বাংলাদেশে যে দুটি দলের সমর্থন সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে একটি দল হচ্ছে ব্রাজিল আর অন্যটি হচ্ছে আর্জেন্টিনা। আজ আমরা ফুটবল বিশ্বকাপে অন্যতম ফেভারিট আর্জেন্টিনার নানা বিষয় ও রেকর্ড নিয়ে আলোচনা করব।
আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ,
বিশ্ব ফুটবলে যে কয়েকটি দেশ সুন্দর ফুটবলের পূজারি তারমধ্যে একটি দেশ হচ্ছে আর্জেন্টিনা। এখানে জম্ম নিয়েছে ম্যারাডোনার
মত গ্রেট খেলোয়াড় আরো নামকরা অনেক তারকা খেলোয়াড়। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। এইবার যার কাধে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন। আর্জেন্টিনাবাসী তাদের বত্রিশ বছরের দুখ মুছার জন্যে তাকিয়ে আছে ক্ষুদে ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসির দিকে।
আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যায় তারা এই পর্যন্ত 5 বার বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে অংশগ্রহণ করেছে, তারমধ্যে তারা 2 বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরবময় অর্জন করেছে এবং রানার্সআপ হয়েছে ৩ বার। বর্তমানে ফুটবল বিশ্বকাপের রানার্সআপ দল আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকা ফাইনালিস্ট ২৭ বার(সর্বোচ্চ), চ্যাম্পিয়ন ১৪ বার, রানার্সআপ ১৩ বার(সর্বোচ্চ)। বর্তমানে কোপা আমেরিকার রানার্সআপ দল আর্জেন্টিনা। এবং অলিম্পিক সিলভার মেডেল বিজয়ী দল আর্জেন্টিনা।
======
আর্জেন্টিনা ফিফা কনফেডারেশন কাপ ফাইনালিস্ট ৩ বার,চ্যাম্পিয়ন ১ বার,রানার্সআপ ২ বার।
======
আর্জেন্টিনা অলিম্পিক টূর্ণামেন্ট ফাইনালিস্ট ৪
বার,২ বারের অলিম্পিক স্বর্ণ বিজয়ী দল,২ বারের অলিম্পিক সিলভার মেডেল বিজয়ী দল।
======
আর্জেন্টিনা প্যান আমেরিকান ফুটবল
কমপিটিশানের ৬ বারের স্বর্ণ বিজয়ী দল, ২ বারের সিলভার মেডেল এবং ৩ বারের ব্রোঞ্জ মেডেল বিজয়ী দল।
=====
ফুটবল ইতিহাসে প্রথম দুইটি দল(আর্জেন্টিনা,ফ্রান্স) ফিফা স্বীকৃত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি টাইটেলের মালিক
(বিশ্বকাপ,কনফেডরেশন কাপ অলিম্পিক টূর্ণামেন্ট)পাশে নিজেদের নাম লেখাতে পেরেছে। ব্রাজিলও কিছুদিন আগে স্বীকৃতি পেয়েছে।।
=====
আর্জেন্টিনা ১৯০১ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ খেলে উরুগুয়ের বিপক্ষে,আর্জেন্
টিনা ৩-২গোলে ম্যাচ জয়ী হয়।
ব্রাজিল প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল
ম্যাচ খেলে ১৯১৪ সালে আর্জেন্টিনার
বিপক্ষে,ব্রাজিল ০-৩ গোলে ম্যাচ পরাজিত হয়।
=====
আর্জেন্টিনা সর্বমোট ১৬ বার বিশ্বকাপে
অংশগ্রহণ করেছে।। ৩ বার টূর্ণামেন্ট বর্জন করেছে এবং১ বার কোয়ালিফাই করতে পারে নি।। ব্রাজিল ২০ বারই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে।
=====
ফুটবলে ব্রাজিলের “সাম্বা” স্টাইল এক অন্য রূপ।।
আর্জেন্টিনা পাসিং-সৃষ্টিশীল ফুটবলের জন্য বিখ্যাত।।
ক্রুইফের টোটাল ফুটবল অনেকটাই আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের সংমিশ্রণ বলা যেতে পারে।
======
র্র্যাংকিংয়ের দিক দিয়ে আর্জেন্টিনার
সর্বোচ্চ পজিশন নাম্বার ১ এবং সর্বনিম্ন ১৮।।
ব্রাজিলের সর্বোচ্চ পজিশন নাম্বার ১ এবং সর্বনিম্ন
২২।।
সর্বোচ্চ র্র্যাংকিং পয়েন্ট অর্জন করেছিল ৫৪’র
হাঙ্গেরির ম্যাজিকাল ম্যাজেয়ার্স দল।। এরপরেই আছে জার্মান দল।
=====
আর্জেন্টিনাই ফিফা স্বীকৃত সব আন্তর্জাতিক ট্রফি জেতা প্রথম লাতিন ফুটবল টিম।।
কিছুদিন আগে অলিম্পিক পেয়ে ব্রাজিল এ রেকর্ড স্পর্শ করতে পেরেছে।
=====
ফিফা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত মেজর ৪ টূর্ণামেন্ট:
বিশ্বকাপ,কানফেডারেশন কাপ,অলিম্পিক
চ্যাম্পিয়নশীপ,মহাদেশীয় কাপ (কোপা আমেরিকা) সব মিলিয়ে আর্জেন্টিনার টোটাল ট্রফি অর্জন ১৯ টা।
বিশ্বকাপ ২ টা,কোপা ১৪ টা,অলিম্পিক
২টা,কনফেডারেশন ১ টা।
ফিফা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত মেজর ৪ টূর্নামেন্টে ব্রাজিলের সর্বমোট ট্রফি অর্জন ১৮ টা।। বিশ্বকাপ ৫ টা,কোপা ৮টা,অলিম্পিক ১ টা,কনফেডারেশন ৪ টা।
======
১৯৩৪-১৯৭৪ একটানা ৪০ বছর আর্জেন্টিনা ফুটবল বিশ্বকাপ থেকে দুরে ছিল।ওই ৪০ বছরের মধ্যে একটানা প্রায় ২০ বছর আর্জেন্টিনা ৩ টা বিশ্বকাপ প্রত্যাহার
করে।একমাত্র দল হিসেবে সব বিশ্বকাপ খেলা ব্রাজিল।একটানা ২৪ বছর কোনো বিশ্বকাপ নিতে পারে নি এবং রানার্সআপও হতে পারে নি।
=====
জনপ্রিয় “প্যান আমেরিকা গেমস” এ
আর্জেন্টিনার অর্জন সর্বোচ্চ ৬ বার শিরোপা।ব্রাজিল”প্যান আমেরিকা গেমস” শিরোপা জিতেছে ৪ বার।
এটিহলো মেজর ৪ টূর্ণামেন্টের পরে আমেরিকাতে সবচেয়ে
জনপ্রিয় টূর্ণামেন্ট।
======
আর্জেন্টিনা এই পর্যন্ত অনুর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ
টূর্ণামেন্ট জিতেছে ৬ বার।ব্রাজিল অনুর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জিতেছে ৫ বার।
ইয়ংস্টার পাওয়ার দিক থেকে আর্জেন্টিনা ব্রাজিল প্রায় একই কাতারে প্রায় শীর্ষে আছে।
=====
আর্জেন্টিনা vs ব্রাজিল ম্যাচে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় জয় ৬-১ ব্যবধানে।আর্জেন্টিনা vs ব্রাজিল ম্যাচে ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় জয় ৬-২ ব্যবধানে।সর্বমোট ১০২ ম্যাচের মধ্যে ড্র হয়েছে ২৬ ম্যাচ।অ্যাওয়ে ম্যাচে
আর্জেন্টিনার বড় জয় ৫-১ ব্যবধানে।অ্যাওয়
ম্যাচে ব্রাজিলের বড় জয় ৪-১ ব্যবধানে।
=====
সর্বকালের সেরা ফুটবলার একাদশে ৩ জন আর্জেন্টাইন রয়েছে,তারা হলেন- ডি স্টেফানো,ম্যারাডোনা এবং লিওনেল মেসি*।সর্বকালের সেরা ফুটবলার
একাদশে ২ জন ব্রাজিলিয়ান রয়েছে,তারা হলেন- কাফুএবং পেলে।
=====
ইউরোপে ফুটবলার রপ্তানির দিক থেকে
যেকোনো দেশের চেয়েই এগিয়ে আছে আর্জেন্টিনা,এরপরেই আছে ব্রাজিল।
এবার আপনাদের সামনে মজার বিষয় নিয়ে উপস্থিত হব।
>>>সবচেয়ে বড় হার….।
আর্জেন্টিনা:
স্লোভাকিয়া ৬-১ আর্জেন্টিনা
ব্রাজিল ৬-২ আর্জেন্টিনা
কলম্বিয়া ৫-০ আর্জেন্টিনা
বলিভিয়া ৬-১ আর্জেন্টিনা
নাইজেরিয়া ৪-০ আর্জেন্টিনা
স্পেন ৬-১ আর্জেন্টিনা
ব্রজিল:
১৯৩০ : উরুগুয়ে ৬-০ ব্রাজিল
১৯৩৪ : যুগোস্লাভিয়া ৮-৪ ব্রাজিল
১৯৩৯ : আর্জেন্টিনা ৫-১ ব্রাজিল
১৯৪০ : আর্জেন্টিনা ৬-১ ব্রাজিল
১৯৪৫ : আর্জেন্টিনা ৫-৩ ব্রাজিল
১৯৪৬ : উরুগুয়ে ৫-২ ব্রাজিল
১৯৫৬ : ইংল্যান্ড ৫-১ ব্রাজিল
১৯৫৬ : উরুগুয়ে ৬-৩ ব্রাজিল
১৯৬৩ : বেলজিয়াম ৫-১ ব্রাজিল
১৯৬৯ : ভেনেজুয়েলা ৫-২ ব্রাজিল
১৯৭০ : জার্মান ৭-০ ব্রাজিল
১৯৯৪ : উরুগুয়ে ৪-২ ব্রাজিল
২০১৪ : জার্মান ৭-১।।
অনেক ফুটবল মহারথীর জম্ম দেওয়া আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ। এইবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ফেভারিট না হলেও, ফুটবল শক্তির বিচারে তাদের কোনো অংশে পিছিয়ে রাখা যাবে না। তাদের দলে আছে সময়ের বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। তাকেই কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ স্বপ্ন। এইবারের রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা বাসীর স্বপ্ন পূরণের গুরু দায়িত্ব থাকবে খুদে জাদুকর খ্যাত লিওনেল মেসির হাতে।
Written By
Mohammad Ali