যেভাবে ব্যাংকে চাকরি পেতে পারেন

Attractive young woman using laptop working and on her finances

চাকরি যেন সোনার হরিণ। চাকরির পেছনে ছুটতে ছুটতে অনেকেরই বয়স পার হয়ে যায় তবুও চাকরি মেলে না। বিভিন্ন জনের মতামত, দর্শন বিভিন্ন রকম। একেক জনের চাকরির ক্ষেত্র ও পছন্দ একেক রকম। কেউ সরকারী চাকরি পছন্দ করেন, কেউ আবার বেসরকারী চাকরি পছন্দ করে। কেউ কেউ চাকরি না করে ব্যবসায়ে আত্মনিয়োগ করতে ভালোবাসেন। যে যাই করুক না কেন তার লক্ষ্য পূর্ব থেকে নির্ধারণ করে রাখতে হয়।

Photo: India Today

স্বপ্ন যদি হয় ব্যাংক তাহলে তা অর্জন করা মোটেও সহজসাধ্য নয়। কারণ বর্তমানের ব্যাংকের চাকরি পেতে হলে অসংখ্য প্রতিযোগীদের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে হয়। মেধার জোরে নিজের যোগ্যতাকে প্রমাণ করতে হয়। ব্যাংকে বিভিন্ন পদ রয়েছে। মেধা ও যোগ্যতা অনুসারে আপনি নিজের পছন্দনীয় পোস্টে আবেদন করতে পারবেন এবং উক্ত পোস্টের জন্য নির্বাচিত হতে পারবেন। জেনে নিন ব্যাংকে চাকরি পেতে হলে যা যা করতে হবে তা সম্পর্কে।

প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন ব্যাংকের কোন পোস্ট আপনার পছন্দ

ব্যাংকে চাকরি করতে হলে প্রথমে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কোন ব্যাংকে চাকরি করতে চান এবং ব্যাংকের কোন পোস্ট আপনার পছন্দ। কারণ ব্যাংকের বিভিন্ন পোস্ট রয়েছে। যেমন টেলার, ব্যবস্থাপক, হিসাব রক্ষক ইত্যাদি। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী পোস্টে আবেদন করুন।

Photo: YouTube

ব্যাংকের টেলারগণ ফ্রন্ট ডেস্কে বসে বিভিন্ন লেনদেন করে থাকে। তাদের গ্রাহক সামলানোর দক্ষতা থাকতে হয়। এই কাজটি ফুলটাইম এবং পার্টটাইমেরও হয়ে থাকে। ব্যাংকের ম্যানেজারদের অনেক দায়িত্ব থাকে যেমন কর্মীদের তত্ত্বাবধান, সকল হিসাব নিকাশ দেখা, সিডিউল তৈরি করা, লক্ষ্য অর্জন করা ইত্যাদি। ব্যাংকের হিসাবরক্ষকদের আর্থিক লেনদেন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। হিসাবরক্ষক হতে হলে একাউন্টিং, ফিন্যান্স ও এই ধরনের বিষয়ে অন্তত স্নাতক সম্পন্ন করতে হবে।

সার্টিফিকেট অর্জন করুন

ব্যাংকে চাকরি করতে হলে প্রথমে নিজেকে যোগ্য করুন। কারণ ম্যানেজার, হিসাবরক্ষক হতে হলে একাউন্টিং, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, ম্যানেজমেন্ট এ ন্যুনতম স্নাতক ডিগ্রী থাকতে হবে। টেলার হতে চাইলে এইচএসসি পাস করেও আবেদন করা যায়। তাই লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আপনার সার্টিফিকেট প্রস্তুত করুন কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগ্রহ করুন।

ছোট পোস্টকে অবহেলা নয়

আপনি যদি ব্যাংকের বড় পোস্টে চাকরি করতে চান তাহলে ছোট পোস্টকে অবহেলা করবেন না। কারণ এমনও হতে পারে বড় পোস্টে আবেদন করেও আপনি চাকরি পাবেন না, তবে অপেক্ষাকৃত ছোট পোস্টে আবেদন করে চাকরি পেয়ে যাবেন। এর অর্থ এই নয় টেলার পোস্টে চাকরি করলে কখনো বড় পোস্টে যেতে পারবেন না।

Photo: Canadian All Care College

কোনো একটি ব্যাংকে কিছুদিন চাকরি করলে দায়িত্ব, কাজ সম্পর্কে জানা যায়, মানুষের সাথে পরিচিতি বাড়ে। যার ফলে পরবর্তীতে এই অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগে।

সিভি তৈরি করুন

ব্যাংকের যেকোনো পোস্টে আবেদন করেন না কেন, কখনো সিভি অসম্পূর্ণ রাখবেন না। সিভি হতে হবে সঠিক তথ্যবহুল। সিভিতে নিজের সকল তথ্য সুন্দরভাবে লিখুন। সৃজনশীল গুণাগুণ, পাঠ্যবই বহির্ভূত কার্যক্রম, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কোথাও কাজ করলে তা উল্লেখ করুন।

Photo: Rigsby Search Group

ইতিপূর্বে কোথাও চাকরি করলে সে অভিজ্ঞতাও উল্লেখ করুন। এই ধরনের অভিজ্ঞতাগুলো আপনার সিভিকে অন্যান্য প্রার্থীদের তুলনায় এগিয়ে রাখবে।

আপনার পছন্দের ব্যাংকের অবস্থান

আমাদের দেশে বিভিন্ন ব্যাংক রয়েছে। বেসরকারী ব্যাংকগুলোতেও বছরে দুই একবার নিয়োগ দেওয়া হয়। আপনার পছন্দের ব্যাংকে চাকরি করতে হলে তার অবস্থান জেনে নিন। কোথায় কোথায় শাখা আছে, যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো কিনা তা যাচাই করুন। তাছাড়া বর্তমান সময়ে ব্যাংকের চাকরি পাওয়া সহজ নয়। তাই এলোপাথারি ভাবে সব জায়গায় সিভি দিয়ে রাখুন। তাছাড়া যেখানে সিভি দেবেন সেখানে কর্মরত টেলর, ব্যবস্থাপক কিংবা হিসাবরক্ষকের সাথে কথা বলতে পারেন। কিভাবে ব্যাংক জব পাওয়া যেতে পারে, উক্ত ব্যাংকের শাখা কোথায় আছে এবং আপনার যেসব প্রয়োজনীয় তথ্য জানা দরকার তা জেনে নিতে পারেন। তাছাড়া ইন্টারনেট থেকে যেসব তথ্য জানা যায় তা জেনে নিন।

ব্যাংকে আবেদন করুন

আপনি যে ব্যাংকে আবেদন করতে চান তার সম্পর্কে আগে থেকে জেনে নিন। ব্যাংকের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কৌশলসমূহ জেনে নিন। এমন ভাবে সিভি তৈরি করুন যেন উক্ত পোস্টের জন্য আপনি যোগ্য একজন প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হন। কভার লেটারে এমন কিছু লিখুন যেন তা পড়ে কর্তৃপক্ষ আপনাকে সবার চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়। কভার লেটার, সিভি যদি সঠিক ও তথ্যবহুল থাকে তাহলে আপনাকে ভাইভার জন্য ডাকবে।

Photo: afmedia.ru

আবার যদি এমন হয় আগে থেকে আপনি ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলে রেখেছেন, সে আপনাকে ব্যাংকের একটি পোস্টের জন্য রেফার করেছে তাহলে সিভি ও কভার লেটার নিশঙ্কোচে পাঠিয়ে দিন। কারণ অন্যদের তুলনায় আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। সিভি পাঠানোর পর হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে হবে না। সাক্ষাতকারের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। তাছাড়া কিছুদিন পর পর পুনরায় যোগাযোগ করতে হবে। কবে নাগাদ ইন্টারভিউ হতে পারে এই সংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য ফলোআপ জরুরী।

সাক্ষাতকারের জন্য প্রস্তুত হন

আপনি যদি সাক্ষাতকারের জন্য নির্বাচিত হয়ে যান তাহলে কিছু পূর্বপ্রস্তুতি নিন। আপনি চাইলে অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। সাক্ষাতকারে যাওয়ার আগে উক্ত ব্যাংকের যাবতী তথ্য জেনে নিন, সেই অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করুন এবং সঠিক ও উপযুক্ত পোশাক পরিধান করুন। সাক্ষাতকারের সময় হাসি খুশি, ভয়হীন, সাহসী থাকুন এবং বাচনিক যোগাযোগ রক্ষা করুন।

Photo: studentaffairscollective.org

সাক্ষাতকারের কিছুদিন পর পুনরায় ইমেইল পাঠাতে পারেন। তারা কর্মী নির্বাচন করেছে কিনা কিংবা কবে নাগাদ করবে তা সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *