বিসিএস প্রিলিমিনারির প্রস্তুতি: বাংলা, ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আর নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন

লেখক : SUSHANTA PAUL   

আজকে কথা বলব বাংলা, ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আর নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন নিয়ে। বিসিএস প্রিলির বাংলার প্রশ্নগুলি দেখলে মনে হবে, পরীক্ষায় যা যা এসেছে, সেগুলি ছাড়া বাংলার আর সবকিছুই আপনি পারেন। বাংলায় ‘চেনা চেনা লাগে, তবু অচেনা’ টাইপের প্রশ্ন বেশি আসে।

৯ম-১০ম, ১১শ-১২শ শ্রেণীর বাংলা ১ম পত্র বইয়ের লেখক পরিচিতি অংশটি দেখে নিন। লাল-নীল দীপাবলি, জিজ্ঞাসা, মাহবুবুল আলমের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, আগের বিসিএস রিটেনের বাংলা সাহিত্যের প্রশ্নাবলী ভালভাবে পড়ে নিন। এ বইগুলি পড়ার আগে গাইড বই আর জব সল্যুশন থেকে পুরোনো প্রশ্নগুলি যত বেশি সম্ভব, দাগিয়ে দাগিয়ে পড়ে ফেলুন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন, কোন ধরণের প্রশ্ন পরীক্ষায় বেশি আসে। মুখস্থ নয়, বারবার পড়ুন, এতে মনে থাকবে বেশি। সাহিত্যের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না, এটা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিন। বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, হায়াৎ মামুদের ‘ভাষা শিক্ষা’ থেকে সিলেবাসের টপিক ধরে ধরে অধ্যায়গুলি পড়ে নিন। ব্যাকরণের একেবারে কঠিন কাটখোট্টা প্রশ্নগুলি কষ্ট করে মনে রাখার দরকার নেই। সবকিছু পারার পরীক্ষা বিসিএস নয়। কঠিন প্রশ্নে কোন বাড়তি মার্কস থাকে না, তাই ১টা কঠিন প্রশ্ন শেখার জন্য অনেকবেশি সময় না দিয়ে ওই একই সময়ে ১০টা সহজ প্রশ্ন শিখুন।

ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অংশের জন্য ৯ম-১০ম শ্রেণীর সামাজিক বিজ্ঞান বইটার সংশ্লিষ্ট অধ্যায়গুলি খুব ভালভাবে পড়ে ফেলুন, সাথে বাজারের ৩-৪টা গাইড বই।

নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন অংশটির জন্য সবচাইতে বেশি দরকার কমনসেন্স। ৩-৪টা গাইড বইয়ের পাশাপাশি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের ‘নাগরিকদের জানা ভালো’ বইটিও দেখতে পারেন। এ অংশের সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া মানেই কিছু নেগেটিভ মার্কসকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসা।

1. আগামী ৪০ দিনকে ৬টা বিষয় পড়ার জন্য কীভাবে সাজানো যায়, ৪ ঘণ্টা সময় নিয়ে সে পরিকল্পনা করে ফেলুন। প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করুন। আগের দিনের কাজ বাকি থাকলে সেদিনের কাজ না কমিয়ে ঘুমানোর সময় কমিয়ে কাজ করার সময়টা বাড়িয়ে দিন।

2. পড়তে বসার আগে কাগজে লিখে ফেলুন, সেদিন কী কী পড়বেন, কতটুকু পড়বেন। অলওয়েজ থিঙ্ক অন পেপার!

3. বাসার বাইরে সময় না দিয়ে গড়ে ১৫ ঘণ্টা বাসায় পড়াশোনা করুন। গাইডবই কিনে প্রতিদিন ২-৩টা মডেল টেস্ট দিয়ে নিজেই নিজেকে যাচাই করুন।

4. এই সময়টাতে যারা বেশি পারে, ওদের সাথে কম মিশুন। যারা কোনো একটা বিষয়ে অনেকবেশি ভাল, তাদের সাথে কখনওই কম্পিটিশনে যাবেন না। প্রতিদিনই শুধু নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

5. ভাল প্রস্তুতি নেয়ার চাইতে ভাল পরীক্ষা দেয়াটা বেশি দরকার। ভাল প্রস্তুতি নিলেই যেমন সবাই প্রিলি পাস করতে পারে না, ঠিক তেমনি খারাপ প্রস্তুতি নিলেই সবাই প্রিলি ফেল করতে পারে না। সবসময়ই রেজাল্ট হয় রেজাল্টের পর।

6. ‘প্রথমবারের বিসিএস’ বলে কোনকিছু মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেবেন না। নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করুন।

7. অভিজ্ঞতা থেকে নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, বিসিএস পরীক্ষার রেজাল্ট বের হওয়ার পর আপনি অনেক অতিপণ্ডিতকে ফেল করতে দেখবেন। কে কী পারে, সেটা নিয়ে না ভেবে আপনি কী পারেন সেটা নিয়ে ভাবুন।

8. পড়তে পড়তে ক্লান্তি এলে সহজ কোনো পড়া, যেটা আপনি সবচাইতে ভাল পারেন, সেটি খুব দ্রুত পড়ুন; ক্লান্তি চলে যাবে।

9. চ্যাটিং, ডেটিং, ফেসবুকিং—-এসবের সময় বাঁচিয়ে প্রার্থনা করুন! আগে চাকরি, পরে ওসব।

10. পড়তে ইচ্ছে করছে না আর? চোখদুটো বন্ধ করে রাখুন ৫ মিনিটের জন্য। কল্পনায় আনুন, চাকরিটা পেয়ে গেলে আপনি আপনার কাছের মানুষগুলিকে নিয়ে কীভাবে বদলে যাবেন! বাজি ধরে বলতে পারি, পড়ায় গতি এসে যাবে আবারও!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *