বার্সেলোনার ‘ডাবল’

0

গোলশূন্য নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন জরদি আলবা। শেষ বাঁশি বাজার আগে গোল করেন নেইমার। দুটো গোলেই অবদান রাখা লিওনেল মেসি পুরো ম্যাচজুড়েই দুর্দান্ত খেলেছেন।

প্রথমার্ধে ডিফেন্ডার হাভিয়ের মাসচেরানোর লাল কার্ডে ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া বার্সেলোনাকে দ্বিতীয়ার্ধে চেপে ধরেছিল সেভিয়া। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে তারাও ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার পর মেসি-নেইমারদের আর রোখা যায়নি। অতিরিক্ত সময়ে একতরফা খেলে ঘরোয়া ‘ডাবল’ জিতে নেয় লুইস এনরিকের দল।

রোববার রাতে আতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠ ভিসেন্তে কালদেরনে অষ্টম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটা পেয়েছিল বার্সেলোনা। তবে ডি-বক্সের ভেতর থেকে লুইস সুয়ারেসের জোরালো ভলি লক্ষ্যে থাকেনি।

সপ্তদশ মিনিটে আসে সেভিয়ার পালা। ডি-বক্সে ১২ গজ দূর থেকে শট নিতে পারেননি ইউরোপা লিগের ফাইনালে লিভারপুলের জালে দুই গোল করা কোকে।

৩৬তম মিনিটে মাসচেরানোর লাল কার্ডে বড় একটা ধাক্কা খায় বার্সেলোনা। ডি-বক্সের একটু বাইরে কেভিন গামেইরোর জামা টেনে ধরে ফেলে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার এই ডিফেন্ডার।

ফাউলের জন্য পাওয়া ফ্রি-কিক থেকে এভার বানেগার বাঁকানো শট ওপরের ডান কোণ দিয়ে জালে ঢোকার পথেই ছিল; কিন্তু লাফিয়ে উঠে আঙুলের ছোঁয়ায় বল ক্রসবারের উপর দিয়ে তা পাঠিয়ে দেন গোলরক্ষক মার্ক আন্ড্রে টের স্টেগেন।

বিরতির একটু আগে দুটি সুযোগ আসে বার্সেলোনার। সেভিয়ার সাবেক খেলোয়াড় ইভান রাকিতিচের কর্নার থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি জেরার্দ পিকে। একটু পরই ডি-বক্সের ভেতর পায়ের কারিকুরিতে তিন জনকে কাটিয়ে মেসিকে বল দিয়েছিলেন নেইমার। আর্জেন্টিনা অধিনায়কের জোরালো শট এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে প্রতিহত হয়।

বিরতির পর ১০ জনের বার্সেলোনার উপর চেপে বসে সেভিয়া। ৫০তম মিনিটে ২০ গজ দূর থেকে বানেগার শট ডিফেন্ডার পিকের পায়ে লেগে সামান্য দিক পাল্টে পোস্টে লেগে ফেরত এলে বেঁচে যায় বার্সেলোনা।

সাত মিনিট পর দ্বিতীয় বড় ধাক্কাটা খায় বার্সেলোনা। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন এই মৌসুমে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৯টি গোল করা সুয়ারেস।

৬৫তম মিনিটে গোলমুখী একটি শট ঠেকিয়ে বার্সেলোনার ত্রাতা সের্হিও বুসকেতস। নির্ধারিত সময়ের বাকিটায় আধিপত্য ছিল ইউরোপা লিগের টানা তিনবারের চ্যাম্পিয়ন সেভিয়ারই। পাল্টা আক্রমণে মাঝে মধ্যে আক্রমণে উঠেছে মেসি-নেইমাররা।

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে এমনই একটা আক্রমণ থেকে গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। তবে মেসির বাড়ানো বল নিয়ে ফাঁকা ডি-বক্সে ঢুকতে যাওয়া নেইমারকে পেছন থেকে ফেলে দেন বানেগা। রেফারি আর্জেন্টিনার এই মিডফিল্ডারকে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন।

ফাউল থেকে পাওয়া ফ্রি-কিকটা নিয়েছিলেন মেসি। লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে বল ঠেকান গোলরক্ষক সের্হিও রিকো।

খেলোয়াড় সংখ্যায় সমতা আসার পর অতিরিক্ত সময়ের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলে বার্সেলোনা, যার ফল আসে একটু পরই। ষষ্ঠ মিনিটে মেসির উঁচু করে বাড়ানো বল এক ডিফেন্ডারকে গতিতে পরাস্ত করে ধরে দূরের পোস্ট ঘেঁষে জালে পাঠিয়ে দেন আলবা। পুরো মৌসুম গোলশূন্য থাকার পর শেষ ম্যাচে এসে মহামূল্যবান গোলটি পেলেন স্পেনের এই লেফট ব্যাক।

১০৩তম মিনিটে মেসির ফ্রি-কিক পাঞ্চ করে ঠেকান রিকো। অতিরিক্ত সময়ের বিরতির আগে নেইমারের ফ্রি-কিকে বল পেয়ে খুব কাছ থেকে নেওয়া পিকের জোরালো হেড দারুণ রিফ্লেক্স অ্যাকশনে ঠেকিয়ে সেভিয়াকে ম্যাচে রাখেন তিনি। পরক্ষণেই আবারও ত্রাতা রিকো। এবার দানি আলভেসের দূরপাল্লার জোরালো শট ডানে ঝাঁপিয়ে দারুণ নৈপুণ্যে এক হাতে ফেরান।

পরের অর্ধেও আধিপত্য ছিল বার্সেলোনার। খেলা শেষের কিছু আগে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় সেভিয়ার দানিয়েল কারিকো। যোগ করা সময়ে মেসির পাস থেকে ব্যবধান বাড়ান ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড নেইমার।

এই প্রতিযোগিতায় টানা ১৮টি ম্যাচে অপরাজিত থাকল বার্সেলোনা। শেষ বার কাতালান দলটি হেরেছিল ২০১৪ সালের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে।

বার্সেলোনার এটি কোপা দেল রের ২৮তম শিরোপা। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক ইনিয়েস্তার হাতে তুলে দেওয়া হয় ট্রফিটা। পরক্ষণেই তা দখলে চলে যায় সব সতীর্থের। মাদ্রিদে আইনি লড়াই করে নেওয়া বার্সেলোনার কাতালান পতাকা তখন গর্বের সঙ্গে উড়ছে গ্যালারি জুড়ে।

Courtesy : BDNEWS24

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *