যে ৬ টি উপায়ে কাজের প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবেন

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই নাস্তা সেরে অফিসের জন্য বের হয়ে যেতে হয়। মাঝে রাস্তায় প্রচণ্ড জ্যাম, ধুলাবালি গরম সব পেরিয়ে যখন আপনি অফিসে প্রবেশ করেন,  ততক্ষণে কাজের প্রতি মনোনিবেশ করতে করতে বেশ সময় পার হয়ে যায়। তার মধ্যে যারা বাসে যাতায়াত করেন, তাদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। এছাড়াও বর্তমানে উবার,পাঠাওয়ের মাধ্যমে আপনার কর্মস্থলের জন্য বের হন না কেন, কর্মস্থলে পৌঁছতে পৌঁছতে মানসিক ক্লান্তি কাজের প্রতি মনোনিবেশ করতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

এছাড়াও সকাল সকাল সকাল  বা বিকেলে অফিসের জন্য বের হওয়ার আগে  অফিসের নানান রকম কাজের চাপ, একই সাথে একই সাথে সময় মতো অফিসে পৌঁছানোর তাড়া,  সব মিলিয়ে সকালের এই ঝক্কি ঝামেলা পেরিয়ে কর্মস্থলে পৌছিয়ে কাজে মনোনিবেশ বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।  

কিন্তু কর্মস্থলে পৌঁছে কাজে মনোযোগী হওয়াটা অনেক বেশি জরুরী। কেননা সকালের দিকে আপনি আপনি কাজের প্রতি যতোটা শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে  কাজ করতে পারবেন, অফিসের ঠিক শেষ সময়ে একই রকম মনোযোগ থাকবে না। আর তাই অফিসে পৌছিয়ে, কাজের প্রতি দিতে হবে পুরোদস্তর মনোযোগ। জেনে নিতে পারেন সহজ ৬ টি উপায়,যার ফলে কর্মস্থলে পৌঁছেই  কাজের প্রতি দিতে পারবেন পূর্ণ মনোনিবেশ।     

১. অনুপ্রেরণামূলক কিছু শুনুন

যখন আপনি বাসে করে বা গাড়িতে করে অফিসের জন্য রওনা হয়েছেন, তখন চেষ্টা করবেন মোবাইলে কিছু অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও অথবা অডিও রেকর্ডিং রাখতে। যেগুলো আপনার মানসিক শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে। ইতিবাচক কিছু রেকর্ডিং অথবা ভিডিও আপনার মনকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।  

source: chobibazar.com

একই সাথে আপনি যখন অফিসে পৌঁছাবেন, অনুপ্রেরণামূলক বাক্যগুলো  আপনাকে কাজের প্রতি মনোনিবেশ করতে সাহায্য করবে। এমনকি আপনি আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী বাছাই করে নিতে পারেন অনুপ্রেরণামূলক কিছু রেকর্ডিং বা ভিডিও, যা আপনার সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।     

তাই বাসে বসে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় সাথে অবশ্যই মোবাইলে কিছু অনুপ্রেরণামূলক  ভিডিও বা অডিও রেকর্ডিং রাখার চেষ্টা করবেন, যা আপনার মনকে সতেজ রাখবে এবং মানসিক শক্তি জোগাবে। 

২. প্রয়োজনীয় মেইল ড্রাফট করুন

অফিসে আসার সময় যতক্ষণ সময় বাসে বা গাড়িতে  বসে আছেন, সেই সময়টুকুর  সঠিক ব্যবহার করতে পারেন। কারণ অফিসের কাজের চাপে মেইল করার বিষয়টি অত্যন্ত পীড়াদায়ক হয়ে থাকে। কিন্তু আপনি যখন বাসে করে অফিসের জন্য রওনা হয়েছেন, সেসময় কিন্তু আপনি  আপনার প্রয়োজনীয় মেইলগুলো লিখে ড্রাফটসে সেইভ করে রাখতে পারেন। 

source: chobibazar.com

এতে করে আপনার অফিসে মেইলের পেছনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হবে না বরং ঐ সময়টুকুতে আপনি অন্য কোন প্রয়োজনীয় কাজ অথবা একটু বিশ্রাম করে নিতে পারেন।

ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে বড় বড় মেইল লিখে সেটা পাঠানো কিন্ত বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আপনি যদি আপনার অফিসে আসার পথেই আপনার প্রয়োজনীয় মেইলগুলো  ড্রাফটসে সেইভ করে ফেলতে পারেন, তাহলে আসার পথের রাস্তাটুকু আপনার কাছে বিরক্তিকর মনে হবে না। 

৩. নিজস্ব অর্জন নিয়ে ভাবুন 

আপনার সে সকল অর্জনগুলো, যা নিয়ে ভাবনা আপনার ক্লান্তি দূর করে দেয়, অফিসে আসার পথে সেগুলো নিয়ে ভাবুন। এই ইতিবাচক ভাবনাগুলো আপনার ক্লান্তি গুলো দূরে সরিয়ে রাখতে সহায়তা করবে। সেগুলো স্মরণ করে আপনার মোবাইল বা ডায়রিতে ছোট ছোট করে নোট করে ফেলতে পারেন।

 

 

 

source: chobibazar.com

এই অর্জনগুলো আপনার জীবনের চলার পথে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে,সেটা আপনিও জানেন। কিন্তু দীর্ঘদিন কাজের চাপে, সেগুলো বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যায়। আর তাই যেখানেই যান, অবসর সময়ে নিজের কথা লিখুন। ভালোমন্দ যা মনে হয় অথবা নিজের অর্জনগুলো ভেবে লিখে ফেলুন।  আপনার এই অভ্যাস আপনার ক্লান্তি দূর করতে সহায়তা করবে।    

৪. নিজের দক্ষতা বাড়ান এবং প্রতিষ্ঠানের খোঁজখবর রাখুন 

আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সেই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত খোঁজখবর রাখা, হয়তো কাজের ফাঁকে অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। অফিসে আসার সময় যে অবসর সময়টুকু পান সেই সময়ে অফিসের প্রয়োজনীয় মেইলগুলো চেক করে নিতে পারেন। এতে অফিসের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত জানতে পারবেন।

এছাড়াও শিক্ষণীয় কিছু বিষয় যেমন, কীভাবে সুন্দর করে মেইল লিখতে হয়, এমন আরো অনেক শিক্ষণীয় লিংক  বুকমার্ক করে রাখতে পারেন। এতে করে সহজেই আপনার দক্ষতা বাড়াতে পারবেন। আপনার নিয়মিত প্রতিষ্ঠানের খোঁজ রাখার এই অভ্যাসটি যেমন আপনার দক্ষতা বাড়াবে, তেমনি কর্মস্থলে এসে কাজের প্রতি মনোনিবেশ করতে সহায়তা করবে।        

৫. প্রতিদিনের কাজের তালিকা তৈরি করুন

প্রতিদিন অফিসে আসার পথে প্রয়োজনীয় কাজের তালিকা তৈরি করে ফেলতে পারেন। আজকে সারাদিন কী করবেন অথবা আবার কী করবেন না, কোন কাজটি করা খুব দরকার, আবার কোন কাজটি করার তেমন দরকার নেই, এধরনের কাজগুলোর তালিকা তৈরি করে ফেলতে পারেন। এ তালিকাটি আপনার রিমাইন্ডার হিসেবে কাজ করবে। অর্থাৎ সারাদিন কী কী করতে হবে, তা এই তালিকাটি আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিবে।     

source: chobibazar.com

এতে করে অফিসের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ যাত্রা আপনার কাছে বিরক্তিকর মনে হবে না। এই অভ্যাসটি আপনার অফিসে এসে কাজের প্রতি  মনোনিবেশ করতেও সহায়তা করবে।    

৬. কার্যকরী ভাবনা

অফিসে আসার পথে কোন ধরনের দুশ্চিন্তা করে মানসিক শান্তি নষ্ট করবেন না। এমন এমন ভাবনা নিয়ে মস্তিষ্কে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করবেন, যেগুলো  কার্যকরী ভাবনা হিসেবে কাজ করবে। আপনার অফিসের পরবর্তী মিটিং অথবা পরবর্তী কোন ধরনের প্রজেক্ট নিয়ে আপনি কাজে যাচ্ছেন, এসব নিয়ে ভাবতে পারেন। 

source: chobibazar.com

তাই অফিসে আসার পথে বিরক্তিকর জ্যাম, গরম যাই হোক না কেন, উপরোক্ত ছয়টি পন্থা অবলম্বনে আপনি খুব সহজেই মানসিক অস্বস্তি দূরে রেখে অফিসের কাজকর্ম করতে পারবেন। 

ফিচারড ইমেজঃ mic.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *