আমরা অনেক সময়ই কাজের অগ্রগতি নিয়ে হতাশায় ভুগি। হতাশার জন্য ভবিষ্যতেও কাজগুলো সুন্দরভাবে করা সম্ভব হয় না। কিন্তু মাত্র এক দিনে আপনি কাজের উন্নতি করতে পারবেন। তার জন্য প্রয়োজন তীব্র ইচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা। কিছু অভ্যাস এবং কাজ আছে যেগুলো করলে মাত্র এক দিনেই আপনি কাজের উন্নতি করতে পারবেন। মাত্র এক দিনেই আপনার কাজে উন্নতি করার ২৩টি পরামর্শ নিয়ে এলাম আপনাদের জন্য।
কাগজপত্র বাছাই করে সাজিয়ে রাখুন
সব কিছু গুছিয়ে রাখুন এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিস ছাটাই করুন। এতে আপনি সহজেই গুরুত্বপূর্ণ কাগজ খুঁজে পাবেন।
২ এর নীতি
২ নীতির মাধ্যমে আরো বেশি দক্ষ সময়ানুবর্তী হয়ে উঠুন। দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২টি কাজের উপর গুরুত্ব দিন আর হয়ে উঠুন আরো বেশি কার্যক্ষম। এই ছোট কার্যনীতি আপনাকে কার্যক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
সারাদিন নিয়ে ভাবুন
দিনের কাজ শুরু করার আগে ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড সারাদিন কি করবেন তা নিয়ে একবার ভাবুন।
শুরুটা হোক দ্রুত
কাজের শুরুতে ১৫ মিনিট বিরতি রাখুন। কফি পান করুন, ই-মেইল দেখুন, মেসেজ চেক করুন, পত্রিকা পড়ুন। তবে ১৫ মিনিটের বেশি বিরতি নয়। এতে দিনের শুরুতেই আপনি থাকবেন সতেজ এবং বেশি কার্যক্ষম।
প্রয়োজনীয় জিনিস পাশেই রাখুন
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হাতের কাছে রাখুন এতে কাজ দ্রুত হবে। অনেক সময়ই আমরা প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে খুঁজে সময় নষ্ট করি। যদি আশেপাশেই সাজিয়ে রাখেন তাহলে সময়টুকু কাজে লাগাতে পারবেন।
ক্লান্তি দূর করুন
কাজের পর ক্লান্ত লাগাই স্বাভাবিক। সারাদিনের কাজ গুলো গুছিয়ে নিন। বিশ্রাম নিয়ে রুটিন মেনে কাজ করুন ।এভাবে আপনি সারাদিনের কাজ গুছিয়ে নিতে পারবেন।
ভবিষ্যতে কী কী করবেন তার দুইটি তালিকা করে রাখুন (to-do lists)
প্রথম তালিকা তৈরি করুন যা খুব শীঘ্রই করতে হবে। সময়ের প্রয়োজনীয়তা হিসেবে ধারাবাহিকভাবে সাজান। দ্বিতীয় তালিকায় আজ করতেই হবে সেসব কাজ রাখুন। তারপর তালিকা অনুযায়ী কাজ করে করে কেটে দিন। দেখবেন অনেক গোছানোভাবে কাজ করতে পারবেন।
স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করুন
মাসিক ক্যলেন্ডারে অল্প সময়ের আর ৬ মাসের ক্যলেন্ডারে বেশি সময়ের সিডিউল রাখুন। পেন্সিল দিয়ে মারক করে রাখুন ক্লাস, নিয়মিত ব্যায়ামের সেশন, সামাজিক কাজ এবং পারিবারিক কাজগুলো।
কাজগুলো ভাগ করুন
দৈনিক কাজগুলো ভাগ করুন। যে কাজগুলোতে আপনার মনোযোগ একান্ত প্রয়োজন (ভালো হয় যদি নিজে কাজগুলো করুন) যেগুলো বন্টন করা প্রয়োজন এবং যেগুলো পরেও করা যাবে। দীর্ঘসূত্রিতা এড়ানোর জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজটি আগে করুন, কাজগুলো ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন ।
পড়ার জন্য সময় রাখুন
সব চাকরিতেই অন্তত কিছুটা হলেও পড়াশোনা করতে হয়। আপনার কাজ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে দিনের কিছুটা সময় পড়ুন।
রাতেই ঠিক করুন পরের দিন কী করবেন
ঘুমানোর আগে পরের দিন কী করবেন তা ৫ মিনিট ভাবুন। এটি আপনাকে পরের দিনের কাজের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করবে।
রেগে যাবেন না
টেবিলে একটি বল রাখতে পারেন। রেগে গেলে আপনি তা মোচড়াতে পারেন, বাতাসে ছুঁড়তে পারেন, কিছুক্ষণ তা নিয়ে খেলতে পারেন। এতে আপনার অবসাদ দূর হবে, ভালো বোধ করবেন। মনে রাখবেন, “রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।”
একবারে একটি কাজই করুন
মন দিয়ে একটি কাজ করুন। একসাথে অনেকগুলো কাজ করতে গেলে আপনি বিহ্বল হয়ে পড়বেন। যদি আপনি নতুন চাকরির সন্ধানে থাকেন, তবে বারবার করা ভুল আপনাকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিতে পারে ।
ধৈর্যশীল হোন
কোনো কাজেই একবারে সফলতা আসে না। এর জন্য প্রয়োজন সময় এবং নিষ্ঠা। সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে।
আপনার জানা বিষয়গুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করুন
নতুনদের পাশাপাশি উচ্চ পর্যায়ের কার্যনির্বাহীদের সাথে আপনার জ্ঞান শেয়ার করুন। তারা আপনাকে আপনার যোগ্যতা এবং সময়ের চাহিদা অনুসারে স্মরণ করবে।
মানসিক চাপগুলো লিপিবদ্ধ করুন
ছোট একটি নোটবুক সব সময় সাথেই রাখুন। যখনই আপনি মানসিক অবসাদে থাকবেন তা লিখে ফেলুন। এটি হবে আপনার “ভাবনাসমগ্র ” ।
চিন্তা
দিন শেষে আধা ঘন্টা রাখুন চিন্তার জন্য। মনোবিজ্ঞানী রোনাল্ড নাথান বিশ্বাস করেন, চিন্তা করার জন্য সময় আলাদা করে রাখলে তা আপনার সারাদিনের অনেক বাজে চিন্তাই দূর করে দেয়।
সারাদিনের কাজের ফাঁকে বিরতি নিন
এটা আপনার মনকে করবে পরিষ্কার এবং অবসাদ দূর করবে। কিছুক্ষণের জন্য হাঁটুন, পানীয় গ্রহণ করুন।
রুটিন মেনে চলুন
যদি আপনি দেরি করে ফেলেন তবে কাগজ নিয়ে আপনার সময়গুলো কিভাবে বরাদ্দ করবেন তা লিখে ফেলুন। রুটিন মেনে চললে আপনি সহজেই সময়ানুবর্তী হতে পারবেন, পাশাপাশি আপনি সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে পারবেন।
সব কাজেরই নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হবে
যে কাজগুলোর নির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে সেগুলোর জন্য সময় বের করুন। আর যে কাজগুলোর নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য নেই তা আপাতত রেখে দিন। লক্ষ্য ছাড়া কোনো কাজই সফল হয় না।
চ্যালেঞ্জগুলো নোট করুন
কিছু সময় নিয়ে আপনার মানসিক চ্যলেঞ্জ গুলো ভেবে নিন। এটা আপনার সারাদিনের করণীয় তালিকার মতই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন বিরক্তকর মিটিং, ক্রেতা কিংবা আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী যেসব চ্যালেঞ্জের সামনে পরেন সেসব আগেই লিপিবদ্ধ করে রাখুন।
সময় নষ্ট না করে কাজে ব্যয় করুন
প্রতিদিনের সময় নষ্ট করা কমান, হতাশা কমান। যেখানেই যান না কেন পড়ার কিছু অথবা বহনযোগ্য গান শোনার যন্ত্র সাথে রাখুন। ফলে আপনার অপেক্ষার সময়গুলোর ভালো ব্যবহার হবে।
আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তী পর্বে বাকি পরামর্শগুলো নিয়ে ফিরে আসবো আপনাদের মাঝে।