ডিজিটাল মার্কেটিং প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। মেশিন লার্নিং এর মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জোগাড় (এআই) এবং সার্চের ক্ষেত্রে কণ্ঠস্বরের প্রয়োগ (ভয়েস সার্চ) বিষয়গুলোও এখন ক্রমবর্ধমান পর্যায়ে রয়েছে এবং আগামী বছরগুলোতে অবশ্যই এই বিষয়গুলো বিপণন কৌশলে প্রভাব ফেলবে। নতুন সব মার্কেটিং ট্রেন্ড বিষয়ে সবসময় অবগত থাকতে বিপণন বিশেষজ্ঞদের অনুসরণ করা যেতে পারে। এদের মধ্যে অনেকেই প্রায়ই তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিপণন ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয় সব বিষয়বস্তু, কার্যকরী কৌশল শেয়ার করে থাকেন যা আপনাকে আপডেট থাকতে সাহায্য করবে। আজকের লেখায় এমনই কয়েকজন বিপণন প্রভাবকদের ক্তহা তুলে ধরা হলো যারা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে নিয়মিত বিভিন্ন উপদেশ এবং টিপস্ শেয়ার করেন।
এজে আগারওয়াল
এজে আগারওয়ালের বৈশিষ্ট্য হলো প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডগুলোকে স্টার্টআপ হিসেবে বিবেচনা করায় উদ্বুদ্ধ করা। ২৬ বছর বয়সী এই তরুণ যে, শুধু আইবিএম এর মতো ব্র্যান্ডগুলোকে বিপণন কৌশলে সহযোগিতা করেছে তা-ই নয় বরং নিজের ব্লগেও এই বিষয়গুলো শিখিয়ে থাকেন। বিপণন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমানের কৌশলের জন্য আপনারও যদি কিছু পরামর্শের দরকার হয় তবে এযে আগায়য়ালের কন্টেন্টগুলো দেখতে পারেন।
জন ইউশি
তিনি হলেন এভ্রি ভাওয়েলের প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়াও তিনি মঞ্চ বক্তৃতায় অংশ নিয়ে থাকেন। এনপিআর (যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও) স্নাতক বক্তৃতার ক্ষেত্রে তার বক্তৃতাগুলোকে স্টিভ জবস ও শেরিল স্যান্ডবার্গের শ্রেষ্ঠ বক্তৃতাগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করেছেন। ইউশি আরও কাজ করেছেন এরিক শ্মিট, অ্যাডাম গ্র্যান্ট ও নীল স্ট্রসের সাথে। মূলত তাদের সাথে তিনি তাদের বেস্টসেলিং বইগুলোর বিপণন নিয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ইউটিউবের বিপণন ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন।
অ্যান লেউইনস
অ্যাডোবের বর্তমান প্রধান বিপণন কর্মকর্তা অ্যান লেউইনসে্র ৩০ বছরের বেশি সময়ের বিপণন অভিজ্ঞতা রয়েছে। অ্যাডোবে বিপণনের নেতৃত্ব দেয়ার পূর্বে তিনি ইন্টেলে বিপণনের উপ-সভাপতি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অ্যাডোব এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা কাজ করে বেশ কয়েকটি ডিজিটাল মার্কেটিং সফটওয়্যার সলিউশন নিয়ে কাজ করে। তাই এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুবাদে লেউইনস বিপণনের ভবিষ্যৎ মোড় বা প্রবণতাগুলো সনাক্ত করতে পারেন সহজেই। তিনি নিয়মিত তার টুইটার একাউন্টের অনুসারীদের সাথে বিপণনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কন্টেন্ট শেয়ার করে থাকেন। বিপণনের প্রবণতা বিষয়ক ছোটখাটো তথ্য যাদের জন্য প্রয়োজনীয় তাদের কাছে তিনি একজন ভালো উৎসই বলা চলে।
জোইয়েল কন্টার্টিস
২০১২ সালে যেসকল উদ্যোক্তারা একেবারে প্রথম দিকে সোশ্যাল মিডিয়া নগদীকরণের ধারার প্রবর্তন করেছিলেন তাদের মধ্যে জোইয়েল কন্টার্টিস একজন। বর্তমানে তিনি এখনকার সময়ের সফল সব সোশ্যাল মিডিয়া ব্র্যান্ডগুলো যে নীলনকশা ব্যবহার করে তার প্রণেতা হিসেবে পরিচিত।
অ্যান হ্যান্ডলি
অ্যান হ্যান্ডলি মার্কেটিং প্রফস এর চিফ কন্টেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ করেন। মার্কেটিং প্রফস্ হলো একটি মিডিয়া ব্র্যান্ড যা বিপণনকারীদের প্রয়োজনীয় সব উপায় বা সংস্থান দিয়ে সাহায্য করে। চিফ কন্টেন্ট অফিসার হিসেবে কর্তব্যরত থাকার পূর্বে তিনি ক্লিকজেড নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন যা একনিষ্ঠভাবে বিপণনের সেরা চর্চাগুলো নিয়ে কাজ করে থাকে। এছাড়াও অ্যান হ্যান্ডলি নিয়মিত নেতৃস্থানীয় ডিজিটাল মার্কেটিং সম্মেলনে বক্তৃতা দেন এবং তিনি তাঁর লেখা বইগুলোও রয়েছে বেস্টসেলারের তালিকায়। তার টুইটারে মোট অনুসারীর সংখ্যা ৪ লক্ষ এর বেশি। আর এই অনুসারীদের সাথে তিনি নিয়মিত উল্লেখযোগ্য সব মার্কেটিং কন্টেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলের বিভিন্ন উদাহরণ শেয়ার করেন।
ব্র্যায়ান ইভানস্
তিনি বিডিই ভেঞ্চারস্ নামের একটি দ্রুত বর্ধনশীল বিজ্ঞাপন ও বিপণন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়াও ব্র্যায়ান প্রতিষ্ঠা করেছেন ইনফ্লুয়েন্সিভ ডট কম (নতুন প্রজন্মের ডিজিটাল প্রকাশন যার পাঠক কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী এবং মুক্ত চিন্তাবিদ)।
জোয়েল কম
বিপণন বিশেষজ্ঞ জোয়েল কম একজন মূল বক্তা এবং উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করে থাকেন। এছাড়াও লেখক হিসেবে তাঁর সফলতার ঝুলিতে রয়েছে বেস্ট সেলারের খেতাব। তিনি তাঁর নিজস্ব ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার আগে ক্যারিয়ারের শুরুতে ইয়াহুর জন্য অনলাইন গেমস্ উন্নয়নের কাজ করেন। তিনি তাঁর টুইটার একাউন্টে নিয়মিত প্রয়োজনীয় ও অনুপ্রেরণামূলক কন্টেন্ট শেয়ার করেন। তাছাড়াও তৈরি করেন অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও যা তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং নিজের ওয়েবসাইটে শেয়ার করে থাকেন।
কিম গার্সট
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কৌশল নিয়ে যদি আপনি আগ্রহী হয়ে থাকেন, তবে কিম গার্সটকে অনুসরণ করতে পারেন। তিনি ছোটখাটো একজন ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তা যিনি তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ৫ লক্ষ অনুসারীদের সাথে বিভিন্ন রকম কার্যকরী উপদেশ দিয়ে থাকেন। তিনি মূলত কার্যকরীভাবে বিপণনকারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের জন্য সহজবোধ্য ব্লগ পোস্ট এবং ই-বুক তৈরি করে তা দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য অধিক পরিচিত।
নীল প্যাটেল
তিনি বেশ লম্বা সময় ধরেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন। তিনি কিসমেট্রিক্স ও ক্রেজি এগ এর সহ প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়াও তিনি নিয়মিত ব্লগ পোস্ট, ই-বুক ও ওয়েবিনার আকারে তার ওয়েবসাইট নীল প্যাটেল ডট কমে প্রয়োজনীয় সব কন্টেন্ট শেয়ার করার জন্য জনপ্রিয়। তাঁর কন্টেন্টগুলো সাধারণত ডিজিটাল মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং ও ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন সম্পর্কিত হয়ে থাকে। এছাড়াও উদ্যোক্তাদের জন্যও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
জে বেয়ার
অনুপ্রেরণামূলক মূল বক্তা এবং সহায়ক বিভিন্ন বইয়ের লেখক হিসেবে পরিচিত জে বেয়ার। এছাড়াও তিনি একজন পাকা মার্কেটিং প্রভাবক যিনি তার টুইটারের অনুসারীদের সাথে প্রয়োজনীয় এবং চিন্তাশীল কন্টেন্ট শেয়ার করেন। বেয়ার হলো কনভিন্স এন্ড কনভার্ট নামের একটি মিডিয়া ও পরামর্শ দাতা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকরী কাস্টমার সার্ভিস এবং ডিজিটাল মার্কেটিং কার্যক্রম তৈরি ও বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করে এই কোম্পানিটি। এছাড়াও বেয়ার পড়াশোনা করেছেন কীভাবে ব্র্যান্ডগুলো সেরা কাস্টমার সার্ভিস দেয়ার মাধ্যমে অসন্তুষ্ট ক্রেতা, ভোক্তাদের ব্র্যান্ডগুলোর ওপর সন্তুষ্ট ও বিশ্বস্ত রাখতে পারেন।
Feature Image Source: Morgan McKinley Hong Kong