আপনি কি একজন মা? ঘরে বসে আয় করতে চান? আপনার কোন ডিগ্রি নেই কিংবা সার্টিফিকেট নেই? সংসারের কাজ করার পর বাইরে গিয়ে কাজ করার মতো সময় নেই? পরিবারের সার্বিক খরচ সামলানোর মতো সক্ষমতা অর্জন করতে চান? তাহলে আপনার জন্য রয়েছে কয়েকটি চমৎকার ব্যবসায়ের ধারণা যা আপনি ঘরে বসে করতে পারবেন।
একজন মাকে সর্বদা তৎপর থাকতে হয়। পরিবার নিয়ে সর্বদা চিন্তিত থাকতে হয় একজন মা কে। আর এখন নারী ক্ষমতায়নের যুগ। সারাদিন ঘরে বসে না থেকে আপনিও উপার্জন করতে পারেন ঘরে বসেই। কোন প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ছাড়া বা স্বল্প শিক্ষিত মায়েরা চাকরি পান না। চাকরি পেলেও বেতন খুবই স্বল্প হয় যা দিয়ে সংসারের ব্যয়ভার চালানো সম্ভব হয় না।
অথচ ঘন্টার পর ঘন্টা সময় দিতে হয় অফিসে। আর চিন্তা নয়, এই নিবন্ধে আলোচনা করব কয়েকটি আকর্ষণীয় ব্যবসায়ের ধারণা নিয়ে যার যেকোনো একটি ধারণা কাজে লাগিয়ে আপনি হতে পারবেন ধনী ও সফল। আসুন জেনে নিই ঘরে বসে কাজ করার কয়েকটি চমৎকার ব্যবসায়ের ধারণা সম্পর্কে।
অনুবাদক
বর্তমানে অনুবাদকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আপনি বাংলা ভাষাভাষী হয়েও যদি ইংরেজি, চিনা, ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিস বা জাপানি ভাষায় পারদর্শী হন তাহলে আপনাকেই খুঁজে নিবে চাকরি। কষ্ট করে সময় ব্যয় করে চাকরির পেছনে ছুটতে হবে না।
এমন অনেক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আছে যারা অনুবাদের কাজগুলো করার জন্য দক্ষ অনুবাদক খোঁজেন। এছাড়া পুলিশ স্টেশন, কোর্টে অনুবাদকের দরকার হয়। ভালো অনুবাদ জানলে আপনি ঘরে বসেই এই কাজ করে রোজগার করতে পারবেন কোনো ঝামেলা ছাড়াই। আপনার একটি প্রোফাইল তৈরি করে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে সাবমিট করতে পারেন যেখানে মানুষ অনুবাদের জন্য তাদের কাজ পোষ্ট করে। অনুবাদক হিসেবে পার্ট টাইম চাকরি কিংবা ফুলটাইম চাকরি করেও সন্তানকে সময় দিতে পারবেন।
ডাটা এন্ট্রি
একজন মা হিসেবে ঘরে সময় দিয়েও স্বাচ্ছ্যন্দে ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে পারেন। মায়েদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। এই চাকরি করতে কোন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নেই, ডিগ্রির প্রয়োজন নেই। শুধু টাইপিং জানলে ডাটা এন্ট্রির কাজ করা যায়। এই কাজের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ঘরে বসে কাজ করা যায়। আপনার বাচ্চা যখন ঘুমাবে বা খেলবে তখন আপনি এই কাজ করতে পারবেন।
শিশুতোষ বইয়ের লেখক
আপনার যদি সৃজনশীলতা থাকে তাহলে তাকে কাজে লাগানোর সময় এসেছে। আপনার অভিজ্ঞতার সাথে সংমিশ্রণ করে শিশুদের পড়ার উপযোগী বই লিখতে পারেন।
শিশুদের মানসিক বিকাশ, মূল্যবোধের দিকে লক্ষ্য রেখে সুন্দর গল্প লিখতে পারেন। এছাড়া নিজস্ব ওয়েবসাইট খুলে সেখানেও লেখা দিতে পারেন। শিশুতোষ লেখকরা প্রচুর লাভবান হতে পারেন যদি আপনার মধ্যে সেই প্রচেষ্টা থাকে। আপনার মধ্যে অন্য কোনো গুণাগুণ কিংবা সৃজনশীলতা থাকলেও তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারেন। ঘরে বসে কাজগুলো করলে চমৎকার আয়ের পাশাপাশি সন্তানকে সময় দিতে পারবেন।
রেসিপি ডেভেলপার
আপনি কি খেতে ভালবাসেন? বিভিন্ন ধরনের খাবার খান? তাহলে রেসিপি ডেভেলপার হিসেবে কাজ করতে পারেন। অনেক বই এবং ওয়েবসাইটে রুচিসম্মত রেসিপি চায়। আপনি সেখানে যোগদান করতে পারেন। এই অভিনব কাজটি আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন।
ট্যুর গাইড
আপনি কি ভ্রমণ করতে ভালবাসেন? প্রতিবছর অনেক ভ্রমণ করেন? তাহলে সেই ভ্রমণের নেশাকে পেশায় পরিণত করতে পারেন। নিজেকে ট্যুর গাইড হিসেবে প্রস্তুত করতে পারেন।
বিদেশী পর্যটকদের সাথে যোগাযোগ করতে হলে ভালো ইংরেজি জানতে হবে। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পর্যটকদের ধারণা দিতে পারেন। ট্যুর গাইড হিসেবে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট সময় ভাগ করে নিতে পারেন। ভ্রমণের ঐ সময়টুকু ছাড়া অন্য সময়ে সন্তান ও পরিবারকে সময় দিতে পারবেন।
সঙ্গীতের শিক্ষক
আপনি যদি ভালো গান জানেন তাহলে কলেজ ডিগ্রি ছাড়াই শুধু গান শিখিয়ে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন। আপনার বাসার একটি রুমে শিক্ষার্থীদের বসার স্থান করে দিতে পারেন।
সপ্তাহে দুই দিন অথবা তিনদিন গান শেখাতে পারেন। এই কাজের জন্য আলাদা কোন মূলধনের প্রয়োজন হয় না। অফিস ভাড়া নিতে হয় না। শুধু দক্ষতার প্রয়োজন হয়। ঘরে বসে চমৎকার আয় করার জন্য এটি উত্তম পথ।
নাচের শিক্ষক
আপনি কি নাচ জানেন? ছোট থেকে নাচের আগ্রহ আছে? কিংবা নাচকে ঘিরেই আপনার স্বপ্ন? তাহলে আজ থেকে নাচ থেকে আয় করা শুরু করুন।
শিক্ষার্থীদের বাসায় গিয়ে নাচ শেখাতে পারেন অথবা আপনার বাসায়ও নাচ শেখাতে পারেন। ধীরে ধীরে আয় বাড়লে নাচের স্কুল দিতে পারবেন। প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নাচের শিক্ষক দরকার হয়। চাইলে নাচের শিক্ষক হিসেবে যেকোনো স্কুলে যোগদান করতে পারেন।
উদ্যোক্তা
পড়াশুনা না জানলে কিংবা অল্পশিক্ষিত হয়েও উদ্যোক্তা হওয়া যায়। আপনি অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বর্তমানে বহু নারী অনলাইন ব্যবসায়ের দিকে অগ্রসর হয়েছে।
জুয়েলারি, পোশাক, মেকআপ সামগ্রীর ব্যবসা শুরু পারেন। কেউ কেউ শুধু নেইল পেইন্টের ব্যবসা করেও আয় করছেন অনেক টাকা। তাই অল্প পুঁজি নিয়েই শুরু করে দিন কাঙ্ক্ষিত ব্যবসা। শুরুতে একটু চড়াই উৎরাই পার করতে হতে পারে। লেগে থাকলে সফল হবেন। তবে খেয়াল রাখবেন যেকোনো ব্যবসায় অগ্রসর হন না কেন, সেবা ও পণ্যের মান যেন হয় ভালো। কারণ ব্যবসায়ের জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ হল সুনাম।