শীর্ষ ৫টি শিক্ষানবিশ চাকরির ক্ষেত্র

বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিশ চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মালিকই শিক্ষানবিশ হিসেবে, তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মী নিয়োগ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। শিক্ষানবিশের গুরুত্ব ও সুবিধা উপলব্ধি করতে পারার কারণেই হয়তো, প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষানবিশ কর্মী নিয়োগ প্রদানের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। আপনি যদি শিক্ষানবিশ হিসেবে চাকরি করতে চান, তবে আপনার জন্যও অপার সুযোগ ও সম্ভাবনা বিদ্যমান আছে।

Source: independent.co.uk

শুধু আপনাকে কাজের ক্ষেত্র খুঁজে পেতে হবে। আপনি শিক্ষানবিশ হিসেবে চাকরি করতে চাইলে, এই আর্টিকেলটি পড়ুন। কারণ আমি এই আর্টিকেলটিতে, এমন পাঁচটি শিক্ষানবিশ চাকরির ক্ষেত্র সম্পর্কে আলোচনা কররো, যেগুলো হয়তো আপনার পূর্বে জানাই ছিলো না। তাহলে চলুন, শীর্ষ ৫টি শিক্ষানবিশ চাকরির ক্ষেত্র সম্পর্কে জেনে নিই।

১. মিডিয়া

বর্তমান সময়ে মিডিয়া হচ্ছে আধুনিক যুগের একটি অপরিহার্য অংশ। মিডিয়া ও মার্কেটিংকে ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আর এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ কাজ সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন হয় তরুণ কর্মীদের। ফলে শিক্ষানবিশদের কাজ করার পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে এই মিডিয়া এবং মার্কেটিং ক্ষেত্রে।

Source: monster.com

আপনি যদি শিক্ষানবিশকে ক্যারিয়ারে পরিণত করতে চান এবং শিক্ষা চলাকালীনই মিডিয়া এবং মার্কেটিং সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তবে আপনার জন্য অসাধারণ একটি ক্ষেত্র হচ্ছে মিডিয়া। আপনি মিডিয়াতে কাজ করে পাবলিক রিলেশন দক্ষতার মতো গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাও সহজেই আয়ত্ত্ব করতে সক্ষম হবেন।

২. আইটি

আপনি যদি চিন্তা করেন, আইটি ক্ষেত্রে চাকরি করতে হলে কম্পিউটার সাইন্সে উচ্চতর ডিগ্রির প্রয়োজন হয় এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রচুর অভিজ্ঞতা থাকা জরুরী, তাহলে আপনি ভুল চিন্তার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরির জন্য কম্পিউটার সাইন্সে উচ্চতর ডিগ্রি আবশ্যক নয়। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরির জন্য প্রয়োজন হচ্ছে, আইটি বিষয়ক জ্ঞান থাকা। তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে যদি আপনার পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজেই আইটি ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ শুরু করতে পারবেন।

Source: houstonjatc.com

সফটওয়্যার ডেভোলপমেন্ট, সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ান ইত্যাদি পদে প্রচুর শিক্ষানবিশ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এই সব পদে কাজ করার জন্য উচ্চতর ডিগ্রির প্রয়োজন হয় না, বরং দরকার পড়ে আইটি বিষয়ক বাস্তব জ্ঞান। পড়ালেখা চলাকালীনই তথ্যপ্রযুক্তি বিষয় নিয়ে পর্যাপ্ত চর্চা করলে, খুব সহজেই তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব। তাই আপনার যদি তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে, তবে শিক্ষা চলাকালীন সময়েই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

৩. উৎপাদন খাত

বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান আছে। আর এই প্রত্যেকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন কার্য পরিচালিত হয়ে থাকে। তাই উৎপাদন খাতে রয়েছে পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ। এই উৎপাদন খাতে যেমন রয়েছে অভিজ্ঞদের কাজের অপার সুযোগ, তেমনি অনভিজ্ঞদের জন্যও রয়েছে পর্যাপ্ত সম্ভাবনা। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদন খাতে শিক্ষানবিশদের সুযোগ দিয়ে থাকে। কারণ উৎপাদন ক্ষেত্রের বেশিরভাগ কাজ করতে, তেমন কোনো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। ফলে শিক্ষানবিশদের নিয়োগ দেওয়ায়, কোম্পানির উৎপাদন কোনভাবেই বাঁধাগ্রস্ত হয় না। বরং শিক্ষানবিশদের দিয়ে কাজ করানোর ফলে, কোম্পানি নানাভাবে লাভবান হয়।

Source: bmwgroup.jobs

এজন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উৎপাদন খাতে, শিক্ষানবিশদের অন্তর্ভুক্ত করতে আগ্রহ দেখায়। আপনি যদি উৎপাদন ক্ষেত্রে উচ্চতর পর্যায়ে চাকরি করার স্বপ্ন দেখেন, তবে শিক্ষানবিশ হিসেবে উৎপাদন খাতে ক্যারিয়ার শুরু করুন। এতে আপনি পড়ালেখা চলাকালীনই প্রচুর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন। তারপর পড়ালেখা শেষ হলে, আপনি খুব সহজেই আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবেন।

৪. নির্মাণ শিল্প

যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে, দ্রুততম ক্রমবর্ধমান খাতগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে নির্মাণ ও সম্পদ শিল্পকে। সর্বশেষ এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত চার বছরে অন্য সময়ের তুলনায় এই শিল্পের প্রায় তিন গুণ বেশি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। তাহলে সহজেই অনুধাবন করতে সক্ষম হচ্ছেন যে, নির্মাণ ও সম্পদ শিল্পে প্রচুর কাজের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রপার্টি মেইনটেইন্যান্স, অফিস জুনিয়ার, ওয়াটার নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান, মর্টগেজ পারফরম্যান্স অ্যাসিস্ট্যান্ট ইত্যাদি বিভিন্ন পদে শিক্ষানবিশদের নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে।

Source: cnbc.com

আপনি এ চাকরি করার পাশাপাশি খুব সহজেই পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সক্ষম হবেন। আর এসব পদের যে কোনোটিতে শিক্ষানবিশ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলে, খুব সহজেই সফল ক্যারিয়ার দিকে অগ্রসর হতে পারবেন।

৫. সামাজিক যত্ন ক্ষেত্র

আপনি যদি যত্ন সহকারী, সমাজকর্মী কিংবা নার্সারি নার্স হয়ে উঠতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে শিক্ষানবিস হিসেবে এসব কাজে অংশগ্রহণ করা, দুর্দান্ত একটি উপায় হতে পারে। লক্ষণীয় বিষয় এই যে, সামাজিক যত্ন ক্ষেত্রে অধিকাংশ কর্মীই শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করে থাকে। এই ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য যত্নশীল, উৎসাহী ও স্ব-প্রণোদিত হওয়া জরুরী।

Source: bqlive.co.uk

এই ধরনের কাজের সঙ্গে পড়ালেখাকালীন সময়েই জড়িত হতে পারলে, খুব সহজেই যত্ন শিল্পের বিভিন্ন উচ্চ পদে চাকরি পাওয়া সম্ভব। কারণ যত্ন শিল্পের উচ্চ পদের চাকরিগুলোতে সাধারণত অভিজ্ঞদের নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। তাই কেউ যদি প্রথমেই শিক্ষানবিশ হিসেবে করা যায়, এমন কোনো পদের কাজ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে। তাহলে সে খুব সহজেই সফল ক্যারিয়ার গড়ার দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। তাই আপনি শিক্ষানবিশ হিসেবে সামাজিক যত্ন খাতে ক্যারিয়ার শুরু করুন। তারপর অভিজ্ঞতা অর্জিত হলে উচ্চপদের চাকরিতে আবেদন করুন। এতে আপনি খুব সহজেই যত্ন শিল্পের বিভিন্ন উচ্চপদের চাকরিতে নিয়োগ পেয়ে যাবেন।

Source: apprenticeshipguide.com


শিক্ষানবিশ হিসেবে যেসব চাকরিগুলো করা যায়, সাধারণত এসব চাকরিতে নিয়োগ পেতে, কোনো প্রকার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বড় বড় পদে নিয়োগ পেতে হলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। তাই শিক্ষানবিশ হিসেবে যেসব চাকরিগুলো করা যায়, আপনি যদি এসব চাকরির কোনো একটি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন, তাহলে আপনি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন এবং অন্যান্য চাকরি প্রার্থীদের তুলনায় এগিয়ে থাকবেন। পরবর্তীতে পড়াশোনা শেষ হলে, খুব সহজেই বড় কোনো পদে কিংবা আপনার পছন্দ মতো চাকরিতে সহজেই ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

Featured Image:Ratemyapprenticeship.co.uk

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *