একজন যোদ্ধা একজন পরিপূর্ণ ফুটবলারের গল্প : Engr Md Golam Kader
ব্রাজিল ফুটবলের সব থেকে খারাপ সময় শুরু হয় ২০১০ এর পর থেকে। কোচ দুংগা পুরো ব্রাজিলকে শেষ করে দেয়। আর ব্রাজিলের এই সব থেকে খারাপ সময়ে আসে একজন প্লেয়ার। যখন ব্রাজিলের সব থেকে দুর্বল স্কোয়াড ছিল।ঠিক সেই সময়ে আসেন তিনি। একটু একটু করে লড়াই করে এই দলটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। তারপর ব্রাজিলের ইয়াং প্লেয়ারদের নিয়ে সেই সময়ের সেরা ফর্মে থাকা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনকে একাই রুখে দিয়ে ২০১৩ তে ব্রাজিলকে কনফেডারেশন এনে দেয় সেই মানুষটি।
তারপর ২০১৪ তে ব্রাজিলের ওয়াল্ডকাপের ইতিহাসে সব থেকে দুর্বল দলকে নিয়ে শুরু করলেন প্রথম বিশ্বকাপ। এই দুর্বল দলটাকে একাই টেনে নিয়ে যায় সেমিতে। তিনি ইঞ্জুরিতে পড়লেন,ব্যাস ব্রাজিলও সেমিতে বাদ হয়ে গেলো। ইঞ্জুরিতে না পড়লে হয়তো নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলেই নিজের দেশকে ৬ তম বিশ্বকাপ উপহার দিতেন। যাইহোক,তার ইঞ্জুরিটা এতই মারাত্বক ছিল আর দুই ইঞ্চি এই দিক সেই দিক হলেই মানুষটার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতো। আর কখনো হাটতে পারতেন না।
এই ইঞ্জুরি থেকে ওভারকাম করে এই মানুষটাই ২০১৬ তে ব্রাজিলকে আরেকটা ট্রফি উপহার দেন। যেই ব্রাজিলের কোনো ট্রফির অভাব ছিল না,যেই ব্রাজিলের এত্ত এত্ত লিজেন্ড থাকা সত্ত্বেও জাস্ট একটা ট্রফির অভাব ছিল। যেটা ব্রাজিলের কোনো লিজেন্ড এনে দিতে পারে নি,ঠিক সেই অলিম্পিক ট্রফিটাই এনে দিয়ে বুকভরা কান্না দিয়ে কাঁদিয়েছিলো পুরো মারাকানাকে,পুরো বিশ্বের ফ্যানকে। কার কথা বলছি জানেন? আপনাদের অভিনয় করা নেইমারকে,ল্যাংরা নেইমারকে,যে একটু বাতাস খেলেই পড়ে যায়। আপনারা হয়তো জানেন না,এই ল্যাংড়া নেইমার এই ওয়াল্ডকাপ খেলতে পারবে কিনা সেটা সিওর ছিলো না। সাড়ে তিনমাস ইঞ্জুরিতে থেকে ওয়াল্ডকাপের আগেও সে ফিট হয়নি। পুরোপুরি ফিট না হয়েও ওয়াল্ডকাপে লড়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র তার দলটার জন্য। আর আপনাদের এই ল্যাংড়া নেইমারই বর্তমানে বিশ্বের সব থেকে দামী ফুটবলার। আর বিশ্বকাপের পর হয়তো এই ল্যাংড়া,অভিনয় করা নেইমারকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা দিয়ে নিবে ক্লাব ফুটবললের অন্যতম সেরা ও সফল ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। অনেক ব্রাজিলিয়ান ফ্যানও রয়েছে যারা চার বছর পর খেলা দেখে। তারাও এই মানুষটাকে কথা শুনাতে বাদ পড়েনি। কি খেলে? পড়ে যায় তার থেকে কৌতিনহো ভালো। এসব বলতেও মুখে আটকায় নি। আপনারা যেই কৌতিনহোকে ভালো বলছেন সে নিঃসন্দেহে ভালো। কিন্তু এই কৌতিনহো এসেছে ব্রাজিলের ভালো সময়ে। আর এই ভালো সময়ের ব্রাজিলটা আজ কীভাবে আসলো সেটা আর আপনাদের দেখার টাইম নেই। সেদিন কোস্টারিকার সাথে গোল দিয়ে কান্না করেছে নেইমার।
কেন,জানেন? প্রথম ম্যাচে ইঞ্জুরি নিয়ে খেলার পরও একটু খারাপ খেলাতে এই মানুষটার জার্সি পোড়ানো হয়। এসব দেখে সহ্য না করতে পেরে সেদিন গোল দিয়ে জয় হবার পর নিজেই একা একা কান্না করতে থাকে। এসব আপনারা জানেন!জানবেন কীভাবে? যাইহোক,কোনো কিছু বলার আগে সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া ভালো। আজকের নেইমার এম্নিই এম্নিই আসে নি। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। খুব খারাপ লাগে আপনাদের এসব দেখলে। প্রতিদিন” ফেইসবুকে আসলে সবার আগে মানুষটার ফেইসবুক পেজ চেক করি, ইন্সটাতে যাই মানুষটার সেদিনের একটা ছবি দেখবো বলে। মানুষটাকে ভালোবসি খুব। তাকে নিয়ে জঘন্য ট্রল দেখলে কেন জানি সহ্য হয় না। দম বন্ধ হয়ে যায়।
মানুষটার উপর একটু ভরসা রাখুন। সে ফর্মে এসেছে গত ম্যাচে গোল দিয়ে।
এবার শুধু তার গতিময় ফুটবল দেখার জন্য অপেক্ষা করুন। ভালো কিছু দিবে সে আপনাদের। হয়তো’ গতবার যেটা ইঞ্জুরির জন্য পারেনি,সেটা এবার দিতে যাচ্ছে। তার সমালোচনা না করে ভালোবাসুন। সে ভালোবাসার উপহার অবশ্যই দিবে। কারন মানুষটা যে আর কেউ না। আমাদের নেইমার। আমাদের ভালোবাসার নেইমার।?
??ভালোবাসি নেইমার?????????