এন্ড্রয়েড ডেভেলপিং এ ক্যারিয়ার গড়বেন যেভাবে

Source: AndroidPub

বর্তমানে বাচ্চা থেকে বুড়ো সবার হাতেই আইফোন নাহয় একটি এন্ড্রয়েড হ্যান্ডসেট আপনি দেখতে পারবেন। বর্তমানে সফটওয়্যার ডেভেলপিং কর্মক্ষেত্রের মধ্যে ১০ জনের মধ্যে ৭ জন লোক পছন্দ করছে এন্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্ম

বর্তমান বিশ্বে সবথেকে বেশি ব্যবহার করা অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে এন্ড্রয়েড। লিনাক্স বেসের উপর তৈরি এই অপারেটিং সিস্টেমটি বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করায় এর প্রয়োজনীয় এপসের চাহিদা অন্যান্য যেকোন ডিভাইসের এপসের চাহিদা বেশি। ফলে তৈরি হয়েছে অসংখ্য ডেভেলপারদের চাহিদা।

কেন এন্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্ম?

Source: AndroidPub

উচ্চ সংখ্যক ডিভাইস

আন্তর্জাতিকভাবে বর্তমানে প্রতি মাসে দুই বিলিয়নের উপর এন্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে ৮২.২ শতাংশ ডিভাইসে ব্যবহার করা হতো এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম। যেটা কিনা ২০১৬ তে এক লাফে পৌঁছায় ৮৬.২ শতাংশে। শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বে চার বিলিয়ন ডিভাইস এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে। যেটা কিনা সর্বমোট ডিভাইসের ৮৭.৭ শতাংশ। ধারনা করা হচ্ছে ২০২০ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৬ বিলিয়ন ডিভাইসে এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার হবে।

এখন কল্পনা করুন, আপনার তৈরি এপস ছয় বিলিয়ন ডিভাইসে ব্যবহার হচ্ছে। ভাবতেই অসাধারণ লাগে তাই নয় কি ? হ্যাঁ আপনার তৈরি সফটওয়্যার যদি সঠিকভাবে বাজারজাত করতে পারেন তাহলে এই বিশাল আকারের বাজারটি ধরা খুব সহজ কাজ বটে। আর প্রতিটি ডেভলপারদের আয় নির্ভর করে তাদের পণ্য ব্যবহারের উপর। যেহেতু এখানে রয়েছে বিশাল সংখ্যাক ব্যবহারকারী, তাই দক্ষ ডেভলপারদের তাদের আয় নিয়ে কখনো দুশ্চিন্তা করতে হবেনা।

অ্যাপ ডেভলপারদের চাহিদা

শুধু সাধারণত ব্যবহারকারীদের নিত্যনতুন এপসের চাহিদা ছাড়াও বিভিন্ন বাণিজ্যিক কোম্পানিতে রয়েছে এন্ড্রয়েড ডেভলপারদের চাহিদা। কোম্পানি অপারেশনের বিভিন্ন এপস, শেয়ার মার্কেটের এপস ছাড়াও ট্রেডিং, বিভিন্ন হিসাবনিকাশ আজকাল কর্মকতারা তাদের স্মার্ট ডিভাইসে দেখতে সাচ্ছন্দবোধ করে। ফলে তৈরি হয়েছে ডেভলপারদের চাহিদা। যদিও এন্ড্রয়েডের সবথেকে বড় বাজার হচ্ছে সাধারণ ব্যবহারকারী, তবে বাণিজ্যিক কোম্পানিতে এর চাহিদা হেলাফেলার মতো নয়।

Source: AndroidPub

এন্ড্রয়েড ডেভলপমেন্ট একটি পরিবর্তনশীল ফিল্ড

এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের সবথেকে বড় দিক হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসে এর ব্যবহার। টেলিভিশন, কম্পিউটার, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট, স্মার্ট গ্লাস, স্মার্ট ওয়াচ অথবা হোক ফিটনেস ট্যাকারে, কোন ধরনেই ডিভাইসে এর ব্যবহারে নেই পিছিয়ে। কারন এন্ড্রয়েড লিনাক্স ভিত্তিক হওয়াতে এটি ওপেনসোর্সের আওতাধীন। ফলে যে কোন কোম্পানি তাদের ডিভাইসে নিশ্চিন্তে বিনামূল্যে এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পারে। যেটা কিনা তাদের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম বানানো বা কেনার ঝামেলা থেকে মুক্তি দেয়। অন্যদিকে এন্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্ম  হওয়াতে অসংখ্য ডেভলপার ডিভাইসের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের এপস তৈরি করতে পারছে। ফলে আমাদের বিভিন্ন বিনোদনের মাধ্যমগুলোর দ্রুত উন্নয়ন ঘটছে।

যখন ইঞ্জিনিয়ারদের শেষ অবলম্বন

সফটওয়্যার ডেভলপমেন্টে নিজের ক্যারিয়ার গঠন করা সহজ কাজ নয়। অসংখ্য ইঞ্জিনিয়ার তাদের লক্ষ্যের ক্যারিয়ার যখন অর্জন করতে অক্ষম হয় তখন তাদের এই একটি পথ খোলা থাকে। সেটি হচ্ছে এন্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে ডেভলপমেন্ট। আপনি যদি এই দলের একজন হয়ে থাকেন, তাহলে বলবো আশাহত না হতে। বর্তমানে এন্ড্রয়েড ডেভলপমেন্টের উপর কাজ করে অসংখ্য ডেভলপার নিজেকে ভালো অবস্থানে নিয়ে গিয়েছে।

Source: AndroidPub

অ্যাডভান্স স্কিলের চাহিদা

একথা সত্য যে গত কয়েক বছর ধরে এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের উপর বিভিন্ন অনলাইন এবং অফলাইন কোর্স অসংখ্য ডেভলপার তৈরি করেছে। যাদের বর্তমান বাজারে রয়েছে বেশ চাহিদা। এই সকল বিভিন্ন কোর্স থেকে ট্রেনিং প্রাপ্ত ডেভলপার তাদের কর্মক্ষেত্রে ভালো ফলাফল দেখাতে পারলেও দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা এখানে সবসময়ই রয়েছে। তাই আপনি যদি নিজের কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে বিভিন্ন বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আপনাকে লুফে নিবে।

কিভাবে একজন এন্ড্রয়েড ডেভলপার হতে পারবেন?

টেকনিক্যাল এবং সফটওয়্যার উভয় ধরনের দক্ষতা একজন এন্ড্রয়েড ডেভলপার হতে হলে আপনার প্রয়োজন হবে। এন্ড্রয়েড এপস বিভিন্ন ইমুলেটর সফটওয়্যারের মাধ্যমে ম্যাক, উইন্ডোজ অথবা লিনাক্সে আপনি ব্যবহার করতে পারবে। তবে এক পর্যায়ে সত্যিকারের ডিভাইসেও পরীক্ষা করে দেখতে হবে আপনাকে। এন্ড্রয়েড ডেভেলপিং শুরু করতে অন্তত নিম্নোক্ত প্রোগ্রামিং এবং ট্যুলসে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

Source: AndroidPub

১. জাভা

এন্ড্রয়েড ডেভেলপিংয়ে সবথেকে বেসিক বিল্ডিং সফটওয়্যার হচ্ছে জাভা যেটা কিনা বর্তমান সময়ের সবথেকে পরিচিত এবং জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। একজন সফল ডেভলপার হতে হলে আপনাকে জাভার বিভিন্ন কনসেপ্ট যেমন ল্যুপ, লিস্টস, ভেরিএবেল এবং কন্ট্রোল স্ট্রাকচারের উপর ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।

২. এসকিউএল

মূলত ডেটাবেস ক্রম অনুসারে অর্গানাইজিং করা এবং বিভিন্ন তথ্য ডেটাবেজ হতে ব্যাক টু ব্যাক ইনপুট এন্ড আউটপুটের জন্যে এসকিউএল ব্যবহার করা হয়।

৩. এন্ড্রয়েড সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট কিট (এসডিকে) এবং এন্ড্রয়েড স্টুডিও

এন্ড্রয়েড ডেভলপমেন্টের  সবথেকে ভালো বিষয়টি হচ্ছে এর প্রয়োজনীয় টুলসগুলো বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এন্ড্রয়েড স্টুডিও এর সাহায্যে ডেভলপাররা প্রোগ্রামিং করে থাকেন। যেগুলো মূলত বিভিন্ন ধরনের কোড, এপসের বিভিন্ন প্যাকেজ এবং লাইব্রেরী যুক্ত করা হয়ে থাকে। আর এসডিকের মাধ্যমে স্যাম্পল কোড, সফটওয়্যার লাইব্রেরী যুক্ত করা ছাড়াও বিল্ড এবং পরীক্ষা করার কাজে ব্যবহৃত হয়। বলা বাহুল্য যে এই দুইটি টুলস মূলত এন্ড্রয়েড দ্বারা স্বীকৃত ইন্ট্রেগ্রেটেড ডেভলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট (আইডিই) যেটা কিনা এন্ড্রয়েড ডেভলপমেন্টের কাজে ব্যবহার করা হয়।

৪. এক্সএমএল

ডেটা বর্ণনা করতে প্রোগ্রামাররা এক্সএমএল ব্যবহার করেন। এছাড়া ইউজার ইন্টারফেস লেআউট আর ইন্টারনেট হতে ডেটা আদানপ্রদানের কোডিংও করা হয় এই ল্যাংগুয়েজের মাধ্যমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *