বিদেশে চাকরি খোঁজা ও আবেদন করার উপায় যা আপনাকে সেরা সুযোগটি পেতে সাহায্য করবে!
চাকরি না পাওয়াটা খুবই হতাশার। যারা অনেকদিন চাকরি না পেয়েও নিরন্তর চেষ্টা করছেন তাদের অনেকেই খুব বেশি হতাশ হয়ে যান। কেউ এই পরিস্থিতিতে না পড়লে বুঝতেই পারবে না তাদের কষ্টটা। কিন্তু এই প্রতিযোগিতার বিশ্বে যোগ্য প্রার্থীর চেয়ে চাকরি কম। তাই চেষ্টা করতে হবে নিজের যোগ্যতাকে আরও শাণিত করে – নিজেকে যোগ্যতর প্রমাণ করার। যারা চাকরি খুঁজছেন কিংবা পাচ্ছেন না তাদের জন্য Glassdoor একটি ভালো প্লাটফর্ম। যারা নতুন করে চাকরি খুঁজছেন কিংবা আগের চাকরি বাদ দিয়ে আবার চাকরি খুঁজছেন Glassdoor তাদের জন্য বিভিন্ন কোর্সের ব্যাবস্থা করে থাকে। বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করে। সম্প্রতি Skillshare এর সাথে মিলে Glassdoor একটি কোর্স করায় যার শিরোনাম ছিল, How to Get a Job: A Step-by-Step Guide । তারা চাকরি খোঁজার প্রক্রিয়াটিকে সহজ এবং সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য চাকরি প্রার্থীদের জন্য কিছু ভালো পরামর্শ দিয়ে থাকে। সেখান থেকে কিছু এবং আপনারা যারা চাকরি খুঁজছেন তাদের জন্য আরও কিছু পরামর্শ –
শুধু চাকরির শিরোনাম দেখেই আকৃষ্ট হবেন না
Glassdoor পরামর্শ হচ্ছে চাকরির শিরোনামের পরিবর্তে একজন প্রার্থীর থেকে যে দক্ষতাগুলো চাওয়া হচ্ছে তার ভিত্তিতে বাছাই করা উচিৎ। আপনার যোগ্যতার সাথে মিলে যায় এমন নির্দিষ্ট কিছু চাকরির খোঁজ করতে পারেন । আপনার ভিতর যে দক্ষতা গুলো আছে সেগুলোর দিকে গুরুত্ব দিন। কারণ সব ধরনের চাকরির দিকে ছুটতে গেলে আপনি অনেক বেশিবার চাকরির প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ হয়ে আগ্রহ হারাতে পারেন। তাই খেয়াল রাখুন কী কী যোগ্যতা চাওয়া হচ্ছে এবং যদি সেসব যোগ্যতা না থাকে তাহলে সেগুলো অর্জনের চেষ্টাটি চালিয়ে যান। তাহলেই কাঙ্ক্ষিত চাকরিটি পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যাবে।
শিক্ষিত বেকারত্ব আর নয়, কার্যকর লিংকডইন প্রোফাইল – ডিজিটাল মামা চাচা চাকরির
বাজারে এগিয়ে থাকতে LinkedIn: ৮০% এর বেশি ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা প্রাথমিকভাবে LinkedIn – এ নতুন লোক খুঁজে থাকেন। আপনি যদি একজন চাকরি প্রার্থী হন, তবে আপনার শুধু LinkedIn – এ একাউন্ট থাকলেই চলবে না, এটি ব্যবহার করে পূর্ণ সুযোগ নিতে হবে। বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি দেখুন :
অনুসন্ধানগুলো পুনরায় যাচাই করুন
আপনি একটি জব টাইটেল দিয়ে শুরু করতে পারেন যা নিয়ে আপনি কৌতূহলী, কিন্তু Glassdoor পরামর্শমতে চাকুরি বা অনুরূপ কাজের বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে আপনার অনুসন্ধানকে আরও নতুন কিছু ক্ষেত্রে প্রসারিত করা উচিৎ। একই ধরনের যোগ্যতা চাওয়া হয় এমন কয়েকটি ক্ষেত্রে আবেদন করুন।
চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকতে LinkedIn
৯০% এর বেশি ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা প্রাথমিকভাবে LinkedIn – এ নতুন লোক খুঁজে থাকেন। আপনি যদি একজন পেশাদার হন, তবে আপনার শুধু LinkedIn – এ একাউন্ট থাকলেই চলবে না, এটি ব্যবহার করে পূর্ণ সুযোগ নিতে হবে। ধরুন যদি আগামীকাল সকালে, একজন নিয়োগকর্তা LinkedIn – এ লগইন করে আপনার এলাকার আশেপাশে চাকরি দেয়ার জন্য লোক খুঁজে বেড়ান এবং যে যোগ্যতাগুলো চাওয়া হচ্ছে তার সবগুলোই আপনার আছে, অথচ আপনি LinkedIn – এ নেই। তাহলে তারা কাদের নিয়োগ দেবে? নিশ্চয়ই সেটি আপনি নন?
সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য রাখুন
সব কাজ সবার জন্য সমানভাবে মানানসই নয়। আপনি যখন cover letter এবং resume তৈরি করবেন তখন যে কয়টি পদে আবেদন করতে চাচ্ছেন তার প্রত্যেকটিতে আবেদন করেছেন কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন । এবং পাঠানোর আগে নিশ্চিত হয়ে নিন প্রতিষ্ঠানের হায়ারিং ম্যানেজার , কোম্পানির নাম ঠিক আছে কিনা । আরো একবার ভালমত চোখ বুলিয়ে নিন।
আকর্ষণীয় কভার লেটার (Cover Letter) তৈরি করুন
শুধু আপনার জীবনবৃত্তান্ত হুবহু তুলে দেবেন না। একে Cover Letter – এ পুনরায় বিন্যাস করার চেষ্টা করুন । আপনি কে এবং আপনার অভিজ্ঞতা কেমন আছে সে সম্পর্কে সুন্দর করে সাজিয়ে একটি ভালো Cover Letter তৈরি করুন । Glassdoor এর মতে যদি আপনি নিশ্চিত না হন যে Cover Letter প্রয়োজন হবে কিনা,তাহলে যেন-তেনভাবে একটা পাঠিয়ে দিন।
চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে শুধু অনলাইন আবেদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবেন না
আপনি এই চাকরি খোঁজার সমাপ্তি চান ? তাহলে শুধু অনলাইন আবেদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন না। অনলাইন আবেদনের পরই থেমে যাবেন না। যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি চাচ্ছেন সেখানে ইতিমধ্যে চাকরি করেন এমন ব্যক্তিদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করুন। আপনার সেই কাঙ্ক্ষিত সহকর্মীর সাথে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে নিজের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিন। ঐ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তাদের কারো সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করুন। এই মানুষদের সাথে আলোচনা চাকরিটি পেতে আপনার অভিজ্ঞতার সঞ্চয় বাড়াবে।
পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিন
চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । প্রতিষ্ঠানটির কাজের ধরণ , আপনার দায়িত্ব কী হবে এবং আপনি যে ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন তাদের সম্পর্কে তথ্য জেনে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন। নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার জন্য যা কিছু করা উচিত তা করুন, এমনকি যদি এটা বন্ধুদের সাথে সাজানো সাক্ষাৎকারও হয়।
প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন
চাকরির সাক্ষাৎকার শেষের দিকে যদি সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী কখনো প্রার্থীর কিছু জানার থাকলে প্রশ্ন করার সুযোগ দেন । এই সুযোগটি বুদ্ধিমত্তার সাথে কাজে লাগান । চাকরির বিষয়ে জানার জন্য আপনারও প্রশ্ন করার অনেককিছু আছে । তবে সেই মুহূর্তে হঠাৎ করে প্রশ্ন মাথায় না-ই আসতে পারে, তাই আগে থেকেই কিছু প্রশ্ন তৈরি করে নিয়ে যান। Glassdoor এর মতে প্রশ্ন হতে পারে এমন , “এই কোম্পানিতে কি বৃদ্ধির সুযোগ আছে? অথবা ” আপনার প্রিয় বিষয় কী এবং এখানে কাজ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী? ”
ভালো ব্যবহার করতে ভুলবেন না
সবসময় প্রচলিত রীতিতে কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করুন । আপনি যে সুযোগটি সম্পর্কে উৎসাহী, তা দেখান এবং এবং এই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে নিয়োগকর্তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করুন। আপনি কেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতি আগ্রহী, তা শেয়ার করার সুযোগ নিন বা অন্য কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন । কথোপকথন চালিয়ে যান।