ইউটিউব কনটেন্টের মান এবং সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা যেভাবে বাড়ানো যায়

একটি নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুলতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগে। কিন্তু এই চ্যানেলটি সফল করে তুলতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়। অবশ্য এই সময় ও সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে ভিডিওর বিষয়বস্তু এবং মানের ওপর।

{ "slotId": "2452885053", "unitType": "in-article" }

ইউটিউব যেহেতু সম্পূর্ণ ফ্রি, তাই ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলেই অনেকে তার সকল শখ ও সৃজনশীলতা প্রদর্শন  করতে শুরু করে দেয়। তারা ভাবে, বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল ভিডিও  তাদের চ্যানেলকে সফল করে তুলবে।

photo: app quests

অথচ তারা জানেই না, একই চ্যানেলে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট আপলোড করলে সেই চ্যানেল কোনো বিশেষ ক্যাটাগরির হয়ে ওঠে না। যার ফলে খুব দ্রুত সাফল্য আসে না। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ইউটিউবে সফল্যের জন্য কনটেন্টের ধরন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাথে সাথে প্রয়োজন পড়ে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়ানোর। সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা যত বৃদ্ধি পাবে, ভিডিওর ভিউ আনুপাতিক হারে ততো বৃদ্ধি পাবে।

যারা কনটেন্টের মান ও সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা নিয়ে দুঃচিন্তায় আছেন, আজকের নিবন্ধ তাদের জন্য। আজকের নিবন্ধে ইউটিউব কনটেন্টের ধরন এবং সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করব।

{ "slotId": "", "unitType": "in-article", "pubId": "pub-6767816662210766" }

কনটেন্ট তথা বিষয়বস্তু এবং দর্শক-শ্রোতা

ইউটিউবে যে কোনো কনটেন্ট আপলোড করলেই তা দিয়ে সাফল্য আসে না। আপনাকে সবসময় অভিনব এবং সুনির্দিষ্ট কনটেন্ট আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে হবে, এবং নির্দিষ্ট শ্রেণীর দর্শকের দিকে মনোযোগ রাখতে হবে।

সুতরাং আপনি যদি এখনও নিজের ইউটিউব চ্যানেলের সুনির্দিষ্ট কনটেন্ট আইডিয়া ডেভেলপ করতে না পারেন, তবে আপনার জন্য সাফল্য পাওয়া খুবই কঠিন। সুতরাং আজই নিজের চ্যানেলের স্বতন্ত্র কনটেন্ট নির্ধারণ করুন, এবং সুনির্দিষ্ট একশ্রেণীর দর্শকের কথা মাথায় রেখে সব কনটেন্ট তৈরি করুন।

photo: abijita

অবশ্য শুরুতে আপনাকে কঠিন সময় পার করতে হবে। কেননা প্রথমেই আপনি আশানুরূপ দর্শক এবং সাবস্ক্রাইবার পাবেন না। কিন্তু এ সময় ধৈর্য হারালে চলবে না। মনে রাখতে হবে, আপনি সুনির্দিষ্ট এক শ্রেণীর দর্শক তৈরি করতে চান, যারা জেনে বুঝে আপনার চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করবে, এবং আপনার সব আপডেট দেখার ব্যাপারে আগ্রহী থাকবে। প্রারম্ভিক কঠিন অবস্থা পার করতে পারলেই আপনি খুব দ্রুত সাফল্যের মুখ দেখতে পাবেন। কেননা ইউটিউবের অ্যালগরিদম এমনভাবে সাজানো যে, নির্দিষ্ট শ্রেণীর দর্শকের কাছে নির্দিষ্ট শ্রেণীর ভিডিও সাজেশন দেওয়া হয়। সুতরাং ক্রমাগত আপনি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ করে গেলে অচিরেই বিপুলসংখ্যক সমমনা দর্শক শ্রোতা পেয়ে যাবেন, যাদের সিংহভাগ আপনার চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করবে। একবার সাবসক্রাইবার অর্জন শুরু হলে তা খুব দ্রুত চক্রবৃদ্ধির হারে বাড়তে থাকবে।

নির্দিষ্ট কনটেন্ট দিয়ে চ্যানেল সাজানো 

আগেই বলেছি ইউটিউবে সাফল্যের জন্য একটি চ্যানেলে সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করাই উত্তম। কিন্তু অনেকে আছে, যারা চ্যানেল খুলে বিভিন্ন ধরণের ভিডিও আপলোড করে। আপনি যদি ইতোমধ্যে একই চ্যানেলে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও আপলোড করে থাকেন, তবে এখনই অপ্রয়োজনীয় এবং চ্যানেলের সিংহভাগ ভিডিওর সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভিডিওগুলো সরিয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে অপ্রয়োজনীয় ভিডিওগুলো প্রাইভেট করে দিতে পারেন, অথবা সম্পূর্ণভাবে চ্যানেল থেকে ডিলিট করে দিতে পারেন। এতে আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বা এসইওর ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না। বরং নতুন দর্শকের কাছে আপনার চ্যানেলের গ্রহণযোগ্যতা আরো বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া পূর্বের সাবস্ক্রাইবারদের কাছে আপনার চ্যানেল নিয়ে সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর হয়ে যাবে।

photo: 9to5mac

ভিডিও ডিলিট অথবা প্রাইভেট করতে আপনার ব্রাউজারে ইউটিউবের পেজ ওপেন করে ডানদিকে আপনার চ্যানেলের প্রোফাইলে ক্লিক করুন। এখান থেকে ক্রিয়েট স্টুডিও (create studio) তে প্রবেশ করুন। সেখানে গেলে আপনি চ্যানেলের ড্যাশবোর্ডে পৌঁছে যাবেন। ড্যাশবোর্ডের বামদিকে ভিডিও ম্যানেজারে (video manager) ক্লিক করুন। এখান থেকে আপনার প্রয়োজনীয় ভিডিওটি এডিট করে প্রাইভেট অথবা সম্পূর্ণভাবে ডিলিট করে দিতে  পারবেন।

ভিডিও প্রাইভেট করতে নির্দিষ্ট ভিডিওর এডিট অপশনে প্রবেশ করুন। তারপর থাম্বনাইলের ঠিক নিচে পাবলিক অপশনটি দেখতে পাবেন। পাবলিকের নিচের দিকে নির্দেশিত তীর চিহ্নে ক্লিক করলে পাবলিক (public), আনলিস্টেড (unlisted) এবং প্রাইভেট (private) নামে তিনটি অপশন পাবেন। এখান থেকে প্রাইভেট সিলেক্ট করে পেইজের ডান দিকে সেভ চেঞ্জেস (save changes) অপশনে ক্লিক করুন। আপনার ভিডিওটি প্রাইভেট হয়ে যাবে। ভিডিও ডিলিট করতে ভিডিও ম্যানেজারে যাবার পর, নির্দিষ্ট ভিডিওর পাশে নিচের দিকে তীর চিহ্নে ক্লিক করে ডিলিট সিলেক্ট করলেই ভিডিওটি ডিলিট হয়ে যাবে।

photo: tubular insights

তবে যেসব পুরনো ভিডিও অনেক বেশি দর্শক ও শ্রোতারা দেখেছেন এবং মন্তব্য করেছে সেসব ভিডিও ডিলিট করার প্রয়োজন নেই। কেননা নতুন ভাবে আপনি যে কাজ করছেন, সে অনুযায়ী আপনার চ্যানেলের এসইও হবে। সুতরাং অযথা পূর্বে আপলোড করা সফল ভিডিওগুলো ডিলিট করার দরকার নেই।

সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর কৌশল

ইউটিউবে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়ানোর নানান কৌশল আছে। তবে একটি প্রকাশিত ভিডিওর সাথে থাকা নানান ফিচার ব্যবহার করেও ইউটিউবে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়ানো যায়। যেমন: প্রকাশের সময় ভিডিওর বিবরণী তথা ডেসক্রিপশন বক্সে চ্যানেল সাবস্ক্রিপ্সনের লিংক শেয়ার করতে পারেন। এমনকি শুধু সাবস্ক্রিপ্সন লিংক শেয়ার করা নয়, নিশ্চিতভাবে সাবস্ক্রাইব করানোর জন্য বিশেষ লিংক ব্যবহার করা যেতে পারে। কেউ এই লিংকে প্রবেশ করলে ইউটিউব তাকে তাৎক্ষণিক সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করার একটি বিশেষ নোটিফিকেশন দেখাবে। এর জন্য প্রথমে অ্যাড্রেস বারে থাকা চ্যানেলের লিংক কপি করুন। তারপর লিংক থেকে ভিউ এজ সাবস্ক্রাইবার  (?view_as=subscriber)  অংশটি তুলে দিয়ে ?sub_confirmation=1 অংশ জুড়ে দিন। শুধু ভিডিওর বিবরণীতে নয়, ভিডিওর নিচে প্রথম মন্তব্যের ঘরে একটি পিন কমেন্টের মাধ্যমেও সাবস্ক্রিপ্সন লিঙ্ক শেয়ার করতে পারেন।

photo: seoclerk

এছাড়া ভিডিওর শেষে ‘ইন্ড স্ক্রিন অ্যান্ড এনোনেশনস’ (End screen & Annotations) এবং কার্ডসে (Cards)  সাবস্ক্রিপশন লিংক শেয়ার করতে পারেন। এভাবে একটি ভিডিওর সাথে থাকা সম্ভাব্য সব রকম সুযোগসুবিধা ব্যবহার করে আপনি চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়াতে পারবেন। তবে চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর সর্বোত্তম উপায় হল, একটি চ্যানেলে একই ক্যাটাগরির ভিডিও ধৈর্য ধরে ক্রমাগত আপলোড করে যাওয়া। এভাবে কাজ করলে একসময় সাফল্য আসবেই।

{ "slotId": "2452885053", "unitType": "in-article" }

ফিচারড ইমেজঃ retroepicgames.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *