বিমানে যাতায়াত করার সময়ে অনেক যাত্রীই এর বিনামূল্যে পাওয়া সেবা সম্পর্কে অবগত থাকে না। তারা মনে করেন বিমানে যাত্রীদের যে সেবা দেওয়া হয় তার জন্য বিমান কোম্পানিকে মূল্য দিতে হবে, অন্যদিকে অভিজ্ঞ যাত্রীরা সম্পূর্ণরূপে সচেতন যে বিমানে ভ্রমণ করার সময় বিভিন্ন বিমান কোম্পানি বিনামূল্যে সেবা প্রদান করে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক বিমানে ভ্রমণ করার সময় বিমান কোম্পানি কোনো ধরনের সেবা ভ্রমণকারীকে দিতে পারে।
১০. প্রয়োজনীয় আনুষাঙ্গিক উপকরণ
বিমানে যাত্রীদের প্রয়োজনীয় আনুষাঙ্গিক উপকরণের মাঝে সর্ব প্রথমই নাম আসে কম্বল, বালিশ এবং ঘুমের মাস্কের, এমনকি একটি সংক্ষিপ্ত ফ্লাইটেও এই উপকরণগুলো রাখা হয়। অনেক যাত্রী আছেন যারা বিমানে নিজেদের জুতা খুলে রেখে আরাম করে বসতে চান, সেক্ষেত্রে যাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে মোজা বা চপ্পল থাকে, বিমানবালাদের কাছে চাইলেই তারা যাত্রীদের মোজা বা চপ্পল প্রদান করে। দীর্ঘ ফ্লাইটগুলোর সময়, যাত্রীকে ব্যক্তিগত হাইজিন কিট দিয়ে দেওয়া হয় এবং এই কিটে দাঁত মাজন, সাবান, এবং স্যানিটাইজিং ওয়াইপগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে। এছাড়া কিছু এয়ারলাইন কোম্পানি তাদের দেওয়া এই কিটের মাঝে ঠোঁটের বাম এবং হাত ক্রিমও অন্তর্ভুক্ত করে থাকে।
০৯. বিশেষ মেনু
যদি কোনো যাত্রী আগে থেকেই একটি টিকেট কিনে থাকেন (ফ্লাইটের অন্তত ২৪ ঘন্টা আগে), সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকার প্রয়োজনীয়তার জন্য বিশেষ খাবারের অনুরোধ করতে পারে। অনেক কোম্পানি খাবারের একটি বিস্তৃত প্রস্তাব দেয় যেমন- শিশুদের জন্য এবং নিরামিষ যারা খায় তাদের জন্য। এই খাবারগুলোর জন্য যাত্রীদের অতিরিক্ত ফি প্রদান করতে হয় না।
০৮. স্নেকস এবং পানীয়
যখন যাত্রী প্লেনে থাকে তখন সে বিনামূল্যে চিপস বা চিনাবাদামের একটি ব্যাগ বিমানবালাদের কাছে চাইতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত, এই সেবাটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানি বিনামূল্যে প্রদান করে থাকে। কিন্তু যাত্রী চাইলেই জানতে পারবে যে এমন কোনো সেবা বিমানে আছে কিনা, সেক্ষেত্রে বিমানবালাদের বিনীতভাবে জিজ্ঞাসা করলেই তারা যাত্রীদের বলে দিতে পারবে তাদের সেবা সম্পর্কে।
০৭. গরম চকলেট
ফ্লাইটের সময় পানি, চা এবং কফি সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়। দীর্ঘ সময় আগে অনেক বড় কোম্পানি এই তালিকাকে বৃদ্ধি করে নতুন খাবার যোগ করেছে। উদাহরণস্বরূপ- হট চকলেট, যাত্রীরা যেই কোম্পানির বিমানেই যাতায়াত করুক না কেন ওই কোম্পানির পানীয়ের তালিকায় গরম চকলেট আছে কিনা চাইলেই তা বিমানবালাদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে দিবে।
০৬. আরামদায়ক আসন
যাত্রীরা তাদের বিমান টিকিট ক্রয় করার সময় নিজে থেকেই ঠিক করে দিতে পারে যে তারা কোন ধরনের সিট চায় তাদের নিজেদের জন্য। সেক্ষেত্রে যাত্রীরা নিজেদের আরামের কথা বিবেচনা করে সিট নির্ধারণ করতে পারে। অনেক যাত্রী আছেন যারা যাত্রা পথে আরাম করে বসতে চায়, তাদের জন্য বিশেষ করে এই সুবিধা কাজে লাগতে পারে। আগে থেকেই এই ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করে নিলে যাত্রীরা বেশ আরামদায়ক সিট নিতে পারবে যাত্রাপথে। একমাত্র ব্যতিক্রম হলো – কিছু কোম্পানি যাত্রীদের এই সুবিধা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ফী চায় এবং দেখা যায় যাত্রীরাও নিজেদের আরামের জন্য এই অতিরিক্ত ফী প্রদান করে থাকে। যদি কোনো সিট খালি থাকে সেক্ষেত্রে যাত্রীরা সিট বদল করে তাদের প্রিয়জনদের সাথে বসতে পারে।
০৫. সেকেন্ড মিল
বিমানে খাবার সবসময় টিকেটের দামের অন্তর্ভুক্ত থাকে। বিভিন্ন যাত্রীর বিভিন্ন ধরনের খাবারের চাহিদা থাকতে পারে , বিমানে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী খাবার রাখা হয়। অনেক যাত্রী আছে যারা অতিরিক্ত খাবার নিতে চান এবং বিমানবালাকে জানিয়ে তারা খাবার নিতে পারে। বিভিন্ন সময় অতিরিক্ত খাবার থেকে যায় বিমানে, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত অনেক খাবার থেকে যায়। তাই যাত্রীদের ইচ্ছানুযায়ী বিমানবালারা তাদের খাবার প্রদান করে থাকে।
০৪. বেসিক ওষুধ এবং ব্যান্ডেজ
সব বিমান কোম্পানি প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান করে থাকে । যে কোনো যাত্রী বিনামূল্যে ঔষধ চাওয়ার অধিকার রাখে, যেমন- ঔষধ, এন্তিমেতিক্স, এন্তিহিস্তামাইস ইত্যাদি । ফ্লাইট সহকারীদের এই বিষয়ে আগে থেকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া থাকে, তাই যাত্রীদের সুবিধা মতো তারা ঔষধ প্রদান করতে পারে।
০৩. স্বল্পমেয়াদী বেবিসিটিং
আজকাল বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে বিমানে ভ্রমণ করা আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ হয়ে গিয়েছে, পুরো ফ্লাইটে শিশুদের জন্য ফ্রি বেসিনেট থাকে। সেক্ষেত্রে অভিভাবকদের প্রথমে একটি বিশেষ সিট বুক করতে হয় যেখানে একটি বেসিনেট বসানো যেতে পারে। যখন বাবা অথবা মা কেউ বাথরুমে যায় তখন বিমানবালারা স্বল্প সময়ের জন্য বাচ্চার দেখাশোনা করে থাকে। কিছু কিছু বিমান কোম্পানি আছে যারা বাচ্চাদের দেখাশোনা করে থাকে যদি সেই বাচ্চা একা ভ্রমণ করে।
০২. বিনোদন
বিমানে অনেক ধরনের বিনোদন বাছাই করে নিতে পারে যাত্রীরা, যেমন: ম্যাগাজিন, রেডিও স্পিকার এবং চলচ্চিত্র দেখার জন্য বিল্ট-ইন মনিটর।
০১. ককপিট ভ্রমণ
কিছু কিছু বিমান কোম্পানি যাত্রীদের উৎসাহিত করে উড়োজাহাজ সম্পর্কে জানতে, প্রয়োজনে তারা যাত্রীদের বিমানের ককপিট দেখার সুযোগ করে দেয়। কিন্তু বিমান চলাকালীন অবস্থায় কেউ ককপিট দেখার সুযোগ পায় না। বাচ্চাদের বেশি আগ্রহ থাকে ককপিট দেখার, সেক্ষেত্রে অভিভাবক শান্তভাবে বিমানবালাকে ককপিট দেখানোর কথা বলতে পারবে এবং বিমান অবতরণের পর বিমানবালা যাত্রীকে ককপিট দেখার সুযোগ করে দেয়।