লিখিত পরীক্ষা হবে তিনটি ধাপে। প্রথম ধাপে ১০০ নম্বরের ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন, দ্বিতীয় ধাপে ২৫ নম্বরের মনস্তত্ত্ব এবং তৃতীয় ধাপে ১০০ নম্বরের সাধারণ জ্ঞান ও পাটিগণিত বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে
শেষ হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশবাহিনীর সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই নিরস্ত্র) পদের শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের এবার মুখোমুখি হতে হবে লিখিত পরীক্ষায়। লিখিত পরীক্ষা হবে তিনটি ধাপে। প্রথম ধাপে ১০০ নম্বরের ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন, দ্বিতীয় ধাপে ২৫ নম্বরের মনস্তত্ত্ব এবং তৃতীয় ধাপে ১০০ নম্বরের সাধারণ জ্ঞান ও পাটিগণিত বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে। ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে আপনিও হতে পারেন বাংলাদেশ পুলিশবাহিনীর একজন সাব-ইন্সপেক্টর বা এসআই।
পরীক্ষার প্রস্তুতি
লিখিত পরীক্ষার ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন বিষয়ের পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে মোহাম্মদপুর থানার এসআই অপূর্ব কুমার বর্মণ বলেন, সাধারণত ইংরেজিতে ৫০ এবং বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন বিষয়ে ৫০, মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে। ইংরেজিতে সমসাময়িক বিষয়ের ওপর একটি রচনা, লেটার, ফিল ইন দ্য ব্ল্যাংকস থাকতে পারে। এ ছাড়া গ্রামার অংশ থেকে প্রশ্ন থাকবে। এ জন্য পড়তে হবে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির গ্রামার বইগুলো। Tense, Voice, Article, Parts of speech, Correct spelling, Antonym, Narration, Translation, Noun এই অধ্যায়গুলো চর্চা করলে ইংরেজিতে ভালো করা যাবে।
বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন বিষয়েও সমসাময়িক বিষয়ে ১টি রচনা, ১টি ভাবসম্প্রসারণ ও ১টি পত্র লিখন থাকতে পারে। বাংলা অংশে ভালো করতে হলে ব্যাকরণ অংশে বেশি জোর দিতে হবে। এ জন্য পড়া যেতে পারে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বইগুলো। ব্যাকরণ অংশে কারক, বিভক্তি, শব্দ, ভাষা, সন্ধিবিচ্ছেদ, সমাস, সমার্থক শব্দ, এক কথায় প্রকাশ, অনুবাদ, বানান শুদ্ধি, বাগধারা, বাক্যসংকোচন—এই অধ্যায়গুলো ভালোভাবে পড়লে কাজে দেবে।
সাধারণ জ্ঞানে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। এ অংশে ভালো করতে হলে নিয়মিত পত্রিকা পড়া, দেশি-বিদেশি সমসাময়িক খবরগুলো নিজের আয়ত্ত করে নিতে হবে। বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, জলবায়ু, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, বিভিন্ন জেলার আয়তন, অর্থনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। আর আন্তর্জাতিক অংশের জন্য বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, দিবস, পুরস্কার ও সম্মাননা, সাম্প্রতিক ঘটনা এসব সম্পর্কে জানা থাকলে ভালো করা যাবে। এ ছাড়া বিগত বছরগুলোর এসআই নিয়োগের প্রশ্নগুলো সমাধান করলেও কাজে দেবে বলে জানান অপূর্ব কুমার বর্মণ।
গণিতে ভালো করতে হলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বইগুলো বারবার চর্চা করতে হবে বলে জানান ভৈরব থানার এসআই অরুণ কুমার বসাক। তিনি বলেন, পাটিগণিত থেকে লসাগু, গসাগু, ঐকিক নিয়ম, শতকরা, সুদকষা, লাভ-ক্ষতি, অনুপাত-সমানুপাত এসব অধ্যায় ভালো করে চর্চা করলে প্রশ্ন পাওয়া যাবে।
মনস্তত্ত্ব বিষয়কে অবহেলা করলে হবে না। নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস না থাকায় বেশির ভাগ প্রার্থীই এ বিষয়ে খারাপ করে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে ২৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকে। এখানে মূলত সংখ্যা চিহ্নিতকরণ, সমস্যার সমাধান, সাধারণ জ্ঞান (পূর্ণ রূপ, সংক্ষিপ্ত টীকা, সঠিক উত্তর), সম্পর্ক নির্ণয় ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। এ বিষয়ে ভালো করতে হলে বিগত এসআই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নগুলো দেখলে প্রশ্নপত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে বলে জানান অরুণ কুমার বসাক।
মৌখিক পরীক্ষা
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পরবর্তী সময়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। মৌখিক পরীক্ষা প্রসঙ্গে অরুণ কুমার বসাক বলেন, মৌখিক পরীক্ষার নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস নেই। সাধারণত প্রার্থী স্নাতক পর্যায়ে যেসব বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন ওই বিষয়গুলো থেকে প্রশ্ন করা হতে পারে। এ ছাড়া প্রার্থীর নিজ জেলা বা উপজেলা সম্পর্কে ধারণা রাখা—যেমন এলাকার বিখ্যাত ব্যক্তির নাম, জেলার আয়তন, জনসংখ্যা, সাংসদের নাম, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ইত্যাদি বিষয় জানা থাকলে ভালো করা যাবে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দেশি-বিদেশি কোনো ঘটনা, বাংলাদেশ পুলিশবাহিনী সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিষয় জানা থাকলে মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করা যাবে। পাশাপাশি আচরণ, সুন্দর করে কথা বলা, মার্জিত পোশাক উপস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।