অল্প থেকে শুরু করে অনেক বড় অবস্থায় পৌঁছানো ব্যবসাগুলোর শুরুটা হয়েছিল ই-কমার্স এর মাধ্যমে। এখানে তারা নিজেরা নিজেদের পণ্য বিক্রি করতে পারত, গ্রাহককে নির্দিষ্ট সেবা পৌঁছে দিতে পারত। বর্তমানে এই বিষয়গুলো আরও বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে। গ্রাহকেরা এখন শুধুমাত্র রাস্তার পাশের দোকান থেকেই জিনিস কেনে না, তারা ওয়েবসাইটে নানা জিনিস দেখে কিনতে পছন্দ করে।
এসব তো গেলো গ্রাহকের সুবিধার কথা। কিন্তু কেন ই-কমার্স একজন ব্যবসায়ীর ব্যবসার জন্য জরুরি? চলুন জেনে নিই কিছু কারণ।
ব্র্যান্ডকে সুপরিচিত করা
কোনো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দোকান নেওয়া এই মুহূর্তেই আপনার সম্ভব নয়। কারণ আপনার হাতে পর্যাপ্ত পরিমান অর্থ নেই। কিন্তু অনলাইনে একটা পেইজের মাধ্যমেই আপনি চাচ্ছেন ব্যবসাটিকে সবার কাছে পৌঁছাতে। ঠিক এই কাজটাই করতে সাহায্য করছে ই-কমার্স। আপনার ব্র্যান্ডকে সবার কাছে পরিচিত করে দিচ্ছে সহজেই।
ব্যবসার শুরুতে ব্র্যান্ডকে সুপরিচিত করতে হবে; image source: ogilvy
এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় আপনার পণ্যের প্রকাশ ২৪ ঘন্টাই করা যায়। নানা ধরনের ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে আপনার পণ্যটি আর একক কোনো দোকানে রয়ে যাচ্ছে না। পৌঁছে যাচ্ছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মানুষের দোড়গোড়ায়। আপনার কোনো পণ্যের জন্যই আপনাকে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াতে হবে না। নির্দিষ্ট জায়গা থেকে কাঁচামাল এনে ঘরে বসেই সবার মাঝে আপনি পরিচিত করিয়ে দিতে পারছেন আপনার পণ্যকে।
গ্রাহকের জন্য বেশ সুবিধাজনক
একটা অনলাইন দোকান মানে হচ্ছে সারাদিন ২৪ ঘন্টা খোলা। যে কোনো সময় গ্রাহক আপনার অনলাইন দোকানে ঘুরে আসতে পারে। নির্দিষ্ট কোনো সময় এর জন্য বেঁধে দেওয়া থাকে না। বর্তমানে এই ব্যস্ত সময়ে কারো হাতেই আসলে এত বেশি ঘোরাঘুরি করে জিনিস কেনার সময় নেই। আর দোকান ঘুরে ঘুরে কেনার মতো ইচ্ছাও সবার ভেতর থাকে না। বেশিরভাগ গ্রাহকই কম সময়ে অনেক কিছু দেখতে চান। তাদের জন্য একটা অনলাইন পেইজ হতে পারে অনেক বড় সমাধান। তারা আপনার পেইজে ঘুরে যখন নানা ধরনের পণ্য দেখবে, তার ডিটেইলস দেখবে তখন এমনিতেই আপনার পেইজের প্রসারসহ বিক্রি বৃদ্ধি পাবে।
গ্রাহকের জন্য সুবিধাজনক; image source: jellyfish health
পরিসর বাড়ানো
ইন্টারনেটের দ্রুততার কারণে, লাখ লাখ মানুষ এক মুহূর্তে আপনার পেইজ/ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে পারছে। এই দর্শকরা কিন্তু সংখ্যায় অনেক বেশি। সবাই হয়ত আপনার গ্রাহক হবে না, তবে দেখবে অনেকেই। আর এই দেখাটা হলেও কিন্তু আপনার পরিচিতির প্রসার বাড়ল। রাস্তার পাশে একটি দোকানের সাথে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের তুলনা করে দেখুন। সেই দোকানকে যদি দুইজন মানুষ চিনে থাকে আপনার অনলাইনের দোকানকে চেনে আরও পাঁচজন। তাই বড় ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে যারা কাজ করছে তাদের দিকে না তাকিয়ে স্বল্পভাবে শুরু করা নিজের ব্যবসার দিকে তাকান। এটিকেই বড় করে গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিন।
ব্যবসায় বাড়াতে হবে পরিসর; image source: Southeast Florida Business Magazine
মার্কেটিং এর সুযোগ করে দেবে
আপনার ওয়েবসাইটটি আপনার ব্যবসার মার্কেটিং এর মধ্যে অন্যতম মাধ্যম। শুধুমাত্র সার্চ ইঞ্জিনে আপনার সাইটের নাম লিখলেই খুঁজে পাওয়া যাবে এটাই মার্কেটিং এর অংশ নয়। ওয়েবসাইট দিয়ে আপনি আরও অনেক কিছু করতে পারবেন। যেমন, ‘পে পার ক্লিক এডভার্টাইজিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং ই-মেইল মার্কেটিং। এই সব কিছুই আপনার ওয়েবসাইটের সাথে সংযুক্ত থাকবে।
বাড়াবে মার্কেটিং এর সুবিধা; image source: Mississippi Academy of Family Physicians
গ্রাহকের চাহিদা বুঝতে পারা
আপনার ব্যবসার জন্য আপনি নিশ্চয়ই পণ্যের সংখ্যাকে বাড়ানোর পাশাপাশি গ্রাহকের কাছেও পৌঁছাতে চান। আর এজন্য জরুরি হচ্ছে গ্রাহকের চাহিদা বুঝে পণ্য প্রস্তুত করা। একটা ই-কমার্স সাইট সব সময় আপনার ব্যবসার একটা মাপকাঠি ধরে রাখতে সাহায্য করবে। নতুন নতুন আরও পদ্ধতি যুক্ত করতে, পণ্য কিনে পেমেন্ট করাতে, কীভাবে বিক্রি আরও বাড়ানো যায় সে বিষয়ে ভাবতে আপনাকে বেশ সহায়তা করবে। জায়গা পরিবর্তন না করে কীভাবে ব্যবসার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য পূরণ করা যায় সেই বিষয়ে ই-কমার্স সহায়তা করবে।
ব্যবসার প্রসার বাড়লে বাড়বে গ্রাহকও; image source: salesbox
একটা ব্যবসা যখন শুরু করা হয় তখন সেটি নিয়ে ভাবনার অন্ত থাকে না। কীভাবে গ্রাহকের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য আনতে হবে, কোন জিনিস তাদের পছন্দ হবে, কোনটি হবে না, কীভাবে সবার কাছে পৌঁছানো যায় এইসব নিয়ে খুব অল্প সময়েই সমাধান করে দেয় ই-কমার্স। তবে ওয়েবসাইট খুললেই যে সব একবারে হয়ে যাবে তা মোটেই নয়। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
Feature image: Discovery Design