বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের প্রবেশ পদ সহকারী জজ নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ষোড়শ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (১৬ শ বিজেএস) পরীক্ষার মাধ্যমে ১০০ জন নেওয়া হবে। তবে বিধি অনুযায়ী পদের সংখ্যা বাড়তে বা কমতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এ পদের জন্য ইতিমধ্যে আবেদন শুরু হয়েছে। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ৯ মার্চ। নির্ধারিত তারিখ ও সময়ের পর কোনো আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না।
আবেদনের শিক্ষাগত যোগ্যতা
সহকারী জজ পদে আবেদনের জন্য কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে চার বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) অথবা আইন বিষয়ে স্নাতক অথবা কোনো স্বীকৃত বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে তিন বছর মেয়াদি স্নাতকসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ থাকতে হবে। আইন বিষয়ে স্নাতক অথবা স্নাতক (সম্মান) অথবা স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। তবে পরীক্ষা আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখে বা এর আগে শেষ হতে হবে।
প্রার্থীর জাতীয়তা
প্রার্থীকে বাংলাদেশের নাগরিক অথবা বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। প্রার্থী যদি এমন কোনো ব্যক্তিকে বিয়ে করেন অথবা বিয়ে করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন, যিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন, তাহলে তিনি আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
যেভাবে আবেদন
প্রার্থীকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে (http://www.bjsc.gov.bd/) প্রবেশ করে কমিশনের নির্ধারিত বিজেএসসি ফরম পূরণ করে অনলাইন নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করতে হবে। এরপর আবেদন ফি জমা দিতে হবে। সফলভাবে আবেদন জমা হওয়ার পর টেলিটক নম্বর থেকে পরীক্ষা ফি বাবদ ১২০০ টাকা জমা দিতে হবে।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষা
সব প্রার্থীকে প্রথমে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে প্রাথমিক পরীক্ষায় (প্রিলিমিনারি পরীক্ষা) অংশগ্রহণ করতে হবে। এ পরীক্ষায় মোট ১০০টি এমসিকিউ থাকবে। প্রতিটি এমসিকিউয়ের মান এক নম্বর। তবে প্রতিটি এমসিকিউয়ের ভুল উত্তরের জন্যে ০.২৫ নম্বর কাটা হবে। লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রাক্–যোগ্যতা হিসেবে প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
প্রাথমিক পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর ৫০। প্রাথমিক পরীক্ষায় সাধারণ বাংলা, সাধারণ ইংরেজি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়, সাধারণ গণিত, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা এবং আইন বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর প্রার্থীর লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে যোগ করা হবে না।
লিখিত পরীক্ষা
লিখিত পরীক্ষা হবে ১০০০ নম্বরের। যেসব পরীক্ষার্থী প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন, শুধু তাঁরাই লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। গড়ে ৫০ শতাংশ নম্বর পেলে একজন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন বলে বিবেচিত হবেন। কোনো পরীক্ষার্থী কোনো বিষয়ে ৩০ নম্বরের কম পেলে তিনি লিখিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য বলে বিবেচিত হবেন।
মৌখিক পরীক্ষা
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। মৌখিক পরীক্ষার পাস নম্বর ৫০।
পরীক্ষার সময়সূচি
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক পরীক্ষা আগামী ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার কেন্দ্র এবং বিস্তারিত সময়সূচি কমিশনের ওয়েবসাইটে ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে। কোনো আবেদনপত্র অসম্পূর্ণ থাকলে বা সঠিক পাওয়া না গেলে তা বাতিল হতে পারে। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখের জন্য অপেক্ষা না করে যত দ্রুত সম্ভব আবেদন করতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। সঠিকভাবে আবেদন করার পর প্রার্থীরা ইউজার আইডি ব্যবহার করে আগামী ১৪ মার্চ থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
প্রস্তুতির জন্য করণীয়
১৩তম বিজেএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া সহকারী জজ মো. শানু আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, আগের বিজেএস পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় আইন অংশ থেকে প্রশ্ন আসে। বাকি প্রশ্ন আসে বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান থেকে। তাই ভালো প্রস্তুতির জন্য আগের প্রিলিমিনারির প্রশ্ন এবং বিসিএসের প্রিলিমিনারির প্রশ্নগুলো সমাধান করতে হবে। যে বিষয়গুলো থেকে বিজেএস ও বিসিএস পরীক্ষায় প্রশ্ন বেশি আসে সেগুলো বেশি চর্চা করতে হবে। এছাড়া ভালো প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই।