রাশিয়া বিশ্বকাপের সবচেয়ে বিপদজনক দল কলম্বিয়া কেন ?

২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার গায়ে ফেভারিটের তকমা না থাকলেও যে কোন সময় অঘটনের জম্ম দিতে পারে হামেজ রদ্রিগেজের কলম্বিয়া। নিজেদের দিনে যে কোন বড় দলের জন্য হুমকি হতে পারে এইবার রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপে। তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে দল হয়ে খেলা। আর আর্জেনটাইন মাস্টারমাইন্ড কোচ হোসে পোকারম্যান কলম্বিয়ার অন্যতম বড় শক্তি হিসাবে কাজ করবে রাশিয়া বিশ্বকাপে।

Related image

নাম

ফেডারেসন কলম্বিয়ানা ডে ফুটবল
নিকনেমঃ ত্রিকলার(তিনরঙ্গ) এবং লস কফেকাস(কফি উৎপাদক)

কলম্বিয়ার বড় জয়সমূহ।

আর্জেন্টিনা ০-৫ কলম্বিয়া
(বুয়েন্স আয়ার্স, আর্জেন্টিনা; ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯৩)

কলম্বিয়া ৫-০ উরুগুয়ে
(বারানকুইলা, কলম্বিয়া; ৬ জুন ২০০৪)

কলম্বিয়া ৫-০ পেরু
(বারানকুইলা, কলম্বিয়া; ৪ জুন ২০০৫)

কলম্বিয়া ৫-০ বলিভিয়া
(বারানকুইলা, কলম্বিয়া; ২২ মার্চ ২০১৩)

বিশ্বকাপ উপস্থিতি

Image result for colombia 1962world cupমোট ৬ বার (প্রথম ১৯৬২)
সেরা সাফল্যঃ-
কোয়ার্টার ফাইনাল , ২০১৪

কোপা আমেরিকা

Image result for colombia copa america cupউপস্থিতি ১৮ বার (প্রথম ১৯৪৫)
সেরা সাফল্য
বিজয়ী:Gold Medal ২০০১ সালে

কনকাকাফ গোল্ড কাপ

উপস্থিতি ৩ বার (প্রথম ২০০০)
Best result
রানার্স-আপ, ২০০০ সালে

কনফেডারেশন্স কাপ


উপস্থিতি ১ বার (প্রথম ২০০৩)
সেরা সাফল্য
৪র্থ, ২০০৩

কলম্বিয়ার ইতিহাসে সেরকম বিশেষ কিছু নেই। তবে যেটা আছে সেটা বর্তমান। আজকে কলম্বিয়ার বর্তমান নিয়ে আলোচনা হবে।

গোলকিপার

গোলবারে বরাবরের মতই থাকবে ডেভিড_ওসপিনা। গত ৫-৬ বছর ধরে ওসপিনাই কলাম্বিয়ার গোলবার শক্ত হাতে সামলেছে। আর এখন উনি অভিজ্ঞ ও পরিনত। গত ২০১৪ সিজনে ফ্রেঞ্চ ক্লাব নাইস থেকে আর্সেনালে আছেন তিনি। তাই তিনি যথেষ্ট ভরসার প্রতীক কলম্বিয়া শিবিরে।
এছাড়া ২য় পছন্দ হিসেবে থাকবে ক্যামিলো ভারগাস। ভারগাস এ পর্যন্ত বহু ম্যাচে কলম্বিয়ার গোলবার সামলেছে। এবং সে দলের সাথে মানিয়ে নেয়ার মতোই।

ডিফেন্স

ডিফেন্সে কলম্বিয়ার বড় শক্তি হবে ডেভিনসন_সানচেজ । এই সিজনে সে টটেনহামে যোগ দিয়েই সিজন শুরুর যে ভাঙ্গাচোরা ডিফেন্স ছিলো সেটাকে আটোসাটো করেছে। যারা নিয়মিত স্পার্সের খেলা দেখে তারা জানে সানচেজ ডিফেন্সে কি পরিমান ভাইটাল রোল প্লে করেছে চলতি সিজনে।দুর্দান্ত ফর্মের কারনে হারিকেন, ডেলে আলিরা যত গোল করে সে গোলের লিড ধরে রাখাতে বড় অবদান এই সানচেজের। তাই টটেনহামের সফলতার বড় অবদান ইনফর্ম সানচেজ।এছাড়া তার সাথে থাকবে বার্সার তরুন দৈত্য ইয়েরি_মিনা। মিনার খেলা সম্পর্কে বুঝতে হলে ফিরে যেতে হবে ২ সিজন আগে।গত দুই সিজনে পালমেইরাস লিগ টাইটেল জিতেছে। যার প্রধান অস্ত্র ছিলো মিনা। ডিফেন্স মজবুত হলে লিগ জেতা কত সহজ সেটা দেখিয়েছে পালমেইরাস।যার ফলে খুব সহজেই বার্সা টিম ম্যানেজমেন্টের নজরে পড়ে মিনা। এবং সে এখন বার্সার ভবিষ্যৎ ।এছাড়া আছে সান্তিয়াগো_আরিয়াস। নেডারল্যান্ড লিগের বর্তমান টেবিল টপার পিএসভি এডিনহোভেনের ডিফেন্স সান্তিয়াগো আরিয়াস। ফ্রান্স কলম্বিয়ার লাস্ট ফ্রেন্ডলি ম্যাচে যথেষ্ট দারুন খেলেছে আরিয়াস। আর গত কয়েক বছর ধরে খেলার কারনে দলের সাথে কম্বিনেসন অনেক ভালো।ফ্রাঙ্ক_ফ্যাবড়া গত ৩ সিজন ধরে আর্জেনটাইন লিগ চ্যম্পিয়ন বোকা জুনিয়র্সে আছেন। কলম্বিয়ার শেষ কয়েক ম্যাচে তার খেলা চোখে পড়ার মত ছিলো।

মিডফিল্ড

কলম্বিয়ার মিডফিল্ডে থাকবে গত বিশ্বকাপ আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা গোল্ডেন ম্যান কাপ্তান “পাওয়ারহাউস অফ কলম্বিয়া” জেমস_রদ্রিগেজ
তার বিষয়ে নতুন করে বলার মত কিছুই নেই।
প্রতিটা আক্রমনে থাকবে রদ্রিগেজের অবদান সেটা বলা যায়।

Image result for colombia james rodriguez 2018


এছাড়া গোপন অস্ত্র হিসেবে আছে জুয়ান_কুয়াডরাডো
কুয়াডরাডো রাইট সাইডের কিং। রাইট সাইডের প্রতিটা পজিসনে সে ডমিনেট করে খেলতে অভ্যস্থ।


গত কয়েক সিজনে তাকে রাইট ব্যাক, রাইট মিড, রাইট উইং প্রতিটা পজিসনে খেলতে দেখেছি। এমনকি প্রতিটা ম্যাচেই তাকে বদলে বদলে একেক পজিসনে খেলতে হয়।


এবং যারা জুভেন্তাসের খেলা দেখে তারা জানে কুয়াডরাডো প্রতিটা পজিসনেই সমানভাবে দক্ষ এবং সফল। এছাড়া তার ক্রসগুলো অনেক কার্যকরী ও নিখুত।

এছাড়া মিডে থাকবে এডউইন কার্দোনা ও সেবাসটিয়ান পেরেজ এবং উইলমার ক্যরিওস তিনজনেই বোকা জুনিয়র্সের মেইন টিমের মিডফিল্ডার।



ফরোয়ার্ড

কলম্বিয়ার ফরোয়ার্ড হিসেবে প্রথমেই থাকবে মোনাকোর তারকা স্ট্রাইকার রাদামেল_ফ্যালকাও_গার্সিয়া।ইন্জুরীর কারনে চলতি সিজনে কয়েক সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকলেও ইঞ্জুরি কাটিয়ে আবার সেই পুরোনো ফর্মে ফিরেছে ফ্যালকাও। গত ওয়াল্ডকাপে ইঞ্জুরির কারনেই কলম্বিয়ার জার্সিতে মাঠে নামতে পারেনি। এবার তার ওয়াল্ডকাপ খেলার স্বপ্ন পুরন হতে চলেছে। আসাকরি সে দক্ষভাবেই দলকে সামর্থের সেরাটা দেবে।এছাড়া ফরোয়ার্ডে থাকবে কলম্বিয়ার আরেক ভরসা সেভিয়ার স্ট্রাইকার লুইস_মুরিয়েল। মুরিয়েল স্ট্রাইকার ও লেফট উইং এবং লেফট মিড পজিসনে খেলতে পারে।কলম্বিয়ার রিজার্ভ বেঞ্চে থাকবে কার্লোস_বাক্কা ভিলারিয়ালের মেইন স্ট্রাইকার। যিনি এই সিজন ভালো ফর্মে কাটাচ্ছেন। ৩৪ ম্যাচে ১৫ গোল ৭ এসিস্ট।দলে খেলার জন্য প্লেয়ারতো আছে। এবার তাদের কোচিং গাইডলাইন দরকার। হ্যা, গত ওয়াল্ডকাপ হতেই কলম্বিয়ার কোচ হিসেবে আছে আর্জেন্টাইন বস জোসে পেকারম্যান। ভদ্রলোক ৪-৫ বছর ধরে আমাদের টিমটাকে হাতের তালুর মতই মুখস্ত ভাবে চেনে। কোন প্লেয়ারকে কিভাবে ব্যাবহার করতে হবে সেটা তার থেকে ভালো বর্তমানে কেউ জানেনা।

গত ওয়াল্ডকাপে দেখেছি দল ঘোসনার ঠিক আগে মেইনম্যান ফ্যালকাও ইঞ্জুরির কারনে বিশ্বকাপ মিস করলেও ঘাবড়ে জানি তিনি। তিনি ফ্যালকাও ছাড়াই অন্যদের ট্যকটিকালি কাজে লাগালেন। এবং দলের ইনফর্ম হিসেবে রদ্রিগেজকে জায়গা করে দিয়ে পুরো মিড ও স্ট্রাইকিং এরিয়াজুরে খেলালেন। যার সফলতা আমরা গেই দেখেছি।বলা যায় পেকারম্যান সাহেব ৫০০ টাকার বাজার ৪৫০ টাকায় করার মনমানসিকতা রাখেন। তাই তার প্রতি ভরসা বরাবরই আছে। ট্যাকটিকালি তার পছন্দ ৪-২-৩-১ ফর্মেসন। তবে দক্ষ সিডিএম না থাকায় তিনি ৪-১-২-৩ ফর্মেসনেও খেলাতে পারেন। তবে বড় কথা তিনি ডিফেন্সিভ রোল কম পছন্দ করেন। তিনি চান হারলেও এটাকিং খেলা খেলাতে।আর কলম্বিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে টিম কম্বিনেসন। প্রতিটা প্লেয়ারই তার পজিসনের সেরা খেলাটা দিতে চায়। আর সবার সাথে সবার বোঝাপড়া ভালো। জাতীয় দলে নীজেদের সেরাটা দেয়ার মানসিকতা এবং টিম কম্বিনেসন এই জিনিষ দুটা কলম্বিয়ার সামর্থকেও ছাপিয়ে যায় বরাবরই। যারা কলম্বিয়াকে একদমই হিসেবে রাখেননি তারা এখন থেকে রাখুন। দেখা হবে রাশিয়ায়। এনালাইসিস বুঝতে না পারলে ফ্রান্সের সাথে কলম্বিয়ার লাস্ট ফ্রেন্ডলি ম্যাচটা দেখতে পারেন।

Written By
Mohammad Ali

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *