসি। এসব কাজ সম্পূর্ণ করতে ইন্ডিয়ান হাইকমিশন সব ধরনের সাহায্য করে। হাইকমিশনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনেক আন্তরিক, যেকোনো সমস্যা হলে সমাধান করে দেন।

{ "slotId": "", "unitType": "in-article", "pubId": "pub-6767816662210766" }

এ বছর করোনার কারণে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন আর সরাসরি পরীক্ষা হয় না। আইসিসিআর পোর্টালে গিয়ে আবেদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ছয়টা নির্ধারিত বিষয় থেকে একটা বিষয় নির্বাচন করে ৫০০ শব্দের মধ্যে একটা প্রবন্ধ লিখতে (কপি করা যাবে না) হবে। তবে আইসিসিআরে আবেদনের ক্ষেত্রে একটা বিষয় খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হচ্ছে পাসপোর্ট; যেটা থাকা বাধ্যতামূলক। এই স্কলারশিপে সাধারণত ২০০ সিট থাকে, যার মাধ্যে ১০০ সিট ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বাকি ১০০ সিট থাকে অন্যান্য। আইসিসিআর কোনো মেডিকেল সায়েন্সে স্কলারশিপ প্রদান করে না।

আবেদনের লিংক : http://a2ascholarships.iccr.gov.in/

New British Council report underlines the importance of – and increasing  competition for – Indian students - ICEF Monitor - Market intelligence for  international student recruitment


ইউনিভার্সিটি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক থাকতে হবে। এ জন্য সবচেয়ে ভালো হয় নির্ধারিত ইউনিভার্সিটি লিস্টে আপনার পছন্দের ইউনিভার্সিটি ভালো করে গুগল করে নিতে পারবেন। সেটা হলে খুব সহজেই আপনাদের ভালো ধারণা চলে আসবে ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে। এই স্কলারশিপে আবেদনের জন্য ইয়ার গ্যাপের কোনো বিধিনিষেধ নেই। এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স মিনিমাম ১৮ বছর হতে হবে।

স্কলারশিপ পাওয়ার পর যে বিষয়গুলো খুব সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে, তা হচ্ছে এম্বাসিতে গিয়ে অফার লেটার নেওয়া, অবশ্যই সঙ্গে পরিবারের কেউ একজন থাকতে হবে। তার পরপরই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। সবকিছু গুছিয়ে নেওয়া, প্রয়োজনীয় কিছু কেনার থাকলে তা কিনে ফেলা। বিশেষ করে জামাকাপড় যদি অন্য কিছু প্রয়োজন হয়, তা কিনে রাখা। ভিসা পাওয়ার পরপরই দুই–তিন দিন আগে থেকে টিকিট করে ফেলা।

Top 10 Prestigious Scholarships for Indian Students to Study Abroad

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কত টাকা নেওয়া প্রয়োজন

কারণ, আপনি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্ট্যাইপেন্ড পাবেন না। আইসিসিআরে রিপোর্ট করার এক থেকে দুই মাসের মাথায় স্ট্যাইপেন্ড হাতে পাবেন। সেটা আরও কম সময়ও হতে পারে। এটা নির্ভর করবে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যত তাড়াতাড়ি হবে। ২০-৩০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে পারেন। আমি ২০ হাজার টাকার মতো এনেছি, খুব বেশি সমস্যা হয়নি। ভারতে আসার পরে আপনাকে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে, সেটা হচ্ছে সিম কিনে ফেলা। এটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য। পাসপোর্ট আর ভিসা ফির সঙ্গে একটা পাসপোর্ট সাইজ ছবি দিয়ে যেকোনো দোকান থেকে সিম কিনে নিতে পারেন। এরপর ICCR–এ রিপোর্ট করার পর আপনাকে ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে রিপোর্ট করে ভর্তির কাজ শেষ করতে হবে। যদি আপনার ইউনিভার্সিটিতে হোস্টেল ব্যবস্থা থাকে তাহলে তাঁরাই আপনাকে সব ব্যবস্থা করে দেবেন। আমার ক্ষেত্রে তাই হয়েছে, কোনো সমস্যা হয়নি। যদি না থাকে তাহলে আপনাকে পিজি অথবা বাসা ভাড়া করে থাকতে হবে।

India - Study - Cardiff University

ভর্তি ও থাকার ব্যবস্থা ঠিক হওয়ার পরপরই আপনাকে FRRO–এর জন্য আবেদন করতে হবে। FRRO হাতে পাওয়ার পর আপনি সম্পূর্ণ চিন্তামুক্ত। আসার পর একটু প্রেশার যাবে শারীরিক ও মানসিক। এরপর পরিস্থিতির সঙ্গে সবকিছু মানিয়ে নিতে পারবেন। ক্লাস শুরু হলে নিয়মিত ক্লাসে অ্যাটেন্ড করা। আপনার যত ধরনের এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি, সেসবের সঙ্গে যুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন নিজেকে ও নিজের দেশের রিপ্রেজেন্ট করতে। আমি আমার ক্যাম্পাসে এই পর্যন্ত পাঁচটা ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছি। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে নিয়মিত যুক্ত আছি। পড়াশোনার পাশাপাশি আমার নিজস্ব সংগঠন ‘হাসিব গ্রন্থাদির’ নিয়ে কাজ করছি, যার মূল কাজ হচ্ছে বিদেশিদের বাংলা ভাষা শেখানো। এ পর্যন্ত ১০ দেশের ১৮ জনকে একটু একটু বাংলা শেখাতে পেরেছি। এ কাজগুলো অন্য রকম একটা ভালো লাগা, যা আমাকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করে।

যে দেশেই পড়াশোনা করতে যান না কেন, সে দেশের ভাষা–সংস্কৃতি সম্পর্কে ভালো ধারণা নিয়ে যাওয়া উচিত। যে দেশে যেতে চান বাংলাদেশে সেই দেশের দূতাবাসের খোঁজখবর নিন তারা কখন স্কলারশিপ দেয় এবং কী কী প্রয়োজন। আর এখন তো আর যাওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না অনলাইনে সহজেই আপনার পছন্দের ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে জেনে নিজে নিজে আবেদন করে নিতে পারেন। ভালো করে প্রস্তুতি নিয়ে আর ইচ্ছা আর মনোবল ঠিক রেখে সামনে পা বাড়ালে দেখবেন দেশের বাইরে খুব সহজেই স্কলারশিপ পাওয়া সম্ভব।

India Emerging as a Major International Study Hub for Bangladeshi Students  | Diplomatist

লেখক: মো. হাসিবুর রহমান, শিক্ষার্থী, বেঙ্গালুরু ইউনিভার্সিটি, ভারত। ইন্ডিয়ান গভ. ফুল ফান্ডেড স্কলার। (Source: Prothom Alo)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *