হারিকেন ফ্রান্সেস:
নিউইয়র্ক টাইমস স্টোরি ২০০৪ থেকে একটা উদাহরণ বিবেচনা করা যাক।
তখন ক্যারিবিয়ানের পাশ দিয়ে, ফ্লোরিডার আটলান্টিক উপকূলে আঘাত হানতে ধেয়ে আসছে হারিকেন ফ্রান্সেস। স্থানীয় জনগণকে বহুদূরে বেন্টনভিলে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। ওয়ালমার্ট স্টোরের কর্তাগণ তাদের নতুন অনুমানভিত্তিক উপাত্ত সংগ্রহ প্রক্রিয়াটি পরীক্ষণের সিদ্ধান্ত নিলেন।
ঝড়ের এক সপ্তাহ আগে, ওয়ালমার্টের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা লিনডা এম.ডিলম্যান তাদের কর্মীদের কয়েক সপ্তাহ আগের হারিকেন চার্লি সংক্রান্ত ডাটা এনালাইসিস করে ভবিষ্যতবাণী করতে কাজে লাগিয়ে দেন। ওয়ালমার্ট তথ্য কেন্দ্রে ছিল ট্রিলিয়ন বাইট সংরক্ষিত তথ্য। তিনি অনুধাবন করেন, কোম্পানি কি ঘটবে তা দেখার জন্য বসে থাকার চেয়ে বরং কি ঘটতে যাচ্ছে তার পূর্বানুমান করতে পারে। ( সুত্র, হে’স ২০০৪)
ডাটা -ড্রিভেন প্রেডিকশন পদ্ধতি কিভাবে সাহায্য করতে পারে তা একটা বিবেচ্য বিষয়। এক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অতিরিক্ত পরিমাণ পানি ব্যবহার করবে। কিন্তু পানির ব্যবহার বেড়ে যাওয়াটা তো খুব স্বাভাবিক, এর জন্য ডাটা সাইন্স ওপর নির্ভরের যৌক্তিকতাটা তাহলে কোথায়? এর দরকার অবশ্যই আছে। কি পরিমাণ অতিরিক্ত পানি বিক্রি হবে তা আগে থেকে জেনে মজুদ করে রাখার জন্য অবশ্যই সেই তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হবে।
ডাটা-মাইনিং টেকনিকে ধরণের নতুন প্রক্রিয়া হয়ত উন্মোচন করবে, একটা বিশেষ ডিভিডি শুধুমাত্র হারিকেন প্রবণ অঞ্চলগুলোতেই বেশি বিক্রি হয়েছে তা না, হয়ত তা সারা দেশেই সেভাবে বিক্রি হয়েছে। তাই এ পদ্ধতি কার্যকর হলেও মিসেস ডিলম্যান যতটা আশা করেছিলেন, ঠিক ততোটা নয়।
তার চেয়ে বরং হারিকেনের কারণে চাহিদার ব্যতিক্রমী পরিবর্তন নিয়ে কাজ করাটা অধিকতর ফলপ্রসু। বিশ্লেষকরা যদি গবেষণা করেন, দেখতে পাবেন এ সময় কিছু পণ্যের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এ থেকে কোম্পানি জানতে পারে কোন ধরণের পণ্যের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বাড়বে আর সে অনুসারে মজুদ করতে হবে এবং সেটাই ঘটেছিল।
নিউইয়র্ক টাইমস( হে’স ২০০৪) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘… বিশ্লেষকরা উপাত্ত গবেষণা করে জানতে পারেন যে, স্বাভাবিক কাজের বাইরেও কতগুলো নির্দিষ্ট পণ্যের মজুদ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কখনো অনুমান করিনি স্ট্র বেরি পপটার্টের বিক্রি এত বেড়ে যাবে, এমনকি স্বাভাবিকের চেয়ে সাতগুণ!’ সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে মিসেস ডিলম্যান বলেন,’ হারিকেনের পূর্ব মুহুর্তে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত পণ্য হলো বিয়ার। ‘
বিবেচনার আরেক বিষয়: ক্রেতাদের সেবা বদল প্রবণতা:
কিভাবে সম্ভব হলো এ ধরনের data analyses? বিবেচনা করা যাক আরেকটু জটিল ব্যবসায়িক চিত্র যেখানে ডাটার ব্যবহার ফলপ্রসু ভুমিকা রাখবে। ধরুন, আপনি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি মেগাটেলকো তে বিশ্লেষণধর্মী চাকরিতে নিযুক্ত হলেন। তাদের ওয়ারলেস ব্যবসায় তখন বিরাট একটা জটিলতা। মধ্যআটলান্টিক অঞ্চলে ২০% ব্যবহারকারীই চুক্তি শেষের সাথে সাথেই তাদের ত্যাগ করছে এবং নতুন ব্যবহারকারীও পাওয়া যাচ্ছে না।
মুঠোফোন বাজারের বিস্তৃতি ওয়ারলেস মার্কেটে ফেলেছে বিরুপ প্রভাব। যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নতুন ক্রেতা আকর্ষণ করা এবং নিজেদের ক্রেতা ধরে রাখার জন্য যেন রীতিমত প্রতিযোগিতা চলছে। ক্রেতারা প্রতিনিয়তই একটা কোম্পানির সেবা পরিত্যাগ করে গ্রহণ করছেন অন্য কোম্পানির সেবা, যাকে বলা হয় ক্রেতাদের সহজাত সেবাবদল প্রবণতা।
ক্রেতা আকর্ষণের জন্য যেমন ভাবে ব্যয় করতে হয়, তেমনি ক্রেতা হারালেও গুণতে হয় লোকসান। ধরা যাক, এ ধরণের দ্বিমুখী সমস্যা নির্ণয় এবং সমাধানে আপনাকে নিয়োগ দেওয়া হলো।নতুন ক্রেতা আকর্ষণ পুরাতন ক্রেতা ধরে রাখার চেয়ে অনেক বেশি ব্যয়বহুল। তাই ক্রেতারা যেন সেবা পরিবর্তন না করে, মার্কেটিং বাজেট পরিকল্পনায় সেদিকে গুরুত্ব আরোপ করা উচিত।
মনে করুন, ক্রেতা ধরে রাখার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা কোম্পানি কর্তৃক গ্রহণ করা হয়েছে। আপনার কাজ হচ্ছে সুচারুভাবে এবং ধারাবাহিকভাবে তথ্য বিশ্লেষণকারী দলকে পরিচালিত করা যাতে করে তারা মেগাটেলকোর বিপুল পরিমাণ ডাটা অ্যাসেট ব্যবহার করে ক্রেতাদের অভিরুচি বিবেচনায় এনে কোন ক্রেতার জন্য কি ধরণের অফার প্রদান করা দরকার সে ব্যপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন।
এক্ষেত্রে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে আপনি কোন ধরনের ডাটা কিভাবে ব্যবহার করবেন। সহজভাবে বলতে গেলে, কোন শ্রেনীর ক্রেতাদের নির্বাচন করা উচিত, কোন বিশেষ অফারের জন্য ক্রেতা স্থানান্তর কমাতে ভুমিকা রাখবে? প্রশ্নটার উত্তর এতটা সহজ না।বস্তুত ডাটা-মাইনিং টেকনিকে ক্রেতা ধরে রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে টেলিযোগাযোগ এবং আর্থিক খাতে।এ খাতগুলোই উপাত্ত সংগ্রহ পদ্ধতি একদম প্রথম দিকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করে।
Courtesy: LANE ( Leadership and Empowerment)