পালটে যাওয়া চাহিদা বা হারিয়ে যাওয়া ইচ্ছেকে খুঁজে পাওয়ার তাগিদে অনেকেই বদলে ফেলেন এতদিনের পুরনো পেশাকে। হয়ে যায় নতুন পেশার শুভসুচনা।
বাঁধাগতের চাকরি ছেড়ে এই তাগিতেই কেউ হয়তো নিজের ব্যবসা খুলে ফেললেন,বা শুরু করলেন নিজস্ব থিয়েটার গ্রুপ।আবার অনেকেই ভাবেন,তাঁদের দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি তাঁরা করেন না।হয়তো কম বয়সে আর্থিক স্বাধীনতার তাগিদে হঠাৎ করে কোন চাকরিতে ঢুকে পড়েছিলেন।পরে বুঝেছেন এ ধরেন কাজ তার যোগ্যতা,ব্যাক্তিত্ব ও আগ্রহের সঙ্গে মানান্সই না।যাঁরা গড়পরতা কেরিয়ারের বদলে একটু অন্যধাচের কিছু করতে চান, তাদের ক্ষেত্রে এটি খুব বর কারন।বাবা–মায়ের স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে।ক্যাম্পাস প্লেস্পমেন্ট নামী কোম্পানিতে মোতা মাইনের চাকরিও পেয়ে গেলেন।কিন্তু আপনার নেশা হল ওয়াইন বনানো বা বই লেখা।আর্থিক স্বচ্ছলতা খুব বেশি থাকলেও জব স্যাটিস্ফ্যাকশনেরদেখা দিতে বাধ্য।আর উৎসাহ হারিয়ে গেলে কাজে দক্ষতার অভাব দেখা দিতে বাধ্য।তখন বর্তমান কেরিয়ারের উন্নতির অবকাশ কমে যাবে।আতি অনেকেই মনে করেন এই অবস্থায় কেরিয়ার বদলে ফেলাই যুক্তিযুক্ত।আবার একই কেরিয়ারে ১০–১২ বছর থাকতে থাকতে ‘ল অফ আভারেজ’ এর শিকার হন অনেকেই।তখন আগের মত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারেন না।তবে কেরিয়ার বদলানোর ক্ষেত্রে প্যাশন আর আর্থিক দিকটা যেমন গুরুত্বপুর্ণ তেমনই বাস্তব পরিস্থিতিও গুরুত্বপুর্ন।
পেশা বদলানোর ১০টি টিপস
# হতে পারে আপনি বর্তমান পেশা নিয়ে সন্তুষ্ট নন।অনেক দিন ধরেই ভাবছেন নতুন কিছু করবেন।কারন যাই হোক না কেন,কখন পেশা বদলাবেন সে সিদ্ধান্ত ভেবে চিন্তে নিতে হবে।জিনেকে প্রশ্ন করুন, আপনি বর্তমান পেশা থেকে ঠিক কী প্রত্যাশা করেন? যদি টাকা পয়সা,স্বাচ্ছন্দ্য, সম্মান ইত্যাদি আপনার লক্ষ্য হয় এবং আপনি যদি সেগুলো পান তাহলে পেশা বদলানোর কোন দরকার নাই।
#ভেবে দেখুন,আপনি যে নতুন পেশায় যাইতে চাইছেন্ সেখানকার অসুবিধাগুলো কী কী হতে পারে? যদি দেখেন আপনার লক্ষ্যের সনহে নতুন পেশার সম্ভাবনা মিন খাচ্ছে না,তাহলে পরিবর্ত্নের কথা ভাববেন না।
# যদি মূলধারার থেকে অন্য ধারার পেশায় আসেন,তাহলে ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।এক্ষেত্রে যে পেশায় আছেন সেখানে প্রথম থেকে সঞ্ঝয় করতে শুরু করুন।তাহলে নিজের ইচ্ছেমত বিনিয়োগ করতে পারবেন।সফল না হলেও আর্থিক অসুবিধা হবে না।
# নতুন পেশার শুরু থেকেই সাফল্য আসবে, তা নাও হতে পারে।ব্যাক–আপ প্লানিং অবশ্যই তৈরী রাখবেন।
# আপনার কাছে জব স্যাটিস্ফ্যাকশন যদি সবথেকে গুরুত্বপুর্ন হয়, তাহলে নিজের ইচ্ছেমত কোনও পেশায় যেতে পারেন।তবে ভেবে দেখুন সেখানে আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতার সঠিক মুল্যায়ন আছে কিনা।
# তথাকথিত ‘নিরাপদ’ পেশা জিনিসটা কাল্পনিক।অন্তত যারা পেশা বদল করছেন,তাদের অনেকেই এটা মনে করেন।আপনি যদি প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী নিজেকে ইন্নতি করতে না পারেন,তাহলে কাজের ডায়ানামিজটাই হারিয়ে যাবে।সেক্ষত্রে গড়পড়তা চাকরিতেও উন্নতি মুশকিল।
# নতুন পেশায় যাওয়ার আগে সেখানকার কেরিয়ার প্রস্পেক্ট,ভবিষ্যৎ উন্নতির সম্ভাবনা ইত্যাদি জেনে বুঝে নিন।নতুন কোম্পানির প্রোফাইল নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করুন।দুর্বল জায়গাগুলো ইম্প্রুভ করার বদলে আপনার স্ট্রং পয়েন্টগুলো কাজে লাগান।
# অনেকেই আছেন যাঁরা চাকরি ছেরে সৃজনশীল কাজে (ব্লগিং, বেকিং, স্ক্রিপ্ট লেখা, বই লেখা ইত্যাদি) মনোযোগ দেন।আগের মত অর্থ উপার্জন নাও করতে পারেন এটা ভেবে নিয়েই কাজে নামতে পারেন।
# আবার অফরিট পেশা থেকে মূলধারার পেশায় আসতে চাইলে কম বয়সেই সিদ্ধান্ত নিন।কারন এখানে বয়সের বিধিনিষেধ আছে।
# মাঝ বয়সে এসে অনেক ভাললাগার পেশায় ঢুকে পড়েন।ছেলেমেয়ে বড় হয়ে যায় বলে সংসারের দ্বায়িত্ব কমে যায়।তবে বেশী বয়সে কেরিয়ার বদলে ভাল–খারাপ দু’টো দিকই আছে।তাই এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই ফিনানাশিয়াল প্লানিং করে এগোন।