আগামী মৌসুমের জন্য যেন আর তর সইছে না ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অনুসারীদের। মাঠে দুর্দান্ত সব খেলোয়াড় তো খেলবেনই, ডাগ-আউটও হয়ে যাচ্ছে তারকার হাট। আর্সেনালের আর্সেন ওয়েঙ্গার তো আছেনই, ইয়ুর্গেন ক্লপ গত মৌসুমে লিভারপুলে এসেছেন। আগামী মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটিতে আসছেন পেপ গার্দিওলা, চেলসিতে আন্তোনিও কন্তে। আর নতুন রঙে ফিরে আসছেন পুরোনো একজন—ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হোসে মরিনহো।
যেন ‘ক্ল্যাশ অব টাইটানস’! বড় দলগুলোয় এসে মিলেছেন বিশ্বসেরা সব কোচ। তবে লড়াইটা সবচেয়ে জমবে সম্ভবত ম্যানচেস্টারেই। প্রতিবেশী দুই ক্লাবে আসছেন পুরোনো দুই ‘শত্রু’ মরিনহো ও গার্দিওলা! কিন্তু মরিনহোকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, ইউনাইটেডের নতুন কোচ আগের সব শত্রুতার কথা বেমালুম ভুলে থাকতে চাইছেন!
২০১০-১১ ও ২০১১-১২ মৌসুমে গার্দিওলা যখন বার্সেলোনার কোচ, মরিনহো ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদে। দুই বছরে এমন কোনো ‘এল ক্লাসিকো’ হয়নি, যেখানে বিতর্কের গন্ধ ছিল না। আগামী মৌসুমে ম্যানচেস্টার ডার্বিতেও কি তাহলে তেমন কিছু হবে?
গত মঙ্গলবার লিসবনে এক অনুষ্ঠানে মরিনহোকে জিজ্ঞেস করা হলো গার্দিওলার সঙ্গে আগামী মৌসুমে তাঁর সম্ভাব্য দ্বৈরথ নিয়ে। পর্তুগিজ কোচ অবশ্য উত্তেজনাকর কিছু দেখেন না। দুই লিগের পারস্পরিক তুলনা টেনে এনে বললেন, ‘পেপের (গার্দিওলা) সঙ্গে দুই বছর আমি এমন একটা লিগে ছিলাম, যেখানে ও, না হলে আমি চ্যাম্পিয়ন হতাম। হয় বার্সেলোনা, না হয় রিয়াল। এমন পরিস্থিতিতে দুজনের ব্যক্তিগত লড়াইগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, কারণ সেগুলো অনেক প্রভাব ফেলে।’ ইংলিশ লিগে তেমন কিছু কেন হবে না, সেটির ব্যাখ্যাও দিলেন মরিনহো, ‘এখানে দেখুন, আমি যদি শুধু তার বা ম্যানচেস্টার সিটির ওপরই নজর রাখি, তাহলে অন্য কেউ এসে ট্রফিটা জিতে যাবে।’
ট্রফি জেতাটাই মরিনহোর ‘কর্মতালিকা’য় প্রথম দিকে থাকার কথা। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন ২০১৩ সালে বিদায় নেওয়ার পর ইউনাইটেড ডেভিড ময়েসের ১০ মাসের ‘অন্ধকার যুগ’ দেখেছে, লুই ফন গালের ঘুমপাড়ানি ফুটবলও, কিন্তু লিগ শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি। তিন বছর পর মরিনহোর কাঁধে ভর করেই সেই দিন ফেরানোর স্বপ্ন দেখছে ইউনাইটেড।
কিন্তু সেটি যে সহজ হবে না, মরিনহো জানেন, ‘বুন্দেসলিগায় দেখুন, পাঁচ বছরে চারবার একই দল জিতেছে। ফ্রান্সে সর্বশেষ চারবারই একই দল। স্পেনে চার বছরে একবার অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, বাকি তিনবার বার্সেলোনা। শুধু ইংল্যান্ডই চার বছরে চার ভিন্ন চ্যাম্পিয়ন দেখেছে। এটাই লিগটি কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, সেই ধারণা দেয়।’
প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেখানে বহুমুখী, সেখানে শুধু গার্দিওলাকে নিয়ে একমুখী থাকার সুযোগ কোথায় মরিনহোর! রয়টার্স।
Courtesy: Prothom Alo