ফুটবল হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। এ জনপ্রিয়তা আজকে একদিনের নয়! শতবর্ষ ধরে কয়েকটি জাতি মন থেকে ফুটবল লালন করার ফলশ্রুতিতে আজকে ফুটবল এতটা আধুনিক। আর ফুটবলের জনপ্রিয়তা যখন ওসাকা থেকে পিটার্সবার্গ তখন ফুটবল বিশ্বকাপ ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ হওয়ারই কথা। পেলে-ম্যারাডোনা কিংবা মেসি-রোনালদো, এ নামগুলা যথেষ্ট ফুটবলকে ব্যাখা করতে। কিন্তুু এ নামগুলোকে এক একটা ব্র্যান্ড কিংবা প্রজন্মের আইকন হিসেবে বিশ্বময় আলোচিত করার পেছনে যেমন রয়েছে সান্তোস-নাপোলি কিংবা বার্সা-রিয়ালের মতো ক্লাব তেমনি সে ক্লাবগুলোতে পরিপূর্ণভাবে তাদের তৈরি করে দিতে অবদান রেখেছে শত শত ফুটবল একাডেমি।
ফুটবলাররা পেশাদারিত্বে জড়িয়ে পড়ার আগে একাডেমিক শিক্ষা লাভ করে মূলত ফুটবল একাডেমি থেকেই। ফুটবল একাডেমিগুলোই ফুটবলারদের বড় বড় ক্লাবগুলোতে খেলার যোগ্যতা তৈরি করে দেয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় যেমন আমাদের শিক্ষা জীবনের প্রথম ধাপ তেমনি ফুটবল একাডেমিগুলো ফুটবলারদের প্রথম ধাপ। চলুন দেখে নেই বিশ্বের সেরা ৫ ফুটবল একাডেমির পরিচিতি এবং তাদের তৈরি কিংবদন্তী এবং সুপারস্টারদের।
৫. বোকা জুনিয়র্স
বুয়েন্স আয়ার্সে সামুদ্রিক ছোঁয়ায় গত শতাব্দীর শুরু থেকে ফুটবলকে বিশ্বখ্যাত করার লক্ষে গড়ে ওঠে বোকা জুনিয়র্স ফুটবল দল। শুধু আর্জেন্টিনায় নয়, লাতিন অঞ্চলে সর্বকালের সেরাদের মধ্যে বোকা জুনিয়র্স অন্যতম। আর তাদের এতশত কৃতিত্বে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে তাদের ফুটবল একাডেমি।
আজ থেকে ১০৮ বছর আগে ১৯১০ সালে ইস্তেবান বাযলেট্ট বোকা জুনিয়র্স একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন, যার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তিনি নিজেই। বুয়েন্স আয়ার্স দ্বীপের ‘লা বোকায়’ এটি অবস্থিত। বোকা জুনিয়র্স একাডেমির অফিশিয়াল স্টেডিয়াম হচ্ছে পেদ্রো পম্পেলিও যার দর্শক ধারণ ক্ষমতা 49000। মূল দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই একাডেমি গ্র্যাজুয়েট হয়ে থাকে।
এই একাডেমির নিয়ন্ত্রণে অনুর্ধ-৮ থেকে অনুর্ধ-২০ দল জুনিয়র বিভাগে খেলে থাকে এবং তাদের অফিশিয়াল ফুটবল ফর্মেশন হচ্ছে ৪-৩-১-২। একাডেমির সর্বশেষ লেভেল হচ্ছে অনূর্ধ্ব ২০, সেখানে প্রতিটি খেলোয়াড়কে মূল দলের ফর্মেশনে গড়ে তোলা হয় যাতে তারা ইউরোপ কিংবা আমেরিকা যেখানেই খেলুক না কেন সহজেই মানিয়ে নিতে পারে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ৩৫০ এর অধিক ফুটবলারকে বিক্রি করেছে একাডেমিটি যার মধ্যে ১৩০ জন ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগে খেলেছে।
আর্জেন্টিনা, স্পেন, জার্মানি, ইসরায়েল, চীন সহ আরো কয়েকটি দেশের ৩৫টি দলে বোকা জুনিয়র্সের খেলোয়াড়রা খেলেছে। বর্তমান সময়ে একাডেমিতে প্রায় ৫০ জনের অধিক (অনূর্ধ্ব ১৬ হতে ২০) কিশোর ফুটবল চর্চা করছে যাদের জন্ম আর্জেন্টিনায়। একাডেমি কতৃপক্ষ আর্জেন্টিনার প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটা গ্রাম, শহর, মফস্বলে নিজেদের এজেন্ট কিংবা স্কাউট নিয়োগ দিয়ে রেখেছে যাতে প্রতিভাবান শিশু-কিশোর খুঁজে পাওয়ামাত্র নিজেদের একাডেমিতে নিয়ে আসতে পারে।
বোকা জুনিয়র্স আর্জেন্টিনার বাহিরের ফুটবলারদের একাডেমিতে ভর্তি নেয় না। এদের মূলদল এবং একাডেমির বর্তমান প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ডেনিয়েল এঞ্জেলেসি এবং কোচ হিসেবে রয়েছেন সাবেক ডিফেন্ডার রোলান্ডো শ্চিয়াভি। একাডেমিটি লাতিন অঞ্চলে ফুটবলার তৈরির ফ্যাক্টরি হিসেবে পরিচিত।
এখন পর্যন্ত প্রায় ২১ বার বোকা জুনিয়র্স একাডেমি আর্জেন্টাইন একাডেমিক ডিভিশনের ট্রফি জিতেছে। কার্লোস তেভেজ, ভেনোগা, ফার্ন্দান্দো গ্যাগো বোকা জুনিয়র্স ইয়ুথ গ্র্যাজুয়েটেড ফুটবলার।
৪. বায়ার্ন মিউনিখ
ইউরোপীয় ফুটবল বিপ্লবের অন্যতম সংগঠক ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ। তাদের নিজস্ব একাডেমি রয়েছে যার নাম ‘বায়ার্ন মিউনিখ জুনিয়র্স’। বিশ্বের ধনী ফুটবল একাডেমির মধ্যে এদের অবস্থান দ্বিতীয়।
জার্মানির মিউনিখে ১৯০২ সালে বায়ার্ন মিউনিখ একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয় যার পুনঃনির্মাণ করা হয় ১৯৯৬ সালে। ১৯৯০ সালে দুই জার্মানির এক হওয়ার কারণেই এটিকে পুনঃনির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় কৃতপক্ষ। জার্মান ফটোগ্রাফার এডলফ লুইস জন মূলত এ একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা। ১৯০০ সালে যখন তিনি ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ প্রতিষ্ঠা করেন তার ২ বছর পর একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমানে একাডেমির পরিচালক হচ্ছেন জোসেন সাওয়ের এবং কোচ জোনেস উয়েবার এবং লপার্তে। তারা দুজন যথাক্রমে অনুর্ধ-১৯ এবং -১৭ এর দায়িত্বে রয়েছেন। বায়ার্ন একাডেমিতে বর্তমানে ফুটবল নিয়ে অধ্যায়ন করছেন মোট ১৬৫ জন শিশু-কিশোর যাদের নিয়ন্ত্রণ করছে ১৬ জন ফুটবলপন্ডিত ১জন ফিজিওথেরাফিষ্ট। এখানে মাঠে ফুটবল শেখানোর আগে ফুটবল সম্পর্কে কাগজে-কলমে পড়ানো হয় যাতে তাদের ফুটবল ডেভেলপিং সহজ হয়। একাডেমিতে দুটি টিম বিদ্যমান, একটি হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ আরেকটি অনূর্ধ্ব-১৭।
মজার ব্যাপার হচ্ছে উভয় টিমের থাকার জায়গা আলাদা হলেও ট্রেনিং গ্রাউন্ড একই। ট্রেনিং গ্রাউন্ডের পাশেই রয়েছে ১৫ থেকে ১৯ বছরের ফুটবলারদের জন্য থাকার বিশাল বিল্ডিং যেখানে তাদের দেখাশোনার জন্য সার্বক্ষণিক অগণিত লোকজন রয়েছে। সকালের নাস্তা হতে রাতের খাবার কোনোটাতেই কষ্ট পেতে হয় না খেলোয়াড়দের, শুধু ট্রেনিং এবং জিমে মনোযোগ দেয়াই খেলোয়াড়দের কাজ। খেলোয়াড়দের থাকার জায়গায় ৮ জন শিক্ষক সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকে ফুটবল বিষয়ক পাঠদানের লক্ষ্যে। বায়ার্ন একাডেমি চায় তাদের ফুটবলাররা প্রকৃত ইউরোপীয় আধুনিক ফুটবল বিদ্যায় পারদর্শী হোক এবং বিশ্বফুটবলে আলো ছড়িয়ে দিক।
ফুটবল বিশ্বের আইকন টনি ক্রুজ, বাস্তিয়ান শোয়ান্সেটাইগার, ফিলিপ লাম, থমাস মুলার, ম্যাট হোমলস, ডেভিড আলাভারা বায়ার্ন একাডেমি গ্র্যাজুয়েট ফুটবলার। আধুনিক ইউরোপিয়ান ফুটবলের ৪-৩-৩ ফর্মেশনেই একাডেমিতে ফুটবল ট্রেনিং দেয়ানো হয়। বায়ার্ন একাডেমির অফিশিয়াল গ্রাউন্ড হচ্ছে ‘বায়ার্ন ক্যাম্পাস’ যার দর্শক ধারণক্ষমতা ২৫০০। বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে তাদের একাডেমির স্কাউট নিয়োগ দেয়া রয়েছে যারা কাউন্সিলিং করে টেলেন্ট ফুটবলার খুজে আনে।
৩. আয়াক্স
ইয়োহান ক্রুইফকে কে না চেনেন? টোটাল ফুটবলের জনক হিসেবে ভুবনবিখ্যাত তিনি। আধুনিক ফুটবলের অন্যতম এ সংগঠকের জন্যে হলেও ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে ডাচ ফুটবল ক্লাব ‘আয়াক্সের’ নাম।
আয়াক্স একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০০ সালে আমস্টারডামে, যার অফিশিয়াল নাম ‘আয়াক্স যুব একাডেমি’। এই একাডেমি ৭ থেকে ১৯ বছর বয়সি শিশুকিশোরদের ফুটবল উন্নয়নে কাজ করে ১৩টি যুব দলের মাধ্যমে। আয়াক্স মূল দলের খেলোয়াড়রা বেশিরভাগই একাডেমি থেকে প্রমোটেড হয়েই খেলে থাকে। আয়াক্স একাডেমিতে ২০০ এর ও অধিক শিশুকিশোর ফুটবল নিয়ে পড়াশুনা এবং ট্রেনিং করছে।
এখানকার মূল মাঠের নাম ‘ডি টয়েকমোস্ট’ এবং এর দর্শক ধারণক্ষমতা ৫ হাজার। আয়াক্স একাডেমির অনেক ফুটবলার ইউরোপিয়ান সেরা পাঁচ লিগে খেলেছে এবং বর্তমানে খেলছে। ইয়োহান ক্রুইফ, ভেন বাস্তেইন, পেট্রিক ক্লুইভার্ট, সেদ্রফ, স্নাইডার, এরিকসন প্রভৃতি ফুটবলার আয়াক্স একাডেমি গ্র্যাজুয়েট। বর্তমানে আয়াক্স একাডেমির চেয়ারম্যান হিয়েন্নেই হেনরিচ এবং কোচ সাইদ ওয়াল্লি। আয়াক্সকে ফুটবল একাডেমিদের আইক বলা হয়ে থাকে এবং এটি ডাচ ফুটবলের গর্ব।
২. ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ফুটবল ক্লাব হচ্ছে ‘রেড ডেভিল’ খ্যাত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তাদের ফুটবল একাডেমির নাম ‘ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ইয়ুথ একাডেমি’ এবং সেখানে অনূর্ধ্ব-১৩ থেকে অনূর্ধ্ব-২৩ পর্যন্ত দল রয়েছে। যদিও ফিফার হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যন্তই একাডেমিক ফুটবল বিবেচিত হয়, সে হিসেবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড একাডেমি হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যন্তই হিসেব করা হয়।
১৮৭৮ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। রেড ডেভিল একাডেমিতে এত বেশিই ছাত্র যে ৩টি ট্রেনিং মাঠ ফুটবল প্র্যাকটিসে ব্যবহৃত হয়। একাডেমির মূল মাঠ ‘লেই স্পোর্টস ভিলেজ’ যার দর্শক ধারণক্ষমতা ১২,০০০। ইংলিশ ফুটবলের খ্যাতনামা অনেক ফুটবলারের ফুটবল বিদ্যালয় হচ্ছে এই একাডেমি। যাদের কেউ কেউ আবার ফুটবল ইতিহাসের কিংবদন্তী। ববি চার্লটন, জর্জ বেস্ট, পওল স্কর্লস, ডেভিড ব্যাকহাম, গেরি নেভিলদের মতো কিংবদন্তীর জন্ম দেয়া ম্যানচেস্টার ইউনেইটেড ইয়ুথ একাডেমি ইউরোপিয় ফুটবল একাডেমি গুলোর মাঝে অন্যতম সেরা বলা চলে। সকল স্টেজ মিলিয়ে প্রায় ২০০ এর মতো শিশুকিশোর এখানে ফুটবল চর্চা করতেছে।
১. লা মাসিয়া
‘মোর দ্যান এ ক্লাব’ খ্যাত ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার একাডেমির নামই হচ্ছে ‘লা মাসিয়া’। আজকের বার্সেলোনার সমস্তটুকুন সফলতার সিংহভাগের কৃতিত্ব তাদের ইয়ুথ গ্র্যাজুয়েটদের। ‘লা মাসিয়া’ মূলত কাতালুনিয়ার একটি প্রসিদ্ধ বিল্ডিং যেটি ১৭০২ সালে নির্মিত।
১৯৭৯ সালে বার্সেলোনার সাবেক খেলোয়াড় ইয়োহান ক্রুইফ আয়াক্সের মতো করে কাতালোনিয়ায় একটি ফুটবল একাডেমির প্রস্তাব দেন। বার্সেলোনা কৃতপক্ষ তার প্রস্তাব গ্রহণ করেন। তখন ঐ প্রসিদ্ধ বিল্ডিং এবং এর পাশের জমিগুলোকে ট্রেনিং গ্রাউন্ডে পরিণত করে অগ্রযাত্রা শুরু করে ‘লা মাসিয়া’ খ্যাত বার্সেলোনা ফুটবল একাডেমি যা আজ বিশ্বের সেরা ফুটবল একাডেমিতে পরিণত হয়েছে। বার্সেলোনা কৃতপক্ষ হয়তো কিংবদন্তী ক্রুইফকে সবসময় কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে যুগযুগান্তর ধরে তার এমন যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের জন্য যা বদলে দিয়েছিলো বার্সেলোনার ফুটবলকে এবং ইতিহাসকে, বাড়িয়ে দিয়েছিলো গৌরবকে।
পরবর্তীতে ২০১১ সালে বার্সেলোনা তাদের সকল প্রকার কার্য়ক্রম ‘লা মাসিয়া’ ফ্যাসিলিটি থেকে ‘হুয়ান গাম্পার’ গ্রাউন্ডে স্থানান্তর করে। ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত মোট ৪৪০ জন শিশু-কিশোর নিজেদের পরিবার এবং বাড়ি ছেড়েছেন ‘লা মাসিয়ায়’ ফুটবল বিদ্যা শেখার জন্য যাদের অর্ধেকই কাতালোনিয়ায় জন্মগ্রহণ করা। এছাড়া ১৫ জন ক্যামেরন, ৭ জন ব্রাজিলিয়, ৫ জন সেনেগাল, ৩ জন আর্জেন্টাইন ও ছিলো। বাকিরা সবাই স্পেনের বিভিন্ন জায়গার। ঐ ৪৪০ জনের মধ্যে ৪০ জনই বার্সলোনা ফার্স্টটিমের হয়ে খেলেছিলো এবং খেলছে।
মূলত ৬ থেকে ৮ বছরের শিশুদের ভর্তি নেয় একাডেমিটি এবং বছরে প্রায় ১০০০ জন এখানে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে থাকে তার মধ্যে ২০০ জন নেয়া হয়। এদের মধ্য থেকে ৬০ জন পরবর্তীতে টিকে থাকে যাদের সত্যিকারের ‘লা মাসিয়া’ বলা হয়। এই একাডেমিটি ইউরোপের সবচেয়ে ধনী একাডেমি এবং এদের ফুটবল শেখানোর সিস্টেমটা যথেষ্ট গোপন এবং নিজস্ব।
একাডেমির ট্রেইনাররা সবাই বার্সেলোনার সাবেক ফুটবলার হয়ে থাকেন। মোট ১৩টি যুব দলে মোট ৩০০ জন কিশোর ট্রেনিং করে যাদের ২৪ জন কোচ এবং ৫৬ জন নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। মেধা যাচাইবাচাই করার জন্য কাতালোনিয়ায় ১৫ জন, পুরো স্পেনে ১৫ জন এবং পুরো বিশ্বে ১০ জন অভিজ্ঞ ফুটবল বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়ে রেখেছে একাডেমি কতৃপক্ষ। এদের ট্রেডিশনাল ফর্মেশন ৪-৩-৩।
২০১০ সালের ব্যালনডি’অর লিস্টের প্রথম তিনজনই ‘লা মাসিয়া’ একাডেমি গ্র্যাজুয়েট যার জন্য একাডেমিটি সত্যিই গর্বিত এবং আলোচিত। ২০১০ সালে লিও মেসি, ইনিয়েস্তা, জাভি ব্যালনডি’অর থ্রিতে ছিলেন এবং তাঁরা ‘লা মাসিয়াে গ্র্যাজুয়েট। ‘লা মাসিয়ায়’ অনেক কিংবদন্তী তৈরি হয়েছে যাদের নাম ফুটবল ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে যুগযুগান্তর ধরে।
ক্লাব বার্সেলোনার একটি সোনালি প্রজন্মের সূচনা হয়েছে এ একাডেমি থেকেই যাদের মধ্যে কার্লোস পুয়্যল, জাভি-ইনিয়েস্তা, ভালদেস, পিকে-বুস্কেটস, পেদ্রো-ফেব্রিগাস, জর্দি আলবা-রবার্তোরা অন্যতম। তবে ‘লা মাসিয়া’দের সবচেয়ে সেরা আবিষ্কার এ প্রজন্মের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। ২০০৪ সালে লা মাসিয়ায় শুরু হওয়া এ কিংবন্তীর ফুটবল জীবন আজও চলছে নতুনত্বে।
মেসি ৫ বারের ব্যালনডি’অর জয়ী এবং ক্লাব বার্সেলোনাকে জিতিয়েছেন ৩০টির মতো মেজর ট্রফি যা বার্সেলোনাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। এখানেই থেমে নেই ‘লা মাসিয়া’দের প্লেয়ার তৈরির অগ্রযাত্রা। জেরার্ড ডেউলিফিউ, অরিওল বুস্কেটস, এলেনার মতো ইয়ংস্টারদের অলরেডি বিশ্ব ফুটবলে তুলে ধরেছে তারকা হিসেবে যাদের ভবিষ্যৎ সুপ্রসন্ন বলা যায়।