বলতে পারেন, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতনের চাকরি কোনগুলো? সবচেয়ে বেশি সেলারি পাওয়া যায় যে চাকরিগুলোতে তা জানলে হয়তো আপনি অবাক হবেন। আপনি হয়তো এতদিন এসব চাকরিকে এতটা গুরুত্ব দেননি। আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হোক বা না হোক এমন কিছু চাকরি আছে যেখানে সবচেয়ে বেশি বেতন পাওয়া যায়। বিখ্যাত ফোর্বস ও ফরচুন ম্যাগাজিন অনুসন্ধান করে এমন কিছু চাকরির কথা জানাবো আজ।
শল্য চিকিৎসক বা সার্জন
সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি বেতন পাচ্ছেন শল্য চিকিৎসক বা সার্জনরা। একজন চিকিৎসক গড়ে বাৎসরিক ৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার বা তার কাছাকাছি বেতন পেয়ে থাকেন। শুধু মার্কিন কেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকরাও কি কম রোজগার করেন? আমাদের দেশে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা সবচেয়ে বেশি বেতন পেয়ে থাকেন।
সিইও বা প্রধান বির্বাহী কর্মকর্তা
মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীরা সর্বোচ্চ বেতন পাওয়ার দিক থেকে অনেকের চেয়ে এগিয়ে আছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ বা কোম্পানীর প্রধান নির্বাহী কর্তা প্রায় ২ লাখ মার্কিন ডলার বেতন পেয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরা গড়ে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা মাসিক বেতন ভাতা পেয়ে থাকেন। তবে শুধু বেতনের অঙ্ক দেখলে চলেবে না, প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জের কথা বিবেচনা করলে এই বেতন ভাতা পাওয়ার দবি তারা রাখেন।
মনোবিজ্ঞানী
ফোর্বসের হিসাব মতে, আমেরিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া চাকরিজীবী হলেন মনোবিজ্ঞানীরা। ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান মতে, তারা গড়ে বাৎসরিক ১ লাখ ৮১ হাজার মার্কিন ডলার সেলারি পেয়ে থাকেন। অবশ্য কেবলমাত্র ডক্টর অব মেডিসিন ডিগ্রীধারীরাই এমন সেলারি পেয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানসিক রোগ, বিশেষ করে সিদ্ধান্তহীনতা, হতাশা, পারিবারিক বিচ্ছিন্নতার কারণে মনোবিজ্ঞানীদের চাহিদা অনেক বেশি।
এক্ষেত্রে অবশ্য বাংলাদেশের বাস্তবতা ভিন্ন। তাই এদেশে মনোবিজ্ঞানীদের এতটা কদর নেই।
পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার
এক জরিপ মতে, পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়াররা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৬ষ্ঠ সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া চাকরিজীবী। মার্কিন বাজারে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারের চাহিদা বেশ। তারা গড়ে বাৎসরিক ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার বেতন পান।
ডাটা সায়েন্টিস্ট
ডাটা সায়েন্টিস্টের চাহিদা এখন অনেক। মানুষের দৈনন্দির জীবন এখন অনেকটা ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে উঠেছে। ইন্টারনেটের বিশাল দুনিয়া নিয়ন্ত্রণে থাকে অসংখ্য ডাটা সায়েন্টিস্টের হাতে। তাই এই পেশায় সম্ভাবনা অনেক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন ডাটা সায়েন্টিস্ট বাৎসরিক প্রায় দেড় লাখ মার্কিন ডলার বেতন পেয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ এখন ডিজিটালাইজেশনের পথে। আমাদের সবকিছু ক্রমশ ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। খুব দ্রুত এই পেশার চাহিদা বেড়ে যাবে বাংলাদেশেও। তাই আগ্রহীরা হয়ে উঠতে পারেন ডাটা সায়েন্টিস্ট। কেননা কোনো বড় প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হতে যে অভিজ্ঞতা লাগে এই পেশায় তত অভিজ্ঞতা লাগে না। ভালোভাবে কাজ জানাটাই আসল।
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার
শুরুতেই বলে রাখি যতই ভাল বেতন হোক এই পেশায় কেউ আগ্রহী হয়ে উঠবেন না। কেননা বিমানের আধুনিকায়ন হচ্ছে খুব দ্রুত। তাই ক্রমশ সবকিছু সয়ংক্রিয় হওয়ার এই পেশার চাহিদা কমে এসেছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যারা এখনও এই পেশায় আছেন তাদের বেতন বিস্ময় জাগানো। এই পেশায় বাৎসরিক আয় ১ লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ মার্কিন ডলারের মতো।
ফার্মাসিস্ট
সর্বশেষ যে পেশার কথা বলতে যাচ্ছি তা যেমন উচ্চ বেতনের, তেমনি চাহিদা সম্পন্ন। মানুষ যতদিন আছে ততদিন ঔষধ লাগবে, আর ঔষধ তৈরিতে দক্ষ ফার্মাসিস্ট লাগবেই।
এই পেশায় চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এই বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী দিচ্ছে। বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ডের যে কেউ চাইলে এই বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করে উজ্জল ভবিষ্যৎ গড়তে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন ফার্মাসিস্টের বাৎসরিক বেতন প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। আমাদের দেশেও নেহাত কম নয়।