কৃষি খাতের আইটিতে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য অ্যাগ্রিকালচার, অ্যাগ্রিকালচারাল সায়েন্স, ফিশারিস, কম্পিউটার সায়েন্স, ভেটেরেনারি, অ্যানিম্যাল সায়েন্স, বায়মেডিক্যাল সায়েন্স, ব্যবসায় শিক্ষা, বায়োটেকনোলজি, অ্যাগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। চলুন জেনে আসি এমন কিছু চাকরি সম্পর্কে, যেগুলোর মাধ্যমে কৃষি খাতের আইটি সেক্টরেও ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।
অ্যাগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট
কৃষি খাতে একজন অ্যাগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট মূলত কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন সূত্র ও আইন প্রয়োগ করার মাধ্যমে গবেষণা করে থাকেন। একজন অ্যাগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনাকে যেসব বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে, সেগুলো হচ্ছে,
- বিভিন্ন পণ্যের ডেটা অ্যানালাইসিস, ডেটা প্রিপারেশন ও ডেটা সংগ্রহ করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- বিভিন্ন কৃষি বিষয়ক পণ্যের প্রয়োগ ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে হবে।
- ফিল্ড অফিসার হিসেবে, পিআরএ মেথডে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- মডার্ণ অ্যাগ্রিকালচার ও ফার্মিং সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে।
- এফও, ইনপুট, ও কৃষি ম্যাটেরিয়াল সম্পর্কে সম্মক ধারনা থাকতে হবে।
- বিভিন্ন কৃষি বিষয়ক প্রযুক্তি ও হার্ডওয়্যার ব্যবহারের দক্ষতা থাকতে হবে।
- গবেষণার ক্ষেত্রে পাইথন ও আর প্রোগ্রামিং ভাষায় পারদর্শী হতে হবে।
- কম্পিউটারের সফট স্কিল ডেভেলপ ও ট্রেইন করার ওপর পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
ল্যাব টেকনিশিয়ান
কৃষি খাতে একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান মূলত ল্যাবরেটরিতে গবেষণা করার কাজ করে থাকেন। একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য, আপনাকে যেসব বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে, সেগুলো হচ্ছে,
- বিভিন্ন ধরনের ফিড পণ্যের কোয়ালিটি টেস্ট ও অ্যানালাইসিস করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- কনসারনিং ম্যানেজমেন্টের বিভিন্ন পণ্যের ডেটা ও টেস্ট রিপোর্ট এডিট ও আপগ্রেড করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- লজিস্টিক ল্যাবরেটরি টেস্টিং সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
- সেইফটি মেজারমেন্ট ও ইনফেকশন কন্ট্রোলিংয়ের উপর ধারণা থাকতে হবে।
- স্ক্যালা, পাইথন ও আর প্রোগ্রামিং ভাষার উপর দক্ষতা থাকতে হবে।
- কম্পিউটারের বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে।
- গুগল ও ইয়াহুতে কিওয়ার্ডের মাধ্যমে রিসার্চ করার জ্ঞান থাকতে হবে।
সেন্ট্রাল কন্ট্রোল অপারেটর
কৃষি খাতে একজন সেন্ট্রাল কন্ট্রোল অপারেটর মূলত কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন, সিকিউরিটি নিয়ন্ত্রণের কাজ করে থাকেন। একজন সেন্ট্রাল কন্ট্রোল অপারেটর হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য, আপনাকে যেসব বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে, সেগুলো হচ্ছে,
- সিস্টেম ডেটা কমিউনিকেশন সমস্যার সমাধান করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- নেটওয়ার্কিং, অ্যাপ্লিকেশন বাগ, সফটওয়্যার ভলনারেবিলিটি সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে।
- ওয়্যার শার্ক, এনম্যাপ ও নেটবাগের মতো সফটওয়্যার দ্বারা ইমিডিয়েট অপারেশন নিয়ন্ত্রণ করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- সি প্লাস প্লাস, পাইথন, ব্যাচ ও শেল স্ক্রিপ্টিং সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
- ডেটা ট্রান্সমিশনে ব্যবহৃত সকল ধরনের ডায়াগনস্টিক ইক্যুইপমেন্ট সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।
- অপারেটিং কমান্ড, সার্ভার প্রোগ্রাম ও নেট ক্লাউড সার্ভিস সম্পর্কে জানতে হবে।
- ডেটা কমিউনিকেশন ট্রানজেকশন রিডিউস করার ও কন্ট্রোল করার দক্ষতা থাকতে হবে।
প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট অফিসার
কৃষি খাতে একজন প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট অফিসার মূলত কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা, ব্যবস্থাপনা করা ও অডিটিংয়ের কাজ করে থাকেন। একজন প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনাকে যেসব বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে, সেগুলো হচ্ছে,
- পণ্যের ক্যাটাগরি বিবেচনা করে নিত্য নতুন পণ্য তৈরি করা ও এর ব্যবস্থাপনা করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- হাউস ট্রায়াল সম্পর্কে জানতে হবে।
- প্রোডাক্ট সোর্সিং ও পারসুয়িং সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
- রেগুলেটরি ডকুমেন্টের আপডেট ও অডিটিং করার জ্ঞান থাকতে হবে।
- প্রোডাক্ট লঞ্চিং, পজিশনিং ও প্রোমোশনের ব্যাপারে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- গ্রাফিক্স ডিজাইন, বিশেষ করে পণ্যের ইনফোগ্রাফিক্স তৈরিতে পারদর্শী হতে হবে।
- পণ্যের ডিজাইন ও গ্রাফিক্যাল ভিউয়ের ক্ষেত্রে সি প্লাস প্লাস গ্রাফিক্স সম্পর্কে জানতে হবে।
- কম্পিউটারের বেসিক সফটওয়্যারগুলো (যেমন, ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর, ইনডিজাইন, অফিস স্যুইট ইত্যাদি) সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
অ্যাগ্রিকালচার কনসালটেন্ট
একজন অ্যাগ্রিকালচার কনসালটেন্ট মূলত কৃষি বিষয়ক সমস্যার সমাধান ও বিভিন্ন সিদ্ধান্ত দেয়ার কাজ করে থাকেন। একজন অ্যাগ্রিকালচার কনসালটেন্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য, আপনাকে যেসব বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে,
- বিজনেস প্ল্যানিং, পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট, ফার্মিং, অ্যাগ্রোনোমি, লাইভস্টক, নেটওয়ার্কিং, মার্কেটিং এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- গ্রাহকের সাথে টেকনিক্যাল রিকোয়ারমেন্ট নিয়ে কথা বলার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- ব্যবসার স্ট্র্যাটেজি, জিরো পয়েন্ট প্ল্যানিং, ডেটা অ্যানালাইসিস, লেজিসলেটিভ অ্যাডভাইস এবং প্ল্যান অপারেটিং সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
- প্রয়োজনীয় সময় ও খাতে লাইভস্টক আপডেট করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, সার্ভার অ্যাপ্লিকেশন ও ক্লাউড স্টোরেজ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
- ফিশারিস, বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে সঠিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্পর্কে জানতে হবে।
অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যানালিস্ট
কৃষি খাতে, একজন অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যানালিস্ট মূলত কৃষি বিষয়ক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত মার্কেট রিসার্চ, ডেটা অ্যানালাসিস ও অ্যাডভার্টাইজমেন্ট প্ল্যানিংয়ের কাজ করে থাকেন। একজন অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনাকে যেসব বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে,
- বিভিন্ন অ্যাগিবিজনেস সম্পর্কে রিসার্চ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- ওয়ার্কফ্লো, বিজনেস প্রসেস, বিজনেস প্ল্যানিং, বিজনেস স্ট্র্যাটেজি এবং বিজনেস পিন পয়েন্টগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।
- মাইক্রোসফট অফিস স্যুইট ও লিনাক্স লিবরা অফিসে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- এসইও, এসইম, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, প্রোডাক্ট মার্কেটিং, বি টু বি, পি টু পি ও এম টু এম মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।
- ডিজিটাল মার্কেটিং ও এর জন্য ব্যবহৃত সকল ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করায় পারদর্শী হতে হবে।
- ভিজ্যুয়াল ব্যাসিক, আর প্রোগ্রামিং ও শেল স্ক্রিপ্টিংয়ের উপর যথেষ্ট দক্ষ হতে হবে।
- ফোরট্রান প্রোগ্রামিং ভাষায় তৈরি বিভিন অ্যাগ্রিকালচার ও অ্যাগ্রিবিজনেস সফটওয়্যার ও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে।
এছাড়াও কৃষি ও এর সাথে সম্পৃক্ত সকল খাতের আইটিতে ক্যারিয়ার গড়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই ৩ থেকে ২ বছর মেয়াদী কোর্স করে বা ৪ বছরের স্নাতক কোর্স করার পরও আইটিতে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।