জিআরই ভার্বালের (Verbal Reasoning) কয়েক ধরনের প্রশ্নের মধ্যে কম্প্রিহেনশন (Reading Comprehension) একটি। একটি ভার্বাল সেকশনে প্রায় ৪-৫টি ছোট, বড় ও মাঝারি কম্প্রিহেনশন থাকে। আর প্রতিটি সেকশনের ২০টি প্রশ্নের মধ্যে ১০-১১টিই আসে কম্প্রিহেনশনগুলো থেকে। তাই জিআরই ভার্বালে ভালো ফল করার জন্য কম্প্রিহেনশন অংশে ভালো করার গুরুত্ব অপরিসীম।
কিন্তু নানা কারণে এই কম্প্রিহেনশন অংশটি অনেক পরীক্ষার্থীদের কাছেই বিরক্তিকর মনে হয়। বিশেষ করে বড় আকারের কম্প্রিহেনশনগুলো অনেকে না পড়েই আন্দাজে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেন। এর কারণ হলো অধিকাংশ কম্প্রিহেনশন এমন বিষয়ের উপর করা হয়, যা নিয়ে পরীক্ষার্থীদের কোনো ধারণাই নেই।
এরকম কোনো কম্প্রিহেনশন মাত্র ২ মিনিটে পড়ে মনে মনে যৌক্তিক বিশ্লেষণ করে প্রশ্নের সঠিক উত্তর বাছাই করা সহজ ব্যাপার নয়। কিন্তু এ কথাও সত্য যে, বিষয়বস্তু সম্পর্কে আগে থেকে না জানলেও আপনি যদি কম্প্রিহেনশনগুলোর গঠন তথা এগুলো কোন আঙ্গিকে লেখা হয় তা আগে থেকে জেনে রাখেন এবং সঠিক কৌশল অবলম্বন করে এটি পড়ার অনুশীলন করেন, তবে এই অংশে ভালো করা খুব কঠিন ব্যাপারও নয়।
এই প্রবন্ধে মূলত জিআরই কম্প্রিহেনশনের গঠন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
যা আছে এই কম্প্রিহেনশনে
জিআরইর প্রশ্নকর্তারা ইচ্ছে করেই একটি কম্প্রিহেনশনে কঠিন কঠিন ভোকাবুলারি ব্যবহার করে অনেক তথ্য দিয়ে থাকেন, যার অধিকাংশই প্রশ্নোত্তরের জন্য প্রয়োজন নেই। নতুন বা কম্প্রিহেনশনের উপর যথাযথ প্রস্তুতি নেই, এমন পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এসব বোঝা সত্যিই দুরূহ ব্যাপার। তাই জিআরই পরীক্ষা দেয়ার আগে আপনাকে জানতে হবে কম্প্রিহেনশনে কী কী থাকে এবং এটি কীভাবে পড়তে হয়।
প্রথম কথা, এই কম্প্রিহেনশনগুলো প্রশ্নকর্তারা পান কোথায়? আসলে এগুলো সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন একাডেমিক বা নন-একাডেমিক বই, ম্যাগাজিন, বায়োগ্রাফি, জার্নাল, টেক্সট বুক ইত্যাদি থেকে। সমাজবিজ্ঞান, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, রাজনীতি, অর্থনীতি, মহাকাশবিজ্ঞান, সাম্প্রতিক কোনো ঘটনা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উপর এগুলো তৈরি করা হয়।
একটি কম্প্রিহেনশন থেকে ৩ ধরণের প্রশ্ন আসতে পারে।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন: ১টি সঠিক উত্তর বাছাইকরণ (Multiple-choice Questions; Choose 1 answer)
এ ধরনের প্রশ্নের ক্ষেত্রে কম্প্রিহেনশন থেকে একটি প্রশ্ন করা হয় এবং এর জন্য উত্তরের অপশন থাকে ৫টি। এর মধ্য থেকে একটি সঠিক উত্তর বাছাই করতে হয়।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন: এক বা একাধিক সঠিক উত্তর বাছাইকরণ (Multiple-choice Questions; Choose 1 or more answers)
এ ধরনের প্রশ্নের ক্ষেত্রে কম্প্রিহেনশন থেকে একটি প্রশ্ন করা হয় এবং এর জন্য উত্তরের অপশন থাকে ৩টি। এই ৩ টি অপশনের মধ্যে যে কোনো ১টি বা ২টি বা ৩টিই সঠিক হতে পারে। যতগুলো সঠিক হবে, প্রত্যেকটিতেই টিক চিহ্ন দিতে হবে। নইলে উত্তর সঠিক বলে বিবেচিত হবে না।
কম্প্রিহেনশন থেকে সঠিক বাক্য বাছাই (Select-in-Passage)
এ ধরনের প্রশ্নে কম্প্রিহেনশনের যে কোনো একটি বিশেষ বাক্যকে ইঙ্গিত করা হয় এবং পরীক্ষার্থীকে সেই বাক্যটি খুঁজে বের করতে বলা হয়।
কম্প্রিহেনশনের গঠন
জিআরইর একেক কম্প্রিহেনশন একেক আঙ্গিকে লেখা হয়। কোনোটিতে প্রথম প্যারায় একটি সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এবং এরপর লেখক এর সমাধান বর্ণনা করেন। কোনোটিতে লেখক কোনো পুরোনো মতবাদ বা প্রকল্পের সমালোচনা করেন এবং পরে নতুন মতবাদ বর্ণনা করেন। আপনি যদি আগে থেকেই এরকম কম্প্রিহেনশনের গঠন সম্পর্কে জেনে থাকেন, তাহলে খুব কম সময়ে ও সহজে এর মূল বক্তব্য বুঝতে পারবেন।
সাধারণত অধিকাংশ কম্প্রিহেনশনে এই ৪টি অংশ থাকে।
- মূল বিষয় (The Point)
- পটভূমি (Background)
- মূল বিষয়ের ব্যাখ্যা (Support)
- তাৎপর্য (Implications)
মূল বিষয় (The Point)
এটি হলো কম্প্রিহেনশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। লেখক কোন বিষয়ে কী বলতে চান অর্থাৎ কম্প্রিহেনশনের মূলভাব বোঝা যায় এই অংশ থেকে। কম্প্রিহেনশন পড়ার সময় আপনার প্রধান কাজ হলো এই মূল পয়েন্ট খুঁজে বের করা। সাধারণত প্রথম ২ প্যারার মধ্যেই মূল পয়েন্ট বলা থাকে।
পটভূমি (Background)
মূল পয়েন্ট বোঝার জন্য এর কিছু ইতিহাস বা পটভূমি তুলে ধরা হয় কয়েকটি বাক্যের মাধ্যমে। তবে অনেক সময় প্রশ্নকর্তারা বর্ণনাগুলো এমন ঘুরিয়ে করেন যে, কোন বাক্যে তিনি মূল বিষয়ের পটভূমি বর্ণনা করছেন আর কোন বাক্যে তিনি মূল বিষয়কে সমর্থন করছেন, সেটা বোঝা দুষ্কর হয়ে পড়ে। আবার এখান থেকেই এমন প্রশ্ন আসে যে, এই বাক্য দ্বারা লেখক কী বুঝিয়েছেন। এধরনের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় পরীক্ষার্থীদেরকে খুব সতর্ক হয়ে ও ভালোভাবে বুঝে উত্তর দিতে হবে।
মূল বিষয়ের ব্যাখ্যা (Support)
এই অংশে মূল বিষয়কে ব্যাখ্যা করে বা সমর্থন করে আরও কিছু তথ্য যেমন প্রমাণ, উদাহরণ ইত্যাদি যোগ করেন লেখক। এই অংশ থেকে সরাসরি তথ্য সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন আসে না। বরং কোন বাক্য দ্বারা মূল বিষয়কে সমর্থন করা হয়েছে বা প্রমাণিত করা হয়েছে, এ ধরনের প্রশ্ন আসে।
তাৎপর্য (Implications)
এই অংশে মূল বিষয়ের তাৎপর্য তথা ফলাফল বা প্রভাব সম্পর্কে লেখা হয়। এটি সাধারণত কম্প্রিহেনশনের শেষের দিকে থাকে বলে বুঝতে কোনো অসুবিধা হয় না।
কম্প্রিহেনশনের কোনো তথ্য থেকেই সরাসরি প্রশ্ন আসে না। বরং এর গঠন, কোন অংশ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে, কোনো একটি প্যারার মূল বক্তব্য কী, রচনায় বর্ণিত কোনো কাজ কী উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, এরকম প্রশ্নই আসে। তাই আগে থেকে কম্প্রিহেনশনের গঠন সম্পর্কে জানা থাকলে এটি পড়তে ও বুঝতে যেমন কম সময় লাগে, তেমনি প্রশ্নের সঠিক উত্তরও সহজেই বের করা যায়।
Featured Image: Manhattan Prep