নিজের সেলস পেইজ, প্রচারমূলক ব্লগ পোস্ট, টুইটার বা ফেসবুকে কোনো বই সংক্রান্ত আপডেট লিখতে শুরু করার আগে আপনাকে অন্য একটি বড় কাজ করতে হবে। সেটি হলো আপনাকে অন্যের কথা শুনতে হবে, বা অন্যভাবে বললে, আপনাকে অন্যের কথা বুঝতে হবে। রবার্ট ব্রুস তার কপিব্লগার পোস্টে এটি খুব ভালভাবে জানিয়েছেন, কীভাবে সত্যিকারের দুর্দান্ত কপিরাইটার হবেন, যেখানে তিনি আপনাকে শোনার জন্য তিনটি মূল উপায় সম্পর্কে লিখেছেন। তিনি বলেন, “আমি বহু বছর আগে এই পরামর্শটি পেয়েছিলাম এবং তখন থেকেই আমি অসংখ্য লোকের কাছ থেকে শুনে এসেছি।” তাই আপনাকেও নিজের কাজের অগ্রগতির জন্য জানতে হবে।
দুর্দান্ত কপিরাইটার হতে হলে আগে শুনতে হবে; image source: blog.sendlane.com
গ্রন্থকারের কথা
হয়তো আপনার দলের কেউ একটি বই বিক্রির জন্য তৈরি করছে। হয়তো আপনি অন্যের লেখা ইবুকে বিক্রয় করছেন। অথবা হয়তো আপনি নিজেই কোনো বইয়ের লেখক। এসব ক্ষেত্রে যখন আপনি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোনো বইয়ের কাজ করেন; আপনাকে যে ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়, তা হলো-
১. কেন আপনি এই বইটি তৈরি করতে চান?
২. কাদের উদ্দেশ্যে?
৩. এই বইয়ের উপকারিতা কী?
৪. কীভাবে আপনি এটি ব্যবহার করবেন?
৫. আপনার বই কেন একই ধরনের অন্য বইয়ের চেয়ে আলাদা?
উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়েই জানা যাবে আপনার অডিয়েন্সদের জন্য লেখাটি উপযুক্ত কি-না এবং এটি কিভাবে বাজারজাত করা যায় তা ঠিক করতেও আপনার জন্য সুবিধা হবে।
কাজের অগ্রগতির জন্য জানতে হবে- গ্রন্হকারের কথা; image source: iconsulting.org.uk
আবার আপনি যদি অন্যের অনুমোদিত কোনো বই বা লেখার প্রচার করে থাকেন, সেক্ষেত্রে প্রথমে আপনি বইটির নির্মাতার সাথে কথা বলুন। যদি আপনি সেটি না করতে পারেন, তবে আপনি লেখাগুলোর বিক্রয় অনুলিপি, তাদের রচনা সম্পর্কে লেখক নিজে যা যা লিখেছেন এবং অন্য কাউকে সাথে তিনি যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তা দিয়ে আপনার কপির প্রমোশন করুন। অর্থাৎ ব্যক্তি যেই হোন না কেন, পণ্যের মালিকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বুঝতে চেষ্টা করলেই আপনার সফলভাবে লেখার কাজে অন্তর্ভুক্ত হতে সুবিধা হবে।
পণ্যের মালিকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বুঝতে চেষ্টা করলেই আপনি সফল; image source: jeffbullas.com
আপনার অডিয়েন্সের কথা
যেকোনো পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে পণ্যের ভোগকারীদের কথা শোনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি পণ্য তৈরি শুরু করার আগেই এই কাজটি করুন। অর্থাৎ বই লেখার আগেই, আপনি আপনার পাঠকদের চাহিদা এবং চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে অবগত থাকুন এবং তাদের ব্যবহৃত ভাষাটি উপলব্ধি সে সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি অর্জন করুন।
লেখার আগে পাঠকদের চাহিদা এবং চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে অবগত থাকুন; image source: sheroes.com
যখন আপনি বইয়ের বিক্রয় কপি লিখেছেন, আপনি নিজেকে এই প্রশ্নগুলো কিছু জিজ্ঞাসা করুন, এই বইয়ের পাঠক কে? এই বইয়ের চাহিদা কাদের আছে? তাদের চ্যালেঞ্জ কী? কীভাবে তারা এই ধরনের চিন্তা ভাবনা প্রকাশ করতে চায় – এজন্য তাদের পছন্দের ভাষা কী? যেমন বাংলাদেশের মানুষ পাঠক হিসেবে রুচিশীল শুদ্ধ বাংলা সাহিত্যের প্রতি আগ্রহী। আসলে পাঠকের জন্য বই লিখে তাদের মন ছুঁয়ে তাদের চাওয়া পাওয়ার হিসেবটা বুঝতে হবে আগেই। পাশাপাশি নতুন লেখায় সেই চেষ্টা বজায় রাখতে হবে।
বাংলাদেশের পাঠক রুচিশীল শুদ্ধ বাংলা সাহিত্যের প্রতি আগ্রহী; image source: dhskatribune.com
আপনার প্রতিযোগীদের কথা
অন্য গ্রন্হকারেরা আলোচনায় কী নিয়ে এসেছে এবং কীভাবে তারা তাদের লেখা বিক্রি করছে তা জানতে পারলে আপনি সত্যিই আপনার কাজকে গুছিয়ে নিয়ে যেতে পারেন বহুদূর। বইবাজারে যারা আপনার সাথে প্রতিযোগিতায় আছে তাদের চলমান বইগুলো, তাদের প্রোডাক্ট লঞ্চ ইভেন্ট বা এমনকি তাদের সোশ্যাল মিডিয়াও আপনাকে অনুপ্রাণিত করতে পারে। এজন্যই আপনাকে চোখ কান খোলা রেখে শুনতে হবে লেখকদের কথাও। তারা কেমন করে টিকে আছে এই প্রতিযোগিতায়।
আপনাকে শুনতে হবে লেখকদের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার কথা; Image source: lxrmarketplace.com
সর্বোপরি আপনি বা অন্য কেউ যখনই বই বাজারজাত করার চিন্তা করছেন তখন থেকেই অভ্যাস গড়ে তুলুন চলমান চাহিদার, লেখনীর, ভাষার, শব্দের, আইডিয়ার কথা শোনার বা খোঁজ রাখার। আপনার শ্রোতার কথা শুনুন সাথে আপনার প্রতিযোগী এবং সহযোগীদেরও বাদ না দিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন। তাহলেই আপনি পাঠকদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারবেন।
Feature image source: goodchoicesgoodlife.org