বিশেষ অনুষ্ঠান বা দিবসে প্রিয় মানুষকে খুশি করতে উপহার দেয়ার বিকল্প নেই। কিন্তু প্রিয় মানুষটি যদি বিশেষভাবে বইপ্রেমী হয় তবে তার জন্য অভিনব কী উপহার আইডিয়া আছে যা ব্যবহার করে তাকে চমকে দেওয়া যায়?
আজকের নিবন্ধে আমি এমন কিছু অভিনব উপহার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করব, যা বিশেষভাবে শুধুমাত্র বইপ্রেমী আপনজনের জন্যই প্রযোজ্য। এই উপহার আইডিয়া গুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই আপনার বইপ্রেমী আপনজনকে খুশি করতে পারবেন।
১. অনলাইন বই
নামটি শুনেই নিশ্চয়ই অভিনব লাগছে? নিশ্চয়ই ইতিপূর্বে এমন কোনো উপহার আপনি কোনো প্রিয়জনকে দেননি। আমরা সবাই জানি বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক বড় একটি অনুষঙ্গ। তাছাড়া আধুনিক মানুষ হিসেবে আপনার প্রিয়জন নিশ্চয়ই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
যদি আপনার প্রিয়জন একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হয়ে থাকে তবে তার জন্য উপহার হিসেবে আপনি একটি অনলাইন বই তৈরি করতে পারেন। এই বই তৈরিতে তাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন কথা এবং আপনাদের ছবি ব্যবহার করতে পারবেন। Bookemon.com নাম করে একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠান আপনাকে বিভিন্ন টেমপ্লেট এবং ফরমেট দিয়ে সহযোগিতা করবে। তাদের টেমপ্লেট ব্যবহার করে খুব কম খরচে আপনি একটি অভিনব অনলাইন বই তৈরি করে ফেলতে পারেন। নিঃসন্দেহে এই উপহারটি আপনার আধুনিক প্রিয় মানুষের মনোজগতকে অনেক বেশি আন্দোলিত করবে।
২. ব্যক্তিগত লাইব্রেরি কিট
এমন অনেক মানুষ আছে যারা নিজের বই অন্যের সাথে শেয়ার করতে পছন্দ করে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যা হয়, একবার কেউ বই নিলে তা আর ফেরত দিতে চায় না। এই সমস্যার সমাধান করতে একটি ব্যক্তিগত লাইব্রেরি কিট প্রয়োজন।
আপনি চাইলে আপনার প্রিয় মানুষকে একটি ব্যক্তিগত লাইব্রেরি কিট উপহার দিতে পারেন, যা ব্যবহার করে সে অন্য কাউকে বই দিলে তা ফেরত দেওয়ার তারিখও নির্ধারণ করে দিতে পারবেন। যেহেতু বই নেওয়া এবং ফেরত দেয়ার তারিখ আলাদা একটি কার্ডে স্টাম্প করা থাকবে, কাজেই বই ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে আর কোনো অজুহাত চলবে না।
সুতরাং আপনার যদি এমন কোনো বিরল উদর মানসিকতার বইপ্রেমী বন্ধু থেকে থাকে, যে অন্যদের সাথে নিজের বই শেয়ার করতে পছন্দ করে তার জন্য আপনি একটি ব্যক্তিগত লাইব্রেরি কিট উপহার দিতে পারেন। নিঃসন্দেহে আপনার এ উপহার তার একটি বিরাট সমস্যার সমাধান করে দিবে এবং স্বভাবতই এই উপহার তাকে খুশি করবে।
৩. লাইব্রেরি কার্ড
বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি লাইব্রেরির পাশাপাশি বর্তমান সময়ে অনেকগুলো বেসরকারি লাইব্রেরি সৃষ্টি হয়েছে, যেসব লাইব্রেরি একই সাথে বই বিক্রয় কেন্দ্রও। আধুনিক এসব লাইব্রেরির সদস্য হলে আপনি ইচ্ছামত সেখানে বসে বই পড়তে পারবেন। এমনকি মন চাইলে কিনে নিতে পারবেন।
এই লাইব্রেরির সাথে অন্যান্য বই বিক্রয় কেন্দ্রের মৌলিক তফাৎ হলো, অন্য জায়গায় আপনি দীর্ঘক্ষণ বই পড়তে পারবেন না। বই পড়তে হলে আপনাকে শুরুতেই তা কিনে নিতে হবে। কিন্তু লাইব্রেরি সুবিধা থাকা বই বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে সদস্যতা গ্রহণ করে আপনি দীর্ঘ সময় বই না কিনেও পড়তে পারবেন।
আপনি চাইলে আপনার বইপ্রেমী বন্ধু বা প্রিয় মানুষকে এমন একটি লাইব্রেরী কার্ড উপহার দিতে পারে। আপনি চাইলে এক বছরের খরচ পরিশোধ করে লাইব্রেরি কার্ডটি আপনার প্রিয় মানুষকে উপহার দিতে পারবেন। নিঃসন্দেহে এই উপহার আপনার প্রিয় মানুষকে অনেক বেশি খুশি করবে।
৪. বই পড়ার বিশেষ মোমবাতি
বইপ্রেমীরা জানে কোন বই কেমন পরিবেশে পড়তে হয়। কোনো রহস্য উপন্যাস, ভূতুড়ে গল্প, বা অতীত কালের স্মৃতি সম্বলিত কোনো বই পড়তে উপযুক্ত পরিবেশ লাগে। এমন বই পড়ার জন্য মোমবাতির আলো একটি আদর্শ উপাদান।
আপনি চাইলে আপনার বইপ্রেমী বন্ধুকে বই পড়ার জন্য এমন বিশেষ মোমবাতি উপহার দিতে পারেন। সাথে মোমবাতি ধরে রাখার বিশেষ ধারকও উপহার দিতে পারেন। এমন একটি উপহার পেলে আপনার বইপ্রেমী বন্ধু তার রহস্য উপন্যাস পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে সমর্থ হবেন।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন, আপনার প্রিয় মানুষের বই পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়ার মাধ্যমে আপনি তার কতটা ভালবাসা পেতে চলেছেন। কাজেই অভিনব উপহার আইডিয়া হিসেবে প্রিয় মানুষকে একটি বিশেষ বই পড়ার মোমবাতি এবং তার ধারক উপহার দিন।
৫. নোটপ্যাড
নোটবুক বলতে সাধারণত আমরা দৈনন্দিন বিভিন্ন জিনিস লিখে রাখার সাদামাটা নোটবুককে বুঝি। কিন্তু আপনি কি জানেন বাজারে অভিনব সব নোটপ্যাড বিক্রি হয়? যে নোটপ্যাডে টু-ডু লিস্ট, চেকলিস্ট, ছোট ছোট নোট, ফোন নাম্বার, বিশেষ রিমাইন্ডার লিখে রাখা যায়। এই ইলেকট্রিক ডিভাইস সময়মতো আপনাকে সবকিছু স্মরণ করিয়ে দেয়।
আপনি চাইলে প্রিয় মানুষের জন্য এমন একটি নোটপ্যাড উপহার দিতে পারেন, যা তার দৈনন্দিন জীবনকে আরো বেশি সহজ, স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং নিয়মানুবর্তী করে তুলবে। নোটপ্যাড উপহার শুধুমাত্র বন্ধু নয়, বাবা, মা, ভাই, বোনসহ পরিবারের যে কাউকে দেওয়া যেতে পারে। সুতরাং আপনজনকে একটি নোটপ্যাড উপহার দিন, আর তার প্রিয় পাত্র হয়ে উঠুন।
উপহার সবাই প্রিয় মানুষকেই দেয়। তাই উপহারের মান বা দাম মুখ্য বিষয় নয় মুখ্য বিষয় হলো প্রিয় মানুষের খুশি। সুতরাং যে উপহারই দিন না কেন, তা যেন অধিক ভালোবাসার সাথে প্রস্তুত করা হয়। প্রিয় মানুষটি আপনার উপহার পেয়ে যেন বুঝতে পারেন আপনি কতটা মনোযোগ দিয়ে যত্ন করে তার জন্য এই উপহার প্রস্তুত করেছেন।