“মুহাম্মদ আলী” দ্যা রিয়েল লাইফ সুপের হিরো!

0

13335518_10154874099373709_6526528021713489830_n

লেখক :  K M Nazmul Haque

জন্মঃ ১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের লুইসভিল কেন্টাকি

ইলামধর্ম গ্রহনঃ ১৯৭৫ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নাম পরিবর্তন করেন।

পদকঃ ৩ বারের ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাপিয়ন এবং ওলিম্পিক লাইট-হেভিওয়েট স্বর্ণপদক বিজেতা।

সর্বকালের সেরা ক্রিয়াবিদঃ ১৯৯৯ সালে স্পোর্ট্স ইলাসট্রেটেড ম্যাগাজিন মোহাম্মদ আলীকে স্পোর্ট্সম্যান অফ দ্যা সেঞ্চুরি টাইটেল দেয়। একই বছরে বিবিসি স্পোর্ট্স পার্সোনালিটি অফ দ্যা সেঞ্চুরি উপাধিতে ভূষিত করে মোহাম্মদ আলীকে। ১৯৯৬ সালের আটালান্টা সামার অলিম্পিকের মশাল জ্বালানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল মোহাম্মদ আলীকে। আনন্দের সঙ্গেই তিনি তা করেছিলেন।। ১৯৮১ সালে পেশাদার বক্সিং থেকে অবসর নেওয়ার আগে ৬১টি পেশাদার লড়াইয়ের মধ্যে ৫৬টিতে জেতেন আলি। এর মধ্যে ৩৭টি লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে নকআউট করেছেন তিনি। নিজে একবারও নকডআউট হননি।

যুক্তরাষ্ট্রর কৃষ্ণাঙ্গ অধিকার আন্দোলনের নেতা আল শার্পটনের ভাষায়, আমেরিকার সাংস্কৃতিক জগতে মুহাম্মদ আলী এক বিরাট শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলেন, যা পুরো কৃষ্ণাঙ্গ অধিকার আন্দোলনকে ভীষণভাবে উজ্জীবিত করলো।

তার মতে, ষাটের দশকের আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য আলি যা করেছিলেন, তার তুলনা নেই। এই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গরা তারা যা, তা নিয়ে গর্ব করতে শিখলো: “আলী ছিলেন এমন একজন, আমরা সবাই যার মতো হতে চাইতাম। তখনকার ছেলেদের কাছে আলী হচ্ছেন আদর্শ। কয়েদির পোশাক করে জেলখানায় মারা যেতে আর কেউ রাজী নয়, সবাই চান মুহাম্মদ আলী হতে। প্রজাপতির মতো উড়বেন, মৌমাছির মতো দংশন করবেন। সবাই চান, আলীর মতো হয়ে উঠতে, মেয়েরা যাকে পাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকবে। কিন্তু আলী বলছেন, এত খ্যাতি, এত সন্মান, এসব কিছু ছেড়ে তিনি তার মানুষের অধিকারের পক্ষে দাঁড়াতে চান।”

হলিউডের ওয়াক অব ফেম দুনিয়ার বিখ্যাত সব তারকাদের কে সন্মান দেখিয়ে তাদের হাতের বা আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে অথবা অটোগ্রাফ সহ নাম খোচিত তারাকা অংকিত কয়েক হাজার তারা আছে।
সেখানে মাত্র একটি তারা ফ্লোরে না রেখে দেয়ালে রাখা হয়েছে।
সেটি মোহাম্মদ আলীর নাম খচিত তারা। এবং আলীর নামে মোহাম্মদ (সঃ) নাম থাকায় সন্মান দেখিয়ে সেই তারা ফ্লোরে রাখা হয় নাই।

13322048_10205878074622691_3271707978208184801_n

“মোহাম্মদ আলী ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক।” কিংবদন্তি এই  বক্সার ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফর করেন। ঢাকার বিমানবন্দরে হাজার হাজার মানুষ তাকে স্বাগত জানান। এ দেশের মানুষের আতিথেয়তায় তিনি ছিলেন মুগ্ধ। বাংলাদেশ সরকার তখন তাকে এ দেশের নাগরিকত্ব প্রদাণ করে। বাংলাদেশের রূপ দর্শনে মুগ্ধ হয়ে দেশে ফিরে গিয়ে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘স্বর্গে যেতে চাইলে বাংলাদেশ ঘুরে আসুন’। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে তার তিক্ততা ছিল দীর্ঘদিন। দেশটির সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েও ভিয়েতনাম যুদ্ধে যেতে চাননি তিনি। এই ‘অপরাধে’ যুক্তারষ্ট্রের সরকার তাকে একঘরে করে রাখে।

বাংলাদেশে এসে এত খুশি হয়েছিলেন, ফিরে গিয়ে সবাইকে বলেছিলেন।
“যুক্তরাষ্ট্র আমাকে তাড়িয়ে দিবো তো কি হয়েছে,আমার বাংলাদেশ তো আছে, আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি, স্বর্গ দেখতে চাইলে বাংলাদেশে যাও।’’

বাংলাদেশকে এমন উচ্চতায় নেয়া এবং একজন কিংবদন্তী পৃথিবীছেড়ে চলে গেলেন আজ, আল্লাহ্‌ ওনাকে বেহেস্ত দান করুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *