সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমানে প্রত্যেকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কেউ শুধুমাত্র ছবি এবং বিভিন্ন অনুভূতি শেয়ারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন। আবার কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন উপকারী কাজে ব্যবহার করেন। তেমনি আপনিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আপনার ক্যারিয়ারের উন্নতিতে ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে জেনে নিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ১৩টি কাজের দ্বারা উন্নতি হবে আপনার ক্যারিয়ারের।
আপনার কাজের সাথে সম্পৃক্ত লেখকদের অনুসরণ করুন
আপনি যে শিল্পে বা যে কর্মক্ষেত্রে রয়েছেন, সেই কর্মক্ষেত্রটির সর্বশেষ খবরগুলো যদি খুব সহজে পেতে চান তাহলে যারা এই বিষয়ে লেখালেখি করে তাদের ফলো বা অনুসরণ করুণ এবং তাদের পেজে লাইক দিন। এরপর আপনি আপনার নিউজফিডে তাদের বিভিন্ন আর্টিকেল, ভিডিও এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের আলোচনা জানতে পারবেন।
তাদের বিভিন্ন আর্টিকেল বা আলোচনা থেকে যে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন, সেটা দিয়ে আপনি আপনার বস, আপনার সহকর্মী কিংবা কোন ইন্টারভিউতে আপনাকে যারা প্রশ্ন করবে তাদের অভিভূত করতে পারবেন।
আপনার কাজের সাথে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অনুসরণ করুন
আপনি যে কাজের সাথে জড়িত রয়েছেন বা যে কর্মক্ষেত্রটিতে রয়েছেন, সেই কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে যদি প্রতিদিন কিছু উপদেশ এবং পথনির্দেশ পেতে চান, তাহলে আপনার কর্মক্ষেত্রের সাথে জড়িত সফল বা প্রভাবশালী মানুষদের অনুসরণ করুন। তাদের অনুসরণ করলে যেমন আপনার কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন, সেই সাথে একটি নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হতে পারবেন।
কর্মক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিদের অনুসরণ করার পর তাদের বিভিন্ন উপদেশ শেয়ার করুন
যখন আপনি কারো কোন বিষয় লাইক, শেয়ার বা কমেন্ট করেন তখন অন্যরা সেটি লক্ষ্য করে। এর ফলে আপনি আপনার নিজস্ব ১টি ব্র্যান্ড গড়ে তুলতে পারেন এবং নিজেকে ১জন চিন্তাবিদ হিসেবে প্রকাশ করতে পারেন।
যে পোস্টগুলো আপনাকে অনুপ্রাণিত করে অথবা আপনার চিন্তা-ভাবনাগুলোকে প্রকাশ করে সেগুলো শেয়ার করুন, কমেন্ট করুন অথবা অন্য যারা পোস্টগুলো পছন্দ করবে তাদের ট্যাগ করুন।
প্রোফাইলে প্রফেশনাল ছবি যুক্ত করুন
আপনার লিঙ্কডিন প্রোফাইল পিকচার জুম করার পর যদি ঝাপসা হয়ে যায়, সেটা পরিবর্তন করুন। লিঙ্কডিন প্রোফাইলে সাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ডের সামনে ক্লিয়ার ছবি দিন।
আপনার ফেসবুক এবং টুইটার অ্যাকাউন্টেও আপনার সুন্দর ১টি ছবি দিন যেটা আপনার অনেক বেশি প্রাণবন্ত হিসেবে প্রকাশ করে।
ব্যক্তিগত বায়োগ্রাফি লিখুন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত বায়ো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অল্প কিছু শব্দ কিন্তু এটি আপনাকে উপস্থাপন করবে বৃহৎভাবে, তাই ব্যক্তিগত বায়ো সুন্দরভাবে লিখতে হবে।
তবে লিঙ্কডইন এবং টুইটারের বায়োর জন্য অনেকগুলো টেমপ্লেটস রয়েছে সেজন্য আপনাকে কয়েক ঘন্টা কষ্ট করে অত্যন্ত সুনিপুণভাবে আপনার বায়ো লিখতে হবে না।
অন্যদের পোস্টে লাইক দিন
ধরুন, আপনার কোন সহকর্মী কোনো আর্টিকেল লিখেছেন। আপনার উচিত তার আর্টিকেলে লাইক দেওয়া এবং তার আর্টিকেলটি শেয়ার করা।
এসবের মাধ্যমে আপনার চারপাশের সবার সাথে সম্পর্ক ভালো থাকে। আপনার ছোট্ট এই কাজের মাধ্যমে অন্য খুশি হবেন এবং আপনার প্রতি তারা সব সময় সদয় হবেন।
আপনার পোস্টে অন্যদের লাইক দিতে বলুন
ধরুন, আপনি কোনো প্রজেক্ট শেষ করেছেন এবং এখন চাচ্ছেন আপনার প্রজেক্টটি অনেক মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে। আপনার পোস্ট ছড়িয়ে দিতে হলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাহায্য প্রয়োজন। আপনার প্রজেক্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন এবং আপনার বন্ধুদের যদি পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে তাদের লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করতে বলুন। এটার মাধ্যমে কখনো মনে করবেন না আপনি লাইকের জন্য হাত পাতছেন কারণ আপনি অন্যদের পোস্টে নিয়মিত লাইক কমেন্ট করেন, তাই আপনি এটি চাইতেই পারেন।
বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত হন
ফেসবুক এবং লিঙ্কডইনে আপনার কাজের সাথে সম্পৃক্ত হাজার হাজার গ্রুপ পাবেন। আপনি এসব গ্রুপের বিভিন্ন আলোচনায় যুক্ত হতে পারেন, আপনার কাজের বিষয়ে যেকোনো উপদেশ চাইতে পারেন অথবা এসব গ্রুপকে চাকরি পাওয়ার নেটওয়ার্ক হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার বাইরের নেটওয়ার্কের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করুন
অনেকের সাথে আপনি ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন কিংবা ইন্সটাগ্রামের সাথে যুক্ত নন। আপনার স্কুল জীবনের সাবেক বন্ধু, সাবেক সহকর্মী কিংবা আপনার পরিচিত মানুষদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের যোগাযোগ থাকলে তারা আপনাকে অনেক ভালো ভাবে জানতে পারবেন এবং দেখা যেতে পারে আপনাকে কোনো সময় তারা ভালো কোনো চাকরির প্রস্তাব বা আরো ভালো কোনো কিছু অফার করতে পারেন।
চুপিসারে তথ্য অনুসন্ধান করুন
ধরুন, কয়েক মাস পর আপনি কোনো কোম্পানিতে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে যাবেন। আপনি যদি সেই কোম্পানির ইন্সটাগ্রাম পেজটি অনুসরণ করেন তাহলে সেই কোম্পানির অনেক বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাবেন ফলে আপনি ইন্টারভিউ বোর্ডে ভালো কিছু করতে পারবেন।
আবার আপনার কর্মক্ষেত্রের সাথে সম্পৃক্ত সফল কোন ব্যক্তির টুইটার বা ফেসবুকে তাদের প্রোফাইলে ঢু মারুন, তারা কিভাবে অফিসের বিভিন্ন বিষয় সামাল দেন সেটা বোঝার চেষ্টা করুন।
আপনার প্রোফাইল নিয়মিত এডিট করুন
আপনি আপনার ফেসবুক বা লিঙ্কডিনে কয়েক মাস আগে বায়ো লিখেছেন এবং কয়েক মাসের মধ্যে এডিট করেননি। কিন্তু আপনি আপনার বায়ো বার বার এডিট করে আরো বেশি সুন্দর করতে পারেন, আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন। আবার আপনার প্রোফাইলের তথ্যগুলো নিয়মিত আপডেট করে আপনি বর্তমানে কি করছেন সেটি অন্যদের জানাতে পারেন।
নিজের সম্পর্কে গুগল করুন
এই কাজটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাইরে হলেও এটার সাথেই সম্পর্কযুক্ত। আপনি গুগলে নিজের নাম লিখে সার্চ করুন, তারপর দেখুন সার্চ রেজাল্টে কি আসে। আপনার পূর্বের কোনো প্রোফাইল আসে কিনা কিংবা আপনি গুগলে নিজেকে কিভাবে খুঁজে পাচ্ছেন সেটি লক্ষ্য করুন এবং নিজেকে আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করুন।
Featured Image: makeawebsitehub.com