আর মাত্র কয়েকদিন পরেই বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর শুরু হতে যাচ্ছে রাশিয়ায়। ২০১৪ বিশ্বকাপের চরম দুঃখ গ্লানি ভুলে গিয়ে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে ব্রাজিল।
বরাবরের মত আমাদের দেশ, বাংলাদেশেও বিশ্বকাপ নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ভক্ত আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের ফুটবলের। তেমনি একজন ব্রাজিলের পাগল ভক্তের দেখা পাওয়া যাবে ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়।
এই ব্রাজিল ফুটবল প্রেমীর নাম মোহম্মদ জয়নাল আবেদিন টুটুল। তিনি শৈশবকাল থেকেই ব্রাজিল সমর্থন করেন। ২০১০-২০১৪ সালের মত এবারেও ২০১৮-তে তার বাড়ি রঙ করেছেন ব্রাজিলের হলুদ, সবুজ আর নীলে।
চিত্র: জয়নাল আবেদিন টুটুল এবং পিছনে তার নামকরা ব্রাজিল বাড়ি। সুত্র: টুটুলের ফেসবুক পেজ।
ঘনবসতিপূর্ণ নারায়ণগঞ্জের মধ্যেও সহজেই সবার নজর কাড়বে ছয়তলা সবুজ-হলুদ রঙ করা এই দালানটি। যার ছাদজুড়ে উড়ছে সেলেসাওদের নিশান। আর উপরে সগর্বে উড়ছে বাংলাদেশের লাল-সুবজের পতাকা। বাড়ির কাছে যেতেই বিস্ময় আরও বাড়তে শুরু করবে। বাড়ির নাম করণ করা হয় ‘ব্রাজিল বাড়ি’।
চিত্র: ব্রাজিল বাড়ির নামফলক
বাড়ির ভেতরে প্রবেশ মাত্র চোখে পড়বে একই ফ্রেমে ক্যানারিদের পাঁচ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে। এ যেন সত্যিই এক ব্রাজিল ফুটবলের জাদুঘর, হোক না সেটা ব্রাজিল থেকে হাজার হাজার মাইল দূরের দেশ বাংলাদেশে।
চিত্র: ব্রাজিলের পাঁচ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক এক ফ্রেমে।
দেয়ালের রং, ফ্রেমবন্দী ছবি, এমনকি রুম নাম্বারসহ হাজারো ব্রাজিলের নিদর্শন, যেন সব কিছুতেই ব্রাজিল প্রেম।
এক সাক্ষাতকারে জয়নাল আবেদিন টুটুল জানালেন বাড়ির নামকরণের ঘটনা। আমার বাবাও ব্রাজিলের ভক্ত ছিলেন। ১৯৯৮ সালে আমি আমাদের এলাকায় ব্রাজিলের অনেক পতাকা উড়াই। এরপর ২০০২ সালে যখন বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু, অনেকেই অনেক পতাকা উড়াত। কিন্তু তখন আমি চাইলাম আমি এমন পতাকা উড়াব যাতে আমারটাই সবচাইতে বড় হবে, কারণ আমি আমার দলকে অনেক ভালোবাসি তাই আমার পতাকাটিই বড় হবে। এরপর পরবর্তী বিশ্বকাপ ২০০৬ যখন আসল তখন দেখি আমার এলাকায় অন্যান্য বারিগুলোতে আমার মত বড় পতাকা লাগিয়েছে আর্জেন্টিনার সর্মথকরা। তখন থেকে চিন্তা করলাম ২০১০ সালে আমাকে এমন কিছু করতে হবে যেটা এখন পর্যন্ত কেউ করেনি। সেই চিন্তা থেকে আমি আমার বাড়িটিকে ব্রাজিলের রঙ্গে সাজাই। পরর্বতীতে মানুষ এই বাড়িটিকে ব্রাজিল বাড়ি নামেই ডাকা শুরু করে, তখন আর কি এই বাড়ির নামকরণ করি ‘ব্রাজিল বাড়ি’। তখন আমাদের বাড়ি ছিল দুই তলা পরবর্তীতে আমরা বাড়িটি ভেঙ্গে ছয়তালা করে রঙ করলাম ব্রাজিলের পতাকার রঙে এরপর নাম দেই ‘ব্রাজিল বাড়ি’। এখন সবাই কিন্তু আমাকে চিনে না আমার ব্রাজিল বাড়িকে চিনে।
একনজর বাড়িটি দেখার জন্য প্রতিদিন অনেকেই ভিড় জমাচ্ছে। একইসাথে ব্রাজিল ভক্তদের উৎসাহও বাড়ছে বলে জানা গেছে।
BY: তামান্না ইয়াসমিন