ছোটবেলা থেকে আমাদের শেখানো হয় বেশি পড়ালেখা করে যে সে সাফল্য এবং জীবনে সিদ্ধি লাভের পথ খুব দ্রুত পেয়ে যায়।কথাটি কিন্তু অসত্য নয়। দেখা গেছে যারা সফল মানুষ তাদের সবার একই রকমের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো আছে:
মনোযোগ বৃদ্ধি–
একজন সফল মানুষ একটি সম্প্রসারিত সময়ের জন্য একই কাজের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে পারেন। অ্যাটলাস শ্রাগড যারা পড়েছেন তারা যানেন অনেকক্ষণ সময় যাবত একই জিনিসের উপর দৃষ্টি নিবন্ধন কতটা কঠিন প্রক্রিয়া। অনেক পাঠকই বই পড়ার সময় কিছুটা বিরতি নিয়ে নেন। কিন্তু সবচেয়ে লোভী পাঠক কেবল একটি দিনে দীর্ঘ সময়ের জন্য একটি বই পড়ে শেষ না করা পর্যন্ত বিরতি নেন না। বরং তারা বইটি শেষ না করা পর্যন্ত বইটি রাখতে চান না। তেমনি একজন সফল মানুষ কখনো তার টাস্ক ছেড়ে মাঝ পথে বিরতি নেন না, তারা লেগে থাকেন। তাই যারা বেশি বই পড়ে তাদের একটি কাজ করার প্রতি তাকে তীব্র মনোযোগ।
লক্ষ্য নির্ধারণ–
মনোযোগের সাথে একজন ভাল পাঠক তাদের বই পড়ার ক্ষেত্রে একটি লক্ষ্যও নির্ধারিত করে। তারা অন্য কোনো কাজ করার আগে একটি নির্দিষ্ট বই এর কয়েকটি পাতা নির্বাচন করে রাখে আর সেই অনুযায়ী কাজ সম্পাদন করে। সফল মানুষ তাদের জীবনের প্রায় প্রতিটি মুহূর্ত জন্য লক্ষ্য ঠিক করে রাখে। এবং তারা সেই লক্ষ্য অতিক্রম না করা পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যান।
বিজ্ঞতার সাথে সময় ব্যয়–
হয়তো তাদের হাতে আছে মাত্র ২০ মিনিট সময় কোথাও পৌঁছাবার আগে। সেই ক্ষুদ্র পরিসর সময়ে মাত্র ২০ মিনিট সময়কেও তারা পড়ে অতিক্রম করার সিদ্ধান্ত নেয়। সফল মানুষ সবসময় সময়কে মূল্য দেয় বেশি। তারা নতুন কিছু শিখতে কিংবা একটি উদ্দেশ্য সাধন করতে ক্ষুদ্র সময়কেও প্রাধান্য দেয়।
ভিন্ন দৃষ্টিকোণ সম্পন্ন হয়–
সফল মানুষ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একটি সমস্যাকে দেখে কারণ তারা সাহিত্যের বিভিন্ন কোণ পড়ে অবস্থ থাকে। বই পড়ার সময় একজন পাঠক নিঃসন্দেহে মিশে যায় গল্পের চরিত্রের সঙ্গে এবং সে অনুযায়ী তার দৃষ্টিকোণ স্থাপিত হয়। ক্ষুধিত সেই সময়ে তার দৃষ্টিকোণ সম্পন্ন বদলে যায়। সে পাঠক সেই অভিজ্ঞতা তার জীবনের মাঝে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করে যার কারণে তার মাঝে প্রকাশ পায় ভিন্ন একজন মানুষের।
তাদের অবিশ্বাস্য লেখা এবং কথা বলার ক্ষমতা থাকে–
এটা বিস্ময়ের ব্যপার নয় যে মানব ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ বক্তা একজন ভাল পাঠকই হতে পেরেছেন। একজন সফল মানুষকে অনুপ্রেরণা যোগায় তার ভেতর আঁকা একজন অনুপ্রেরণাকারি। লিঙ্কন, নেলসন ম্যান্ডেলার মত মানুষরা তাদের অনুপ্রেরণা যোগায় ও তারা তাঁদের সম্পর্কে জানতে পারে অধ্যয়ন দ্বারা ও সেই পাঠকরা উত্সাহী হয়ে উঠে এবং সুভাষিত শিক্ষক হয়ে ওঠে অনুপ্রেরণাকারিরা তাদের জীবনে।
স্মৃতিশক্তি বেশি থাকে–
পাঠকের মস্তিষ্কের কার্যকরী শক্তি থাকে বেশি। তাদের স্মৃতিশক্তি তথ্য জমিয়ে রাখতে ভাল কাজ করে। তারা প্রায় সীমাহীন তথ্য ধরে রাখার ক্ষমতা থাকে।
তারা হয় উদ্যমী স্বভাবের–
সফল মানুষ সফল হয়েছেন কারণ তারা পৃথিবীতে শেখার জন্য বেশি সময় ব্যয় করেছেন । তারা যখনি একটি বই হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করে তখন তারা সে বই থেকে কেবল শিখার কাজই সম্পন্ন করে না বরং তার পাসাপাশি তারা সে বই থেকে আরও বেশি কিছু নিয়ে থাকে। বই পড়ে তাদের মন হয়ে উঠে ফুরফুরে ও সতেজ। জ্ঞান প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বৃদ্ধি পায় কল্পনা শক্তি।
ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকে–
মানব আচারণের পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে। তাই আপনি প্রাচীন গল্প, রোমানস্ এবং গ্রীক সাহিত্য পড়তে পারেন এবং আজকের ঘটনার সাথে তার সামঞ্জস্য বজায় রাখতে পারেন। রাজনীতি, অর্থনীতি, বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক হোক না কেন, কথাসাহিত্য আপনাকে সবার চেয়ে জীবনে এগিয়ে রাখে। মানুষের আমাদের অতীত অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যত সম্পর্কে ধারণা নেয়।
একজন ভাল পাঠক মানেই একজন সফল মানুষ। তাই জীবনে সফল হতে হলে বেশি করে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলেন।