অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কোনো কল্পকাহিনী নয়; অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের কয়েকটি কৌশল

আপনি কি কখনো ভেবেছেন পরিবারের সাথে কতটুকু সময় ব্যয় করেন আর অর্থের পেছনে কতটুকু সময় ব্যয় করেন? বর্তমান সময়ে আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকলে নানান ঝামেলার মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত করতে হয়। কষ্টের পাহাড় সমান বোঝা নিয়ে চলতে হয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সার্বিক দিক বিবেচনা করলে দেখা যায় পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য টাকার খুব প্রয়োজন। বলা হয়ে থাকে, টাকা হলো দ্বিতীয় ঈশ্বর।

{ "slotId": "2452885053", "unitType": "in-article" }

পৃথিবীতে টাকা ছাড়া কোন কাজই করা যায় না। আপনি হয়তো বলবেন টাকা ছাড়া ভালবাসা পাওয়া যায়। কিন্তু একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন তো টাকা ছাড়া আসলেই কি ভালবাসা পাওয়া যায়? ভালবাসায় ও স্বার্থ থাকে। টাকা না থাকলে পরিবারের সদস্যদের সাথে, মা-বাবার সাথেও মনোমালিন্য দেখা যায়। স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বিবাদ হয়।

অর্থ আয় করা এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করার মধ্যে পার্থক্য আছে। প্রচুর অর্থ আয় করলেও কখনো কখনো অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হওয়া যায় না। তবে অল্প আয় কিংবা পর্যাপ্ত আয়ের ব্যক্তি হয়ে আপনিও কিছু কৌশল অবলম্বন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হতে পারবেন। জানতে চান কিভাবে? নিম্নোক্ত আলোচনা পড়ে জেনে নিন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের কয়েকটি গোপন কৌশল সম্পর্কে।

অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বন্ধ করুন

ছবিসূত্রঃ pastinfo.am

যারা অধিক অর্থ আয় করেন তাদের মধ্যে অনেকে্র প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করার অভ্যাস আছে। টাকা জমাতে হলে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হতে হলে আজ থেকে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় করার অভ্যাস বন্ধ করুন। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, বিনোদন ইত্যাদি মৌলিক চাহিদাগুলোর যোগান দিতে অর্থের প্রয়োজন হয়। এর বাইরেও মাঝে মাঝে অর্থ ব্যয় হয়। তবে পরিমিত ব্যয় করুন। অপ্রয়োজনীয় খরচ করলে কখনো অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হতে পারবেন না।

{ "slotId": "", "unitType": "in-article", "pubId": "pub-6767816662210766" }

প্রতিমাসের খরচের বাজেট তৈরি করুন

ছবিসূত্রঃ Eventbrite

প্রতিমাসে সংসারে কোনো খাতে মোট কত টাকা খরচ হয় তার একটি বাজেট তৈরি করুন। আয়ের তুলনায় ব্যয় বাড়ানো যাবে না। আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্যতা বজায় রাখুন। প্রতিমাসে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি করলে অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে হবে। অর্থসংকটে ভুগতে হবে। তাই আগে থেকে বাজেট তৈরি করে রাখলে খরচ কম হবে। বাজেট তৈরি করার সময় আপনার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে তৈরি করতে পারেন।

ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ বন্ধ করুন

আপনি যদি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সমস্ত বিল পরিশোধ করে থাকেন তাহলে আজ থেকে তা বন্ধ করুন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করলে আপনার প্রয়োজনের অধিক ব্যয় হবেই। আপনার যদি এক মাসে কেনাকাটার বাজেট থাকে দশ হাজার টাকা, ক্রেডিট কার্ড সাথে থাকলে বিশ হাজার টাকার কেনাকাটাও হয়ে যেতে পারে। যেকোন কেনাকাটা করলে বা শপিংমল থেকে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে যেকোন পণ্য কিনলে তার মূল্য পরে পরিশোধ করা যায়।

ছবিসূত্রঃ 7ROI

আপনার কাছে এই পদ্ধতি অনেক সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যের মনে হতে পারে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পণ্য কিনলে প্রয়োজনের অধিক কেনাকাটা হয়ে যায়, শখের জিনিস কেনা হয়ে যায়। ব্যয় নিয়ন্ত্রণে থাকেনা। পরবর্তী মাসে অর্থনৈতি্ক টানা পোড়েনের মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত করতে হতে পারে। তাছাড়া কিছু কিছু কেনাকাটায় পরবর্তীতে মূল্য পরিশোধের শর্ত থাকে। সেক্ষেত্রে তারা বড় অঙ্কের সুদ বা ফি ধার্য করে। তাই ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকেটা বন্ধ করুন। চেষ্টা করুন নগদ টাকার বিনময়ে কেনাকাটা করতে।

সঞ্চয় বৃদ্ধি করুন

ছবিসূত্রঃ Hustler Money Blog

আপনার অবসর জীবন তখনই মধুময় ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে যখন আগে থেকে অর্থ সঞ্চয় করে রাখবেন। অর্থ সঞ্চয় করে না রাখলে বৃদ্ধ জীবনে সুখী হওয়া যায় না। অবসরের পরবর্তী সময়ে ঘুরাফেরা করার জন্যও নির্দিষ্ট অর্থের প্রয়োজন হয়। তাই চাকরি জীবন থেকে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট অংকের টাকা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে রাখুন। ছেলে- মেয়ের বিয়ে, ভ্রমণ কিংবা চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ মেটাতে পারবেন যদি পূর্বে থেকে সঞ্চয় করা থাকে। হঠাত করে ব্যবসায় বিপুল আর্থিক ক্ষতি হলে বা প্রজেক্টের ক্ষতি হলে পূর্বের সঞ্চয় দিয়ে তা কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে পারবেন। তাই সঞ্চয় করুন প্রতিমাসে।

বিজ্ঞতার সাথে বিনিয়োগ করুন

বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থের সম্প্রসারণ করা যায়। তবে বিনিয়োগ করতে হবে বিজ্ঞতার সাথে। যেকোন প্রজেক্টে বিনিয়োগ করলে লাভবান নাও হতে পারেন। ভালো প্রজেক্ট, সম্পদে বিনিয়োগ করতে পারেন। সকল বিনিয়োগে কম বেশি ঝুঁকি থাকে। চেষ্টা করুন ঝুঁকিহীন কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে।

ছবিসূত্রঃ Premium Finance Group

অপরিকল্পিত বিনিয়োগ কখনো কখনো দুঃখ ডেকে আনে। কোন লোভনীয় প্রস্তাবে পড়ে মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করবেন না। বিনিয়োগ করার পূর্বে ভালো করে জেনে নিন কোথায় বিনিয়োগ করছেন, কিভাবে লভ্যাংশ দিবে ইত্যাদি সম্পর্কে।

স্বর্ণে বিনিয়োগ করতে পারেন

বিনিয়োগ করতে চাইলে স্বর্ণে বিনিয়োগ করতে পারেন। স্বর্ণে বিনিয়োগ করলে দীর্ঘমেয়াদি সুফল ভোগ করা যায়। মুদ্রা বিক্রেতা কিংবা প্রাইভেট বিক্রেতাদের কাছ থেকে স্বর্ণের মুদ্রা সংগ্রহ করতে পারেন। স্বর্ণে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে ভালো মুনাফা পেতে পারেন।

উপরি পাওনাগুলো সঞ্চয় করুন

ছবিসূত্রঃ Black Enterprise

আপনি যদি কখনো অফিস বা অন্য কোন স্থান থেকে নগদ টাকা কিংবা অন্যকিছু বোনাস পান তাহলে সেই অর্থ সঞ্চয় করুন। অর্থ হাতে থাকলে খরচ হয়ে যাবে। তাই অতিরিক্ত খরচ থেকে বাঁচার জন্য বোনাস গুলো সঞ্চয় করে ফেলুন। তবে ব্যাংক একাউন্টের সার্বিক নিরাপত্তা যেন সঠিক থাকে তা সম্পর্কে নিশ্চিত হোন। প্রয়োজনে যেসকল ব্যাংক অধিক মুনাফা প্রদান করে সেসব ব্যাংকে সঞ্চয় করুন।

ধৈর্যশীল হন

অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হওয়ার জন্য ধৈর্য ধারণ করুন। এক দিনেই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করা যায় না। অতিরিক্ত ব্যায়ের পরিমাণ সংকুচিত করে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা সঞ্চয় করে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করতে পারেন। তবে এর জন্য থাকতে হবে বিশ্বাস ও ধৈর্য।

{ "slotId": "2452885053", "unitType": "in-article" }

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *