অস্ট্রেলিয়ার স্টাডি ভিসার নতুন নিয়ম
উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী নিজেদের উচ্চশিক্ষার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভিসায় আবেদন করেন। তবে সঠিক পদ্ধতি কিংবা এ ভিসায় আবেদনের সদা পরিবর্তিত আইন সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীর দেশটিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন আর বাস্তবের রূপ নেয় না। নতুন বছরে অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য ভিসার মতোই এ ভিসার আবেদনের পদ্ধতিতেও এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিভাগের নাম ‘ডিপার্টমেন্ট অব ইমিগ্রেশন অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন’ (ডিআইবিপি) থেকে বদলে ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোম অ্যাফেয়ার্সে’ (ডিএইচএ) পরিবর্তিত হয়েছে। শিক্ষার্থী ভিসার পরিবর্তিত নিয়ম ও কিছু পরামর্শ থাকছে এখানে।
আবেদন করুন আগেই
অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যেতে ইচ্ছুক কিংবা ভাবছেন আবেদন করবেন? তাহলে আর দেরি না করে এখনই আবেদন করা শ্রেয়। অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিভাগে এখন থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রচুর আবেদনপত্র জমা পড়বে। অর্থাৎ শিক্ষার্থী ভিসার পিক পিরিয়ড এখন থেকে শুরু হয়ে এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। তাই শিক্ষার্থী ভিসা পেতে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে না চাইলে যতটা দ্রুত সম্ভব আবেদন করে ফেলা উচিত এখনই। সাধারণত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস শুরু হওয়ার কমপক্ষে ৬-১২ সপ্তাহ আগে আবেদনপত্র জমা দিতে হয়।
প্রমাণাদি সঙ্গে সঙ্গে জমা দিন
ইতিপূর্বে অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা ভিসায় আবেদন করার পর প্রমাণাদির কমতি থাকলে নতুন করে জমা দেওয়ার জন্য বলা হতো। কিন্তু এখন থেকে আর কোনো অতিরিক্ত প্রমাণাদি কিংবা তথ্য না চেয়েই ভিসার সিদ্ধান্ত দিয়ে দেওয়া হবে। তাই শিক্ষার্থী ভিসায় আবেদন করার সময় ভিসা সংশ্লিষ্ট সকল প্রমাণাদি অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে সংযুক্ত করে দিতে হবে। এর মধ্যে স্পনসরের আর্থিক কাগজপত্রগুলোও ভালোভাবে জমা দিতে হবে।
জিটিই লিখুন সাবলীল ও স্পষ্ট ভাষায়
শিক্ষার্থী ভিসায় আবেদন করার সময় আবেদনপত্রেই অস্ট্রেলিয়ায় আসার উদ্দেশ্য উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। অস্ট্রেলিয়ার প্রবেশের উদ্দেশ্য শুধুই যে শিক্ষা গ্রহণ এবং তা শেষে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার কথা স্পষ্ট ভাষায় লিখতে হয় আবেদনপত্রে কিংবা আলাদা করে। এই বিবৃতিদানকে জেনুইন টেম্পোরারি এন্ট্র্যান্ট বা জিটিই বলে। বেশ কিছু বিষয়ের পাশাপাশি এখন থেকে এই জিটিইতে আরও নতুন কয়েকটি দিকের উল্লেখ করতে হবে। এর মধ্যে পড়াশোনায় অনিয়মিত বা কোনো বিরতি থাকলে তা উল্লেখ করতে হবে। কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে সে ক্ষেত্রেও তাই। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় যে বিষয়ে পড়তে ইচ্ছুক তা আগের পড়াশোনা ও কাজের সঙ্গে অসংশ্লিষ্ট হলে সে কথাও লিখতে হবে জিটিইতে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং সেই সঙ্গে যে বিষয়ে পড়তে ইচ্ছুক তা সে পরিকল্পনাকে কীভাবে সাহায্য করবে এ বিষয়েও লিখতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের খরচ
অস্ট্রেলিয়ায় একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বসবাস করার মোটামুটি মানসম্মত খরচের হিসাবের তালিকা রয়েছে অভিবাসন বিভাগের। শিক্ষার্থী ভিসায় আবেদন করতে হলে সে পরিমাণ অর্থ শিক্ষার্থীর অথবা তার স্পনসরের রয়েছে তা প্রমাণ করতে হয়। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সে খরচ বাড়াতে যাচ্ছে অভিবাসন বিভাগ। তখন থেকে এক বছরের জন্য নিচের উল্লিখিত হারে স্পনসরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা থাকতে হবে।
১। শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকের অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের ন্যূনতম খরচ ধরতে হবে ২০ হাজার ২৯০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার।
২। শিক্ষার্থীর জীবনসঙ্গী যদি থাকে তবে খরচ যোগ করতে হবে আরও ৭ হাজার ১০০ ডলার। এবং
৩। প্রতি সন্তানের জন্য (যদি থাকে) তবে খরচ যোগ করতে হবে আরও ৩ হাজার ৪০ ডলার।