ফুটবল বিশ্বচ্যাম্পিয়ান ব্রাজিলের বিশ্বকাপ সালতামামী

0

1st Part 


সুইডেন বিশ্বকাপ -১৯৫৮

Image result for brazil world cup 1958
৫৮ বিশ্বকাপ স্বপ্ন পূরণের বিশ্বকাপ। ট্র্যাজেডি বিশ্বকাপের ৮ বছর পরই সেই স্বপ্নের ট্রফি ব্রাজিলের ঘরে উঠে। শুরু হয় ব্রাজিলের রাজত্ব। ৫৮ বিশ্বকাপের পর থেকে পিঁছুনে তাকাতে হয়নি ব্রাজিলকে  চলছে তো চলছেই। সে বছর সব চেয়ে কম বয়সি প্লেয়ারটি স্কোয়াডে জায়গা পায়। ৮ বছর আগে যে বালকটি বলেছিলো ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ এনে দিবে সেই বালকটি এবারের বিশ্বকাপে খেলবে।

#গ্রুপ_পর্ব..

গ্রুপ পর্বে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ দল গুলোঃ

→সোভিয়েত ইউনিয়ন
→ইংল্যান্ড
→অস্ট্রেয়া

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। খেলার ৩৭ মিনিটে মাজোলার গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। প্রথম অর্ধ্ব শেষ হয় ১-০ তে। ২য় অর্ধ্বে নেমে খেলার ৫০ মিনিটে নিল্টন সান্তোসের গোলে ২-০ তে এগিয়ে যায় ব্রাজিল এবং খেলার ৮৫ মিনিটে আরেকটি গোল করে মাজোলা। মাজোলার জোড়া গোলের সুবাদে সেদিনের ম্যাচ ৩-০ তে জয় পায় গ্যারিঞ্চার ব্রাজিল।

গ্রুপ পর্বের ২য় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামে ভাভার ব্রাজিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোল শূণ্য ড্র নিয়ে মাঠ ত্যাগ করে ব্রাজিল।

গ্রুপ পর্বের ৩য় ম্যাচে দেখা গেলো দেখা গেলো ১৭ বছর বয়সি সেই বালকটি। কে সেই বালক?  বলেছিলাম পরের পর্ব গুলোতে আলোচনা করবো। সেই বালকটি ছিলো ফুটবল সম্রাট স্যার পেলে।

গ্রুপ পর্বের প্রথম ২ ম্যাচে মাঠে নামতে পারেনি পেলে  ইঞ্জুরি থাকার কারণে। ৩য় ম্যাচে সোভিয়েতের বিপক্ষে মাঠে নামে পেলে। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে একটি এসিষ্ট করেন পেলে। খেলার শুরুতেই অর্থাৎ খেলার ৩ মিনিট একটি গোল করেন ভাভা। প্রথম অর্ধ্ব শেষ হয় ১-০ তে। ২য় অর্ধ্বে নেমে খেলার ৭৭ মিনিটে পেলের এসিষ্টে আরেকটি গোল করেন ভাভা। ২-০ জয় নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে পেলের ব্রাজিল।

#কোয়ার্টার_ফাইনাল

কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েলসের  বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। শুরু হয় পেলের সাম্বার যাদু। খেলার ৬৬ মিনিটে গোল করেন পেলে।  পেলের ১ গোলের সুবাদে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ব্রাজিল।

#সেমিফাইনাল

সেমিফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। ১৭ বছরের পেলে কে চিনতে পেরেছিলো ফ্রান্সবাসী। খেলার ২ মিনিটেই গোল করেন ভাভা এবং খেলার ৩৭ মিনিটে একটি গোল করেন ডিডি। ফ্রান্সের হয়ে খেলার ৯ মিনিটে একটি গোল করেন ফন্টেইন।  ২-১ তে প্রথম অর্ধ্ব শেষ হয়। ২য় অর্ধ্বে শুরু হয় পেলের ক্যালমা খেলার ৫২, ৬৪,৭৫ মিনিটে ৩ টি গোল করেন ১৭ বছর বয়সি পেলে।

পেলে হেট্রিকে ৫-২ গোলে জয় নিয়ে ৮ বছর পর আবারো ব্রাজিল ফাইনালে।

#ফাইনাল

সেদিন দেশটির অলিতে গলিতে ভেসে আসছিল চাপা কান্নার শব্দ। মারাকানাজোয় যেন থমকে গিয়েছিল পুরো ব্রাজিল। তীব্র কষ্ট ছুঁয়ে গিয়েছিল ছেলেটির বাবা-মাকেও। ৯ বছরের কিশোর হয়ত সেই শোকের ব্যাপকতা ঠিক বুঝে উঠতে পারেনি। না বুঝলেও বাবার চোখের পানি মুছে দিয়েছিল পরম মতায়। পারবে কি ৮ বছর পর পুরো ব্রাজিলের চোখের জল মুছে দিতে? পারবে কি পাথর চাপা কষ্টটা দূর করতে? ব্রাজিলীয়ান ভক্তকুলের আত্মবিশ্বাস ছিলো হ্যাঁ এবার আমাদের ট্রফি আসবে। সবার ভরসার প্রতিক ছিলো পেলে।

২৯শে জুন ১৯৫৮ ফাইনাল ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। খেলার শুরুতেই  এগিয়ে যায় সুইডেন। খেলার ৪ মিনিটে একটি গোল করে সুইডিশ বয় লাইদহোম। লাইদহোমের গোলের ৫ মিনিট পরই ভাভার গোলে সমতায় ফিরে ব্রাজিল। খেলার ৪৩ মিনিটে আরেকটি গোল করে ভাভা। ভাভার জোড়া গোলে প্রথম অর্ধ্ব শেষ হয় ২-১ এ।  ২য় অর্ধ্বে শুরু হয় পেলের ক্যালমা। খেলার ৫৫ মিনিটে একটি গোল করে পেলে। পেলের এক গোলের সুবাদে ব্রাজিলের গোল স্কোর তখন ৩-১। খেলার ৬৮ মিনিটে জগালো করে একটি গোল। ৬৮ মিনিটে ৪-১ এগিয়ে যায় ব্রাজিল। তারপরও যেনো ভক্তদের শঙ্কার কাটেনি।

৮ বছর আগের মারাকানার সেই কান্না কি আবারো ফিরে আসছে সুইডেনের মাটিতে? মারাকানায় উরুগুয়ে, চার বছর আগে হাঙ্গেরি, এবার কি সুইডেনের সাথেও হবে একই পরিণতি?  খেলার ৮০ মিনিটে সুইডিশ বয় সিমনসন একটি গোল করে তখন সুইডেনের স্কোর ৪-২ চিন্তা বেড়ে গেলো ব্রাজিলীনদের।

শেষ ১০ মিনিটে আবার আরেকটি ট্রাজেডির সাক্ষী হয়ে থাকতে হবে না তো? বহু দর্শক শুরু করে দিলেন প্রার্থনা, ‘ওহ ঈশ্বর, রক্ষা করো!’ ঈশ্বর হয়ত মাঠে নেমে আসেননি। কিন্তু ব্রাজিলের জন্য ‘ঈশ্বরের দূত’ হয়ে আসা সেই ১৭ বছরের বালক থাকতে কি আর ট্রাজেডি হতে পারে? কিন্তু  শেষ বাঁশি না বাজা পর্যন্ত যে মনে কিছুতেই শান্তি আসছে না।

খেলার ৯০ মিনিটে বক্সের ভিতরে উড়ে আসা বলে লাফিয়ে উঠে হেড করলেন পেলে। পেলের এই গোলের পরপরই বাজল শেষ বাঁশি। ৫-২ এ জয় নিয়ে  প্রথম বারের মতো ইউরোপের মাটি থেকে বিশ্বকাপ ছিনিয়ে আনলো পেলে বাহিনী।জয়ের নায়ক পেলে অঝোরে কাঁদতে থাকেন। দলের সিনিয়র সদস্যরা এসে মাথায় হাত বুলিয়ে কান্না থামালেন।  কান্না থামলেও চোখ তখনও ভেজা। তার কি মনে পড়ছিল ৮ বছর আগে বাবার সেই কান্না, পড়শিদের সেই চাপা আর্তনাদ, গলির সেই শ্মশানের নীরবতা? হয়ত মারাকানার কষ্ট পুরোপুরি ভোলাতে পারেননি। কিন্তু পেলের চোখের পানিতেই যেন মুছে গেলো সেই গ্লানি। বুক থেকে বড় একটা পাথর নামল ব্রাজিলবাসীর।

 

#পর্ব_৭ম

★১৯৬২ বিশ্বকাপ চিলি

Image result for brazil world cup 1962
১৯৬২ বিশ্বকাপ। টানা ২য় বারের মতো বিশ্বকাপ ট্রফি নিজেদের করে নেয় সাম্বা বয়েজরা।

#গ্রুপ_পর্ব

ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ দল গুলো হলোঃ

→মেক্সিকো
→চেকোস্লোভাকিয়া
→স্পেন

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে  মাঠে নামে পেলে বাহিনী। প্রথম অর্ধ্বে কোনো দলেরই গোল হয়নি। ২য় অর্ধ্বে খেলতে নেমে খেলার ৫৬ মিনিটে জাগালোর গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। খেলার ৭৩ মিনিটে পেলে করেন একটি গোল।  ২-০ তে জয় নিয়ে মাঠ ত্যাগ করে ব্রাজিলীয়ানরা।গ্রুপ পর্বের ২য় ম্যাচে চেকোস্লোভাকিয়ায় বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। উক্ত ম্যাচটি গোল শূণ্য ড্র নিয়ে মাঠে ছাড়তে হয় দুদল কে। দুঃখের বিষয় ছিলো চেকোস্লোভাকিয়ার সাথে ইঞ্জুরি হয়ে বাকী ম্যাচ আর খেলা হয়নি পেলের। পেলের ক্যারিয়ারটাই গেছে ইঞ্জুরি দিয়ে। ৫৮ বিশ্বকাপে ইঞ্জুরির কারণে প্রথম দুই ম্যাচ খেলতে পারেনি। ৬২ বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচ খেলে বাকী গুলো খেলতে পারেনি। প্রতিপক্ষ দলের টার্গেট’ই ছিলো পেলেকে  যেভাবেই হোক তাকে ইঞ্জুরি করা।

গ্রুপ পর্বের ৩য় ম্যাচে পেলেহীন স্পেনের বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। খেলার ৩৫ মিনিটে এ্যাডের্লাডোর গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। প্রথম অর্ধ্ব ১-০ গোলে পিঁছিয়ে থেকে শেষ করে ব্রাজিল। ২য় অর্ধ্বে শুধু ব্রাজিলময়।  খেলার ৭২,৮৬ মিনিটে জোড়া গোল করেন আমারিলদো। ২-১ গোলে শেষ হয় সেদিনের ম্যাচ এবং কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ব্রাজিল।

#কোয়ার্টার_ফাইনাল

কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। খেলার ৩১ মিনিটে গ্যারিঞ্চার  গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।খেলার ৩৮ মিনিটে হিচেন্সের গোলে সমতায় ফিরে ইংল্যান্ড। প্রথম অর্ধ্বে ১-১ গোলে শেষ হয়। ২য় অর্ধ্বে খেলতে নেমে খেলার ৫৩ মিনিটে  ভাভার এক গোলের সুবাদে ২-১ এগিয়ে যায় ব্রাজিল এবং খেলার ৫৯ মিনিটে আরেকটি গোল করেন গ্যারিঞ্চা। ৩-১ গোলে জয় নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ভাভার ব্রাজিল।


#সেমিফাইনাল

সেমিফাইনালে চিলির বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। গ্যারিঞ্চা আর ভাভাময় সেমিফাইনাল। খেলার ৯ মিনিটে গ্যারিঞ্চার গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। খেলার ৩২ মিনিটে আরেকটি গোল করেন গ্যারিঞ্চা। ব্রাজিল ২-০ গোলে এগুতে থাকে খেলার ৪২ মিনিটে চিলির হয়ে একটি গোল কনে টুরো। প্রথম অর্ধ্ব ২-১ গোলে শেষ হয়।  ২য় অর্ধ্বে খেলতে নেমে খেলার ৪৭ মিনিটে একটি গোল করে ভাভা। তখন ব্রাজিলের স্কোর ৩-১। খেলার ৬১ মিনিটে প্যানেল্টি থেকে একটি গোল করে চিলিয়ান এল.সানচেজ। খেলার ৭৮ মিনিটে আরেকটি গোল করে ভাভা। গ্যারিঞ্চা ও ভাভা দুজেনর জোড়া গোলে ৪-২ গোলে চিলিকে পরাজিত করে টানা ২য় বারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করে ব্রাজিল।

#ফাইনাল

আরেকটি স্বপ্ন সফল হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। ব্রাজিল ফাইনালে গেলে অনেকটা উলট পালট হয়ে যায়। পারবে কি টানা ২বারের মতো বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তুলতে ব্রাজিল?

১৯৬২ সালের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত ফাইনালে চেকোস্লোভাকিয়ায় বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল।খেলার  ১৫ মিনিটের মাথায়ই পিঁছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। তবে বেশীক্ষণ পিঁছিয়ে থাকতে হয়নি খেলার ১৭ মিনিটেই আমারিলদোর গোলে সমতায় ফেরে ব্রাজিল। ১-১ গোলের সমতা নিয়েই প্রথম অর্ধ্ব শেষ হয়। ২য় অর্ধ্বের গল্পটা কেবলই ব্রাজিলের। ৬৯ মিনিটে জিতোর গোলে লিড নেয় সাম্বার দেশ। ৭৮ মিনিট ভাভার গোলে চেকোস্লোভাকিয়ার পরাজয়ের ষোলোকলা পূর্ণ হয়। টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিতে নেয় ফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিল।

 

#অষ্টম_পর্ব

★ ১৯৬৬ বিশ্বকাপ- ইংল্যান্ড

Image result for brazil world cup 1966
টানা দুবার শিরোপা নিয়ে পরের বিশ্বকাপে একেবারে বাজে পারফর্ম্যান্স করেছিলো ব্রাজিল।  ৮ম আসর অর্থাৎ ১৯৬৬ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিলো পেলে, গ্যারিঞ্চার ব্রাজিলকে।

গ্রুপ পর্বের প্রতিপক্ষ দল গুলো হলোঃ

পর্তুগাল
→হাঙ্গেরি
→বুলগেরিয়া

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে পেলেরা। খেলার ১৫ মিনিটে পেলের গোলে ১-০ তে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। প্রথম অর্ধ্ব শেষ হয় ১-০ তে। ২য় অর্ধ্বে খেলতে নেমে খেলার ৬৩ মিনিটে একটি গোল করেন গ্যারিঞ্চা।

 



গ্রুপ পর্বের ২য় ম্যাচে হাঙ্গেরির কাছে ৩-১ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল এবং ৩য় ম্যাচে পর্তুগালের বিপক্ষেও  ৩-১ গোলে হেরে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় ২ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা

 

#পর্ব_নবম

★মেক্সিকো বিশ্বকাপ ১৯৭০

 

Image result for brazil world cup 1970
৩য় বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল।  ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা দলটি শুরুতেই সাম্বা ম্যাজিক দেখিয়েছিলো। যে দলে পেলে,জাইরজিনহো,আলবার্তো,গার্সনদের মতো প্লেয়ার থাকে সেই দল চ্যাম্পিয়ন হব না তো কোন দল হবে? মেক্সিকো বিশ্বকাপ জিতে নিজেদের করে নিয়েছে জুলেরিমে ট্রফি ব্রাজিলীয়ানরা। মেক্সিকো বিশ্বকাপে পেলের খেলা একেবারে অনিশ্চিত’ই ছিলো তারপরও বিশ্বকাপের আগের বছর তাকে আবার দলে নেয়া হয় আর সেটা যে হবে পেলে ৩ বারের মতো চ্যাম্পিয়ন কারো জানা ছিলো না তবে সবচেয়ে ফেভারিট দল ছিলো ব্রাজিলেরটা।

গ্রুপ পর্বের প্রতিপক্ষ দল গুলো হলোঃ

→ইংল্যান্ড
→চেকোস্লোভাকিয়া
→রোমানিয়া

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে চেকোস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। খেলার ১১ মিনিটে পিট্রার্সের গোলে এগিয়ে যায় চেকোস্লোভাকিয়া। খেলার ২৪ মিনিটে রিভেলিনোর গোলে সমতায় ফিরে ব্রাজিল। প্রথম অর্ধ্ব ১-১ গোলে শেষ হয়। ২য় অর্ধ্বের ৫৯ মিনিটে পেলের গোলে ২-১ এ এগিয়ে যায় ব্রাজিল। খেলার ৬১,৮৩ মিনিটে জোড়া গোল করেন ব্রাজিলীয়ান বয় জাইরজিনহো। ৪-১ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ত্যাগ করে সাম্বা বয়েজরা।

গ্রুপ পর্বের ২য় ম্যাচে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। প্রথম অর্ধ্ব কোনো গোলের দেখা পায়নি দুদল। ২য়  অর্ধ্বের ৫৯ মিনিটে জাইরজিনহোর গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল এবং ১-০ তে জয় পায় ব্রাজিল।

গ্রুপ পর্বের ৩য় ম্যাচে রোমানিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। খেলার ১৯ মিনিটে পেলের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। খেলার ২২ মিনিটে জাইরজিনহো করেন একটি গোল।  খেলার ৩৪ মিনিটে একটি গোল করে রোমানিয়ার ডুমিট্রেচি। ২-১ এ শেষ হয় প্রথম অর্ধ্ব। ২য় অর্ধ্বে খেলার ৬৭ মিনিটে আরেকটি গোল করেন পেলে। পেলের জোড়া গোলে সেদিনের ম্যাচ ৩-২ গোলে জয় পায় ব্রাজিল এবং কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে।

#কোয়ার্টার_ফাইনাল

কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ দল পেরু। খেলার ১১ মিনিটে রিভেলিনহো একটি গোল করে। তার ৪ মিনিট পর অর্থাৎ খেলার ১৫ মিনিটে একটি গোল করে টোস্তাও।  খেলার ২৮ মিনিটে পেরুর হয়ে একটি গোল করে গার্লাডো। ২-১ এ প্রথম অর্ধ্ব শেষ হয়। ২য় অর্ধ্বে খেলার ৫২ মিনিটে আরেকটি গোল করেন টোস্তাও। খেলার ৭৫ মিনিটো জাইরজিনহোর গোলে ৪-২ জয় নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে পেলের ব্রাজিল।

#সেমিফাইনাল

সেমিফাইনালে উরুগুয়ের মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। খেলার ১৯ মিনিটেই গোল হজম করতে হয় ব্রাজিলকে। খেলার ৪৪ মিনিটে ক্লোদালদোর গোলে সমতায় ফিরে ব্রাজিল। প্রথম অর্ধ্ব ১-১ গোলে শেষ হয়। ২য় অর্ধ্ব কেবল ব্রাজিলেরই ছিলো। খেলার ৭৬ মিনিটে জাইরজিনহো এবং ৮৯ মিনিটে রিভেলিনহোর গোলে ৩-১ এ জয় পায় ব্রাজিল এবং ৪র্থ বারের মত ফাইনাল নিশ্চিত করে সাম্বা বাহিনী।

#ফাইনাল

ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। এবারের বিশ্বকাপ জিতলেই জুলেরিমে ট্রফি নিজেদের। তেমন আশা নিয়েই ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। খেলার শুরুতেই পেলের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।  খেলার ৩৭ মিনিটে সমতায় ফিরে ইতালি। প্রথম অর্ধ্ব ১-১ গোলে শেষ হয়। ২য় অর্ধ্বে শুরু হয় সাম্বা ম্যাজিক। খেলার ৬৬, ৭১,৮৬ মিনিটে একটি করে গোল করেন গার্সন,জাইরজিনহো,কার্লোস আলবার্তো ৪-১ গোলে জয়ী হয়ে ৩য় বারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল এবং জুলেরিমে ট্রফি নিজেদের করে নেয় ব্রাজিলীয়ানরা।

 

#পর্ব_দশম

★ ১৯৭৪ বিশ্বকাপ- ওয়েস্ট জার্মানি

Image result for brazil world cup 1974
ফুটবল বিশ্বকাপের দশম আসরে তেমন ভালো পারফর্ম্যান্স করতে পারেনি ব্রাজিল আগের বিশ্বকাপে যদিও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো।

গ্রুপ পর্বের প্রতিপক্ষ দল গুলো হলোঃ

→ ইয়োগোস্লাভিয়া
→স্কোটল্যান্ড
→জায়ারে

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ইয়োগোস্লাভিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। প্রথম ম্যাচে গোল শূণ্য ড্র নিয়ে মাঠ ত্যাগ করে দু’দল।

গ্রুপ পর্বের ২য় ম্যাচে স্কোটল্যান্ডের বিপক্ষেও গোল শূণ্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়।

গ্রুপ পর্বের ৩য় ম্যাচে জায়ারের বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। খেলার শুরুতেই অর্থাৎ খেলার ১২ মিনিটে জাইরজিনহোর গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। প্রথম অর্ধ্ব শেষ হয় ১-০ গোলে। ২য় অর্ধ্বে খেলতে নেমে  খেলার ৬৬ মিনিটে একটি গোল করেন রিভেলিনো। খেলার ৭৯ মিনিটে একটি গোল করে ভ্লাদিমিরো। সেদিনের ম্যাচ ৩-০ তে জয় পায় ব্রাজিল তবে সেদিনের খেলায় ঘটে যায় হাস্যকর এক ঘটনা।
ব্রাজিলের কিংবদন্তি রিভেলিনো আর জোইরজিনহো ফ্রি-কিক নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন ডি-বক্সের সামনে। বল জায়গামতো বসানো হয়েছে। তাদের সামনে প্রতিপক্ষ জায়ারের খেলোয়াড়রা দেওয়াল তুলে দাঁড়াচ্ছেন।

হঠাৎ কোনও পুর্বাভাস ছাড়াই দেয়াল ভেঙ্গে এক জায়ারিয়ান খেলোয়াড় বলে দুম করে শট মেরে দিলেন। আশেপাশে সবাই বিস্মিত চোখে ঘটনা দেখলেন। বিবিসি ধারাভাষ্যকার ঘটনাটিকে বর্ণনা করলেন, “ আফ্রিকান অজ্ঞতার এক বিদঘুটে মুহুর্ত”। কিন্তু আসলেই কি অজ্ঞতা ছিল? নাহ, সেটা ছিলো জায়ারিয়ান খেলোয়াড়দের জীবন-মরণ প্রশ্ন।
→ সূত্রঃ আমার খেলা

★২য় রাউন্ডে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ দল গুলো হলোঃ

→নেদারল্যান্ড
→আর্জেন্টিনা
→ইস্ট জার্মানি

প্রথম ম্যাচে ইস্ট জার্মানির বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। রিভেলিনোর গোলে ১-০ তে জয় পায় ব্রাজিল।

২য় ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামে রিভেলিনো বাহিনী।  খেলার ৩২ মিনিটে রিভেলিনের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। খেলার ৩৭ মিনিটে সমতায় ফিরে আর্জেন্টিনা। প্রথম অর্ধ্ব শেষ হয় ১-১ গোলে। ২য় অর্ধ্বের ৪৯ মিনিটে জাইরজিনহো একটি গোল করেন। উক্ত ম্যাচটি ২-১ গোলে ব্রাজিল জিতে যায়।

৩য় ম্যাচে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল।

৩য় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে ৪র্থ স্থান নিশ্চিত করে দেশে ফিরে ব্রাজিল।

 

#পর্ব -১১

বিতর্কিত বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনা-১৯৭৮

Image result for brazil world cup 1978



ফুটবল ইতিহাসে সবচয়ে বিতর্কিত ফুটবল বিশ্বকাপ হচ্ছে ১৯৭৮ আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ। প্রথম থেকেই ঝামেলা শুরু করেছিলো আর্জেন্টিনা।
ফাইনালে ম্যাচে হল্যান্ডের প্লেয়ারদেরকে  ৭০,০০০ সমর্থকের সামনে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল কেবল দুয়ো খাওয়ার জন্য। দুয়োর কারণে প্রথমে কিছুই দেখতে পারতেছিলোনা হল্যান্ডের প্লেয়াররা আর সেই ম্যাচটি হেরে যায় হল্যান্ড এবং প্রথম বারের মতো চুরি করে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা।

 



আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে ৩য় স্থানে থেকে বিদায় নিতে হয়েছিলো ব্রাজিলকে।

★গ্রুপ পর্বের প্রতিপক্ষ দল গুলো হলোঃ

→ অস্ট্রেয়া
→স্পেন
→সুইডেন

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল।  খেলার ৩৭ মিনিটে ১-০ তে এগিয়ে যায় সুইডেন। সুইডেনের গোল হওয়ার ৮ মিনিট পরই রেইনালদোর গোলে সমতায় ফিরে ব্রাজিল। ১-১ গোলে সেদিনের ম্যাচ শেষ হয়।

২য় ম্যাচে স্পেনের সাথে গোল শূণ্য ড্র নিয়ে মাঠ ত্যাগ করতে হয় ব্রাজিলীনদের।

৩য় ম্যাচে অস্ট্রিয়ার মুখোমুখি হয় জিকোর ব্রাজিল। একমাত্র রবার্তো ডিন্যামেইটের গোলে জয় পায় ব্রাজিল।

 

★২য় রাউন্ডে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ  দল গুলো হলোঃ

→আর্জেন্টিনা
→পোল্যান্ড
→পেরু

২য় রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে পেরুকে ৩-০ গোলে হারায় ব্রাজিল ।

২য় ম্যাচে আর্জেন্টিনারের সাথে  গোল শূণ্য ড্র নিয়ে মাঠ ত্যাগ করে সেলেসাওরা।

৩য় ম্যাচে পোল্যান্ড কে ৩-১ গোলে হারিয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে ব্রাজিল।

নকআউট পর্বে ইতালির মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। ইতালিকে ২-১ গোলে হারিয়ে ৩য় স্থান নিশ্চিত করে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় ব্রাজিলকে।

 

Written By

Mohammad Ali

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *