পৃথিবীর যে কোনো পুরস্কার, যে কোনো তালিকা নিয়ে কম -বেশি বিতর্ক, চিরন্তণ বিষয়।
সারা বিশ্বের সবচেয়ে প্রশংসিত দশ জন ব্যক্তির মধ্যে একজন যদি হন বাংলাদেশের মানুষ, তাহলে সেটা কতটা গৌরবের -দেশ ও দেশের মানুষের কাছে! দশ জনের মধ্যে তার অবস্থান যদি হয় নবম, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগে যদি হয় তার অবস্থান, আমাদের কাছে গুরুত্ব কি আরও একটু বেশি হওয়ার কথা নয়! এই তালিকার এক নম্বরে নেলসন ম্যান্ডেলা, মহাত্মা গান্ধী চতুর্থ অবস্থানে, নরেন্দ্র মোদী দশম স্থানে। আর নবম স্থানের ব্যক্তিটির নাম ড.মুহাম্মদ ইউনূস। ড.ইউনূসের নোবেল সহ এত বড় বড় অর্জন -সম্মান নিয়ে আমাদের কারও কারও এত তুচ্ছ -তাচ্ছিল্যের কারণ ,বুঝতে পারি না। অমর্ত্য সেনের নোবেল পাওয়া নিয়ে আমাদের অনেকে যতটা খুশি হন, ড.ইউনূসের নোবেল নিয়ে তারাই শুধু প্রশ্ন তোলেন!
ফজলে হাসান আবেদ কৃষির নোবেল সহ এত বড় বড় পুরস্কার – সম্মান অর্জন করেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা তার প্রতি একটু সম্মান দেখাতে পারি না!
ওয়ার্ল্ড ইকোনমি ফোরামের বিশ্বের সবচেয়ে প্রশংসিত ব্যক্তিদের তালিকা নিয়ে কথা বলছি। কেউ কেউ বলছেন, এই জরিপ নিয়ে প্রশ্ন আছে। তো কোন জরিপ নিয়ে প্রশ্ন নেই?
ড.ইউনূস, ফজলে হাসান আবেদের পুরস্কার -সম্মাননা অর্জন, দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের গুরুত্ব যে কোনো অর্থেই বাড়ে, কমে না। তাহলে আমরা কেন অখুশি হয়ে প্রশ্ন তুলবো?
অমর্ত্য সেন নোবেল পাওয়ায় আমারা অবশ্যই আনন্দিত হবো। কারণ তিনি বাঙালি, তিনি প্রতিবেশি ভারতীয়। ড.ইউনূস বাঙালি, বাংলাদেশের বাঙালি। বাংলাদেশি হিসেবে আমরা তো আরও বেশি খুশি হবো। বিষাদগাঢ় করব কেন?
তিনি রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন, সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে? অন্য রাজনীতিবিদরা যখন বিপদে ছিলেন, তখন তিনি সরকারি আনুকূল্য নিয়ে রাজনীতি করতে চেয়েছেলেন? এই তার অপরাধ? তখন রাজনীতিবিদদের অনেকে কি করেছিলেন?
তিনি তো সেই পথ থেকে অল্প সময়ের মধ্যে সরে এসেছেন। বলছেন, আর রাজনীতি করবেন না। এতে তার প্রয়শ্চিত্ত হয়না! সেনা সমর্থিত সেই সরকারের কারও অপরাধের কোনো বিচার তো হলো না, কেউ এসব নিয়ে কথাও বলেন না!
আমাদের সব কিছুই কেমন অদ্ভূত।
ড.ইউনূসের সাক্ষাৎকার নিয়ে ‘সাপ্তাহিক ‘-এর প্রচ্ছদ করেছি, তাতেও দেখলাম কেউ কেউ দগ্ধ হচ্ছেন। বিশ্ব বরেণ্য জীবন্ত কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব ড.ইউনূসের সাক্ষাৎকার নিতে পেরে আমরা আনন্দিত, আমরা গর্বিত।
Courtsy: Golam Mortoza