আমরা আজকে কোনো সেমিনার, কনফারেন্স যেখানেই উপস্থিত হয় না কেন ঘুরেফিরে একটা হাইপ এর নাম আসবেই আমাদের সামনে ! হয়তোবা আপনারা ইতিমধ্যে ধারণা করতে পেরেছেন ? সেটা হলো বিগ ডাটা। কোথায় নেই এর ব্যবহার? এই আর্টিকেল যখন পড়ছেন , তখনও পরোক্ষভাবে বিগ ডাটা ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ করে যাচ্ছে। প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে ? আচ্ছা আমি ব্রিফ করছি , আপনি যে আর্টিকেলতা পড়ছেন হয়তোবা আপনি ফেইসবুক কিংবা গুগল থেকে পেয়েছেন ! যদি ফেইসবুক থেকে পেয়ে থাকেন আপনার ইন্টারেস্টের সাথে ফেইসবুক তার এলগোরিদম কে ম্যাচ করে আপনাকে সার্ভ করছে মানে আপনার হোমপেজে এনে দিচ্ছে।
এখন বিগ ডাটা হাইপটা একটু ওল্ড হয়ে গেছে নতুন যুক্ত হয়েছে নতুন একটা হাইপ : ব্লকচেইন। দুইটা টেকনোলজিকে যদি আমরা মিক্সচার করি তাহলে আমাদের আউটকাম কেমন আসবে ? আমি আছি আজকে এই টপিক নিয়েই আপনাদের সামনে।
ব্লকচেইন একটা নেটওয়ার্ক এ একটা নির্দিষ্ট ডাটাবেজ যেটা ওই নেটওয়ার্ক এর সব সদস্যের কাছে ডিস্ট্রিবিউট করা থাকে, যাকে আমরা ডিস্ট্রিবিউট লেজার (LEDGER ) বলতে পারি (ডাটাবেইজ এ কোন আপডেট হলে সেটা ওই নেটওয়ার্ক এর সবার কাছে থাকা ডাটাবেইজ এ অটোমেটিক আপডেট হয়ে যায় – ১০মিনিট পর পর ) ।প্রশ্ন আসতেই পারে ডাটাবেস তা কিসের ? এই ডাটাবেজ যেকোন কিছুর হতে পারে, ট্রানজেকশন হিস্টোরি হতে পারে, সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট হিস্ট্রি এবং ট্র্যাকিং হতে পারে । প্রতি টা ডিস্ট্রিবিউট ডাটাবেইজ একটা নির্দিষ্ট ব্লক এ থাকে । প্রতি টা ব্লক এর আলাদা আলাদা ইউনিকএড্রেস থাকে একে অপরের সাথে কানেক্ট থাকার জন্য এবং পরবর্তীতে ডাটা বের করার জন্য ।
সময়ের প্রেক্ষাপটে ব্লকচেইন টেকনোলজি খুব দ্রুত আমাদের মেইনস্ট্রিম এ এডপ্ট হয়ে যাচ্ছে। ট্রানজেকশনের ডাটাগুলো বিভিন্ন শেয়ার্ড লেজারে স্টোর হচ্ছে আর লেজারগুলোও হয়ে যাচ্ছে এক এক টা ডাটা ভলিউম। এই ডাটার ভলিউম এর জন্য সাধারণত এমাজন AWS কিংবা মাইক্রোসফট Azure ক্লাউড সার্ভিস নিতে হয় যার কস্ট বহন অনেক ব্যায়বহুল। যাহোক, Stroj একটা পাইলট প্রজেক্ট রান করেছে যার ফলে ডিসেন্ট্রালাইজেড ডাটা স্টোরেজ কস্ট এমাজোনের চেয়ে ৯০ ভাগ কমে এসেছে।
জাপানে, একটি কনসোর্টিয়াম (৫০টি ব্যাঙ্ক ) রিপলের সাথে পার্টনারশীপ এ গেছে , বলা চলে তারা ব্লকচেইনকে ইমপ্লিমেন্টেশন করেছে । রিপল হলো ওপেন সোর্স ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক এবং পেমেন্টের জন্য ওয়ার্ল্ডে একমাত্র এন্টারপ্রাইস ব্লকচেইন সল্যুশন। এটার ব্যাপকতা পেয়েছে কারণ , রিস্ক নেই এবং কস্টও কম। ট্রাডিশনাল সিস্টেমগুলোতে কস্টও বেশি এবং রিস্কও বেশি।
রিপলকে চয়েস করার পর জাপানী কনসোর্টিয়ামটির ট্রানজেকশন টাইম এবং প্রোসেসিং কস্ট যুগপৎ ভাবে কমে গেছে , একদম জিরোয় কোঠায় পৌঁছে গেছে ।
আমরা যদি বিগ ডাটা এবং ব্লকচেইনকে একসাথে করতে পারি তাহলে এনালিটিক্স জগতে নতুন একটা ইরা তৈরী হবে ! দেখা যাক কেমন কাজ চলছে কম্বিনেশন নিয়ে –
বিগ ডেটা এনালিটিক্স প্রোসেসে এক ডাটা লেয়ারে যুক্ত হওয়ার সময় ব্লকচেইন ব্যবহার করা হয়। এই ডাটা লেয়ারটিই কম্পাইল করে বিগ ডাটা এনালাইসিস এর ২টি প্রধান ডিমান্ডকে।
১) ব্লকচেইন জেনারেটেড বিগ ডাটা সিকিউর। এটা কোনো ভাবেই পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনাও নেই নেটওয়ার্ক আর্কিটেকচার এর জন্য।
২) ব্লকচেইন বেসড বিগ ডাটা মূল্যবান। কারণ, এটি স্ট্রাকচার্ড, কমপ্লিট এবং পরবর্তী এনালাইসিসের উপোযুগী।
ডাটাগুলো বিভিন্ন সোর্সের হতে পারে , যেমন- এনার্জি ডাটা,রিয়েল স্টেট কিংবা অন্য ডোমেইন গুলো থেকেও। বিগ ডাটা এনালিটিক্স এর ইম্প্রোভমেন্ট চোখে পড়ার মতো।ফ্রুড প্রিভেন্টেশন , সেখানে ব্লকচেইন টেকনোলজি ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউটগুলোকে ট্রানজেকশন রিয়েল টাইম যাচাই করার সুবিধা দিচ্ছে। যদি আগে occur হয়ে থাকে , তাহলে কিভাবে হয়েছে তার রিস্ক আইডেন্টিফাই এবং প্রিভেন্টেশনও ব্লকচেইন টেকনোলজি করে দিচ্ছে।
২০২০ সালের মধ্যে বিগ ডাটার জন্য $২০৩ বিলিয়ন ডলার রেভিনিউ আসবে বিসনেস ফিল্ডে। আরো বলা যাই , ২০৩০ সালের মধ্যে ব্লকচেইন লেজার ডাটা ২০% হয়ে যাবে বিগ ডাটা মার্কেটপ্লেসে এবং $১০০ বিলিয়ন রেভিনিউও আসবে।
আমরা তো, বিগ ডাটা এবং ব্লকচেইনের স্বর্গ একটু দেখলাম। কিনতু , সত্যি একটা প্রশ্ন , সেটা হলো কে আগে সুইট্যাবল এবং বেস্ট ট্রেইনড AI/মেশিন লার্নিং মডেল প্রোভাইড করবে ব্লকচেইন জেনারেটেড ডাটা লেয়ার পরিচালনার জন্য ? আসলে বিসনেস সেই ধরতে পারবে যে আগে এটা করতে পারবে।
৫০টির বেশি মিনারেল মাইনিং কোম্পানি একসাথে $৭০০ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। ব্লকচেইনের কল্যাণে খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না ট্রিলিয়ন ডলারে পরিণত হতে।
Written By
Raju Ahmed Rony
Manager, Idea & Innovation, Youth Carnival
Department of Software Engineering
Daffodil International University