যে কারণে সকলেরই প্রতিদিন বই পড়া উচিত (পর্ব ২)

বই আমাদের মানবিক গুণসম্পন্ন করে গড়ে তোলে।  বই আলোকিত করে আমাদের।  বইয়ের পাতায় পাতায় জ্ঞান ছড়িয়ে থাকে। সেই জ্ঞান আমাদের চলার পথকে করে তোলে উন্নত। অনেক প্রতিভাবান ব্যক্তি রয়েছেন তারা যেন বিশ্বের  সব কিছু জানেন। তারা খুশী,  তারা বুদ্ধিমান,  তাদের জীবন সবসময় আকর্ষণীয়। কীভাবে তাদের মতো নিজেকে উন্নত করতে পারবো? একমাত্র উত্তর, তা হলো বই পড়া। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন বই পড়ার অভ্যাস আমাদের মাঝে কোন দিক গুলোর উন্নতি সাধন করে।

 

শব্দভান্ডার বিস্তার

অবশ্যম্ভাবীরূপে আপনার দৈনন্দিন শব্দভান্ডার বিস্তারে প্রতিদিন বই পড়া অনেক সাহায্য করে। নতুন ভাষা শেখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শব্দভান্ডার বিস্তার করা। তাই যত বেশি বই পড়বেন তত বেশি বাড়বে শব্দভান্ডার বিস্তারও।

তীব্রতর বিশ্লেষণাত্মক চিন্তার দক্ষতা

আপনি কি কখনও একটি আশ্চর্যজনক রহস্য উপন্যাস পড়ে সে বই শেষ করার আগে রহস্য নিজে সমাধান করার চেষ্টা করেছেন? রহস্য সমাধান করার সময় বাড়ে আপনার চিন্তা শক্তি। আর আপনি কাহিনিসূত্র থেকে বিকাশিত করতে পারেন নিজের বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাকে।

উন্নত ফোকাস এবং মনোযোগ

প্রতিদিন একটি বই পড়ার সাথে আপনার মনোযোগ ফোকাসে আসে পরিবর্তন। যেহেতু গল্পের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হয় সেহেতু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিজেকে নিবিষ্ট করতে পারেন সেই গল্পের সঙ্গে।

চ্যালেঞ্জ

বই পড়াকে একটা বড় দায়িত্ব বা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিন। যাচাই করে দেখুন, আপনি আসলেই পড়তে পারেন কি না। এক বছরে কতগুলো বই পড়লেন, হিসাব রাখুন। পরবর্তী বছরে নিজেকে ছাড়িয়ে যান। এমন করে আপনি আপনার জীবনের অনেক চ্যালেঞ্জ গ্রহণে সক্ষম তো হবেই সাথে সাথে তা পূরণেও দক্ষ হবেন আশা করি।

 

ভাল লেখার দক্ষতা

একজন ভাল পাঠক হতে পারেন একজন ভাল লেখক। প্রতিদিন কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে ১৫২০ মিনিটের জন্য বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। বিস্মিত হবেন যখন দেখবেন আপনার লেখার মাঝেও যখন খুঁজে পাবেন বিশাল পরিবর্তন।

স্থির লক্ষ্যে পৌঁছানো

যে বইটি পড়ছেন, তা বন্ধ করার আগে কত পৃষ্ঠা পর্যন্ত যাবেন, ঠিক করে নিন। এভাবে একটি নিয়ম বা অভ্যাস করে নিলে জীবনে আপনি আপনার নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন।

শান্তি

একটি ভাল বই পড়লে তা অপরিমেয় অভ্যন্তরীণ শান্তি নিয়ে আসতে পারে। আধ্যাত্মিক গ্রন্থে রক্তচাপ কমে আসে। মেজাজ খারাপ থাকলে কিংবা হালকা মানসিক অসুস্থতায় ভুগলে আপনাকে সাহায্য করার জন্য রয়েছে বই।

 

বিনামূল্যে বিনোদন

আমরা অনেক বিনোদনের মাধ্যম খুঁজি প্রতিনিয়ত যা বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে। কম বাজেটের বিনোদনের জন্য আপনি আপনার স্থানীয় লাইব্রেরীতে যান এবং বিনামূল্যে বিনোদন উপভোগ করুন বই পড়ে। গ্রন্থাগারে ক্রমাগত নতুন বই সংগৃহীত হয় যার ফলে আপনার পড়ার উপকরণ কখনো ফুরিয়ে যাবে না।

বই পড়ার জন্য চাই ভালো দৃষ্টিশক্তি এবং বেশ মনোযোগ৷ অথচ বয়স বাড়ার সাথে সাথে এক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে কিছু জটিলতা৷ তবুও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বই পড়া ছাড়বেন না৷ প্রয়োজনে আপনার উপযোগী একটু বড় অক্ষরে ছাপা এবং অধিক ফাঁকা ফাঁকা লাইন দিয়ে ছাপানো বই কিনে হলেও পড়া চালিয়ে যান৷ একবিংশ শতাব্দীর স্যাটেলাইটের এই যুগে ছেলেমেয়েরা টিভি দেখা আড্ডা দেয়ার প্রতি যতটুকু উৎসাহী, বই পড়ার প্রতি ততটা নয়। কিন্তু এই বই পড়ার অভ্যাস তার জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তাই এই ভাল অভ্যাসটুকু গড়ে তুলুন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *