যে ৫টি কারণে জানুয়ারিতে স্নাতকোত্তর কার্যক্রম শুরু করা উচিত

পৃথিবীর অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে, ছাত্রছাত্রীদের সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসে ভর্তি করা হয়। বছরের শেষের দিকে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু করে, অনেক ছাত্রছাত্রীই ঠিক মতো সময়ের সদ্ব্যবহার করতে সক্ষম হয় না। ফলে বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় জানুয়ারি মাসে, তাদের কার্যক্রম চালু করা শুরু করেছে। এমনকি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে জানুয়ারি মাসে ভর্তি হলে, বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। নতুন বছরের শুরুতে প্রায় প্রত্যেকেই বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে।

Source: eurogates.ni

আর নতুন বছরের শুরু থেকেই, পরিকল্পনা মাফিক কাজ করা শুরু করলে খুব সহজে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। কিন্তু বছরের মাঝামাঝি কিংবা শেষের দিকে শুরু করে, তা শেষ করা অনেক সময়ই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে এবং পড়ায় মনোযোগ দেওয়াও সম্ভব হয় না। তাই জানুয়ারি মাসে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু করা উচিত, এতে শিক্ষার্থীদের সফলতা অর্জন করা সহজ হয়ে যায়। মূলত যে পাঁচটি কারণে স্নাতকোত্তর স্তরের কার্যক্রম জানুয়ারি মাসে শুরু করা দরকার, সে কারণগুলো জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন। কারণ আমি এ আর্টিকেলটিতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম, কেনো জানুয়ারি মাসে শুরু করা উচিত, সে সম্পর্কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

১. আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের জন্য উপযুক্ত

আপনি যদি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন, আর সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ভিসা খোঁজ করেন। তাহলে অনেকেটাই নিশ্চিত করে বলা যায় যে, আপনাকে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হবে।

Source: timeshighereducation.com

বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বছরের শুরুতে ভিসা পাওয়া যতটা সহজ, বছরের মাঝামাঝি কিংবা শেষের দিকে ঠিক ততটাই কঠিন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যদি স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম জানুয়ারি মাসে শুরু করা সম্ভব হয়, তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য, এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা অনেক সহজ হয়ে যায়। তাই বলা যায়, আন্তর্জাতিক সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম, শুরু করার উপযুক্ত একটি সময় হলো জানুয়ারি মাস।

২. চাকরি খোঁজার সুযোগ বৃদ্ধি

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই বছরের শুরুতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। তাই আপনার স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ালেখা যদি জানুয়ারি মাসে শেষ হয়, তবে চাকরি পাওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। আর জানুয়ারি মাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করতে হলে, অবশ্যই জানুয়ারি মাসেই কার্যক্রম শুরু করতে হবে, সেপ্টেম্বর বা বছরের মাঝামাঝি সময়ে কার্যক্রম শুরু করে, তা জানুয়ারি মাসে শেষ করা সম্ভব না। কেননা অধিকাংশ স্নাতকোত্তর স্তরের কার্যক্রম ১ বছর মেয়াদী হয়ে থাকে।

Source: wikipedia.org

এছাড়াও যেহেতু অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু হয়। তাই বছরের এই মাঝামাঝি সময়ে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই চাকরি খোঁজার প্রতিযোগীতায় নেমে পড়ে। এজন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যদি জানুয়ারি মাসে তাদের স্নাতকোত্তর পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করে, তবে ছাত্রছাত্রীরা জানুয়ারি মাসেই তাদের পড়ালেখা শেষ করতে সক্ষম হবে এবং তারা বছরের শুরুতেই চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবে। এতে তাদের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।

৩. শিক্ষা বৃত্তি ও তহবিল সংগ্রহ সহজ

সেপ্টেম্বর মাসে যেহেতু অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু হয়। ফলে বছরের এই মাঝামাঝি কিংবা শেষের দিকে অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীই, তাদের শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি ও ঋণের জন্য আবেদন করে থাকে। এজন্য এই সময় শিক্ষা ব্যয়ের পর্যাপ্ত তহবিল সংগ্রহ করা বেশ কঠিন হয়ে যায়।

Source: entrepreneur.com

কিন্তু আপনি যদি জানুয়ারি মাসে তহবিল সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করেন, তবে আপনার প্রতিযোগীর সংখ্যা কম থাকবে এবং খুব সহজেই শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করতে সক্ষম হবেন। তাই জানুয়ারি মাসে স্নাতকোত্তর স্তরের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হলে, ছাত্র-ছাত্রীদের তহবিল সংগ্রহ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

৪. পেশাদার ছাত্রছাত্রীদের জন্য উপকারী

যেসব ছাত্রছাত্রীরা কর্মজীবন শুরু করেছে, তারা সাধারণত বছরের শুরু থেকেই পরিকল্পনা মাফিক, তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এসব পেশাদার মানুষদের জন্য বছরের মাঝামাঝি সময়ে, কোনো কোর্স করা বেশ কঠিন হয়ে যায়। এরা ঠিকমতো তাদের কার্যক্রমে মনোনিবেশ করতে সক্ষম হয় না। তাদের কাজের সময়সূচি ও শিক্ষার কার্যক্রমের মধ্যে এক ধরনের সাংঘর্ষিক অবস্থা বিরাজ করে।

Source: masterstudies.com

এতে কেউ কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই পেশাদার ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম জানুয়ারি মাসেই শুরু করা উত্তম। মনে রাখা উচিত, স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই কর্মজীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং কর্মজীবনে থেকেই স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কোর্স সম্পন্ন করে থাকে।

৫. নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ

প্রায় সব মানুষই নতুন বছরকে ঘিরে নানা ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে থাকে। সাধারণত সকল পরিকল্পনারই কার্যক্রম শুরু হয় নতুন বছরের শুরু থেকে। বছরের শুরুতে কোনো কাজ করা শুরু করলে, তা শেষ করাও অনেক সহজ হয়ে যায়। নতুন বছরের শুরুতে আমরা মানসিকভাবেও অনেক প্রশান্তিতে থাকি। কিন্তু বছরের শেষের দিকে কাজের চাপে ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দুশ্চিন্তায় মানসিকভাবে আমরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। তাই বছরের শেষের দিকে বা মাঝামাঝি সময়ে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করে, তা ফলপ্রসূ করা অনেকাংশেই কঠিন হয়ে যায়। এজন্য স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম যদি বছরের শুরুতে তথা জানুয়ারি মাসেই শুরু করা সম্ভব হয়।

Source: bcu.ac.uk

তবে শিক্ষার্থীরা নতুন বছরে নতুন পরিকল্পনায় তাদের কার্যক্রমকে সঠিক ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হবে। এতে তারা নতুন ধরণের উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণাও অনুভব করবে, যা তাদের মানসিক প্রশান্তি প্রদান করবে। ফলে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে কোর্স শেষ করা সম্ভব হবে।

জানুয়ারি মাসে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম কেনো শুরু করা উচিত; এ সম্পর্কে বিশ্লেষণ করলে এই ৫টি কারণ ছাড়াও আরো নানাবিধ কারণ ও উপকারিতা বেরিয়ে আসবে। ফলে নানা দিক বিবেচনাপূর্বক বলা যায় যে, জানুয়ারি মাসেই স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু করা উচিত।


Fearured Image:studying-in-germany.org

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *