Falling Walls Lab. কথাটা শুনে মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, এরকম নাম কেন? সেটা একটু পরেই বলছি। তবে, কাজটা আগে বলে ফেলি। এটা এমন একটা আন্তর্জাতিক ল্যাব যেটা তরুণ বিজ্ঞানমনস্কদের উদ্বুদ্ধ করে সায়েন্স নিয়ে কাজ করতে। Falling Walls Lab এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যেখানে একসাথে যেকোনো ব্যাকগ্রাউন্ডের স্টুডেন্ট, ফ্যাকাল্টি, উদ্যোক্তা কিংবা প্রফেশনালগণ তাদের রিসার্চ ওয়ার্ক, বিজনেস মডেল, কিংবা আইডিয়া উপস্থাপন করতে পারেন বিশ্বনন্দিত জুরিবোর্ডের সামনে।
“Falling Walls” নাম কেন? এটার পেছনে একটা ইতিহাস আছে। ইতিহাসটা জার্মানির বার্লিন ওয়াল নিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে যাবার পর জার্মানি দুভাগ হয়ে গেল, পূর্ব জার্মানি আর পশ্চিম জার্মানি। পরিকল্পনা ছিল যে, একটা সময় আবার এই দুই জার্মানি এক করে ফেলা হবে। কিন্তু সেটা হতে হতে বহু দশক পেরিয়ে যায়। সোভিয়েত মদদপুষ্ট পূর্ব জার্মানি হয়ে গেল সমাজতান্ত্রিক, কিন্তু পশ্চিম জার্মানি ছিল গণতান্ত্রিক। একটা পর্যায়ে, পূর্ব জার্মানির মানুষ বুঝতে পারল, তারা সমাজতন্ত্র চায় না, চায় গণতন্ত্র। তাই তারা পশ্চিম জার্মানি পালিয়ে যেতে থাকল। ২ মিলিয়ন লোক পালিয়ে যাবার পর পূর্ব জার্মানির নেতারা বার্লিনে ১২ ফিট উঁচু ওয়াল নির্মাণ করল যেন আর কেউ পালাতে না পারে। সেটা ছিল ১৯৬১ সাল। ২৮ বছর ধরে এ দেয়ালটা টিকে ছিল। প্রায় ৫০০০ মানুষ তাও দেয়াল টপকে পালিয়ে যায়। কিন্তু প্রায় ২০০ মানুষ পালাতে গিয়ে গুলি খেয়ে মারা যায়। গণতন্ত্রের পথে আক্ষরিক একটা বাধা ছিল এই বার্লিন ওয়াল।অবশেষে ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর ঘোষণা করা হয় এই ওয়াল ভেঙে ফেলার। পরের বছর ঘটে এই “Falling Walls” ঘটনা। এর স্মরণে এ বছর ৮-৯ নভেম্বর হতে যাচ্ছে ফলিং ওয়ালস কনফারেন্স, যেটা প্রথম শুরু হয় ২০০৯ সালে আইন্সটাইন ফাউন্ডেশনের হাত ধরে।
Falling Walls Conference এরই একটি উদ্যোগ হলো Falling Walls Lab. যেখানে সারা বিশ্ব থেকে বাছাইকৃত ১০০জন তরুণ উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা তাদের আইডিয়া তুলে ধরেন। এ বছর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে তারা ৩ জনকে এখানে যোগদান করতে আহবান করেছেন। জনপ্রিয় বিজ্ঞানভিত্তিক পত্রিকা জিরো টু ইনফিনিটির নাম সবাই শুনে থাকবে। তাদের সহায়তায় বুয়েট EDC দায়িত্ব পেয়েছে এই ভাগ্যবান তিনজনকে নির্বাচন করার। সহযোগিতায় আরো থাকছে Youth Carnival, Bangladesh Science Society, Future Startup.
বাংলাদেশে ৫টি ক্যাম্পাসে চলবে এ activation program. যার শুরুটা হচ্ছে বুয়েটে।কে হবেন এ ভাগ্যবান তিনজন? তাদেরকে সুযোগ করে দেয়া হবে ৪ দিনের বার্লিন ট্যুরের, তারা অংশ নিতে পারবেন ফলিং ওয়ালস কনফারেন্সে যেখানে সাধারণ এন্ট্রি ফি-ই ২০০০ ডলার, কিন্তু তাদের জন্য হবে ফ্রী! শুনতে পারবেন পৃথিবীবিখ্যাত নোবেল লরেট আর বিজ্ঞানীদের কথা। আপনার দরকার শুধু একটা আইডিয়া, কোন প্রোটোটাইপ যে আপাতত বানাতে হবে তা না। কেবল তিন মিনিটের একটা প্রেজেন্টেশনে আপনাকে দিতে হবে আইডিয়াটা। যদি সেটা হয় জোরালো, তাহলে আপনিও হতে পারেন সেই তিনজনের একজন।বিস্তারিত নিয়মকানুন আর ফলিং ওয়ালস সম্পর্কে আরও তথ্য সব এই ১০ মে তারিখের ইভেন্টেই বলা হবে! দেখা হবে সেদিন!বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার পথে থাকে অনেক দেয়াল। আপনার ছোটখাটো আইডিয়া থেকেই জন্ম নিতে পারে এরকম দেয়াল ভাংগার হাতিয়ার।এরপর কোন দেয়ালটা ভাংবে?
Dear What is Youth Carnival ?
কথাটা শুনে মনে আসলে প্রশ্ন করার মত ?