আপনি হয়তো এমন অনেক আর্টিকেল পড়েছেন যার মুখ্য কথাই হলো কিভাবে আপনি আপনার জীবনযাপনের ধারা বদলাতে পারেন। এই লেখারও মূল উদ্দেশ্য একই। আপনি যদি নিজেকে কিছু সময় উপহার দিতে চান এবং কিছু টাকা জমাতে চান তবে এই লেখাটি আপনার জন্য। কে না চায় সুন্দরভাবে জীবন কাটাতে। জীবন খুবই ছোট। এর মাঝে জীবনকে উপভোগ যেমন করতে হবে তেমনি নিয়ম মেনেও চলতে হবে। জীবন একটাই, জীবনকে যতটা উপভোগ করা যায় তা করতে হবে কিন্তু অবশ্যই তা কিছু নিয়ম মেনে।
জীবনকে সুন্দর করার জন্য মাত্র ১১টি অভ্যাস আয়ত্ত করা প্রয়োজন। এই ১১টি অভ্যাসই বদলে দিবে আপনার জীবন। যদিও সহজেই আয়ত্ত করা সম্ভব নয়। প্রচলিত রয়েছে মানুষ অভ্যাসের দাস, এই একটি কথা আপনাকে বদলাতে হবে। অভ্যাস আপনার দাস হবে। চিরচায়িত অভ্যাসগুলো বদলে ফেলুন এবং সুন্দর জীবনযাপন করুন। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই ১১টি জীবন বদলে দেওয়ার মত অভ্যাসগুলো কী কী।
১. আপনার অভিব্যক্তির উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে
জীবন মোটেও সহজ নয়। কখনও জীবনে আসবে ঝড় আবার কখনও বা অফুরন্ত আনন্দ। হাসি আর কান্না মিলেই আমাদের জীবন। কিন্তু আপনি যদি একটু বাধার সম্মুখীন হলেই ভেঙে পড়েন তবে আপনি হেরে যাবেন। জীবনের সকল বাধা সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে হবে। জীবনে বহু বাধা আসবে, বাধা আসার মানেই এই নয় যে জীবন শেষ। অনেক সময় মানুষ এসব বাধা আর কষ্ট সইতে না পেরে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ।
দিন রাত ছাড়া যেমন এই পৃথিবী কল্পনা করা যায় না ঠিক তেমনি সুখ আর কষ্ট মিলেই জীবন। কখনও বাধার সম্মুখীন হলে হতাশ হয়ে পড়বেন না। সাহসের সাথে মোকাবিলা করেন। একবার সাহসের সাথে বাধার মোকাবেলা করেন দেখবেন পরে যত বিপদই আসুক না কেন আপনি হতাশ হবেন না।
২. সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন
স্বার্থপর হবেন না। জীবনের একটি বড় নিয়ম হলো নিজে যতটা না উপহার ভাবেন তার চেয়ে বেশী অন্যকে প্রদান করা। ধরুন কেউ বিপদে পড়েছে, আপনি চাইলেই তাকে বাঁচাতে পারেন তখন তাকে ছেড়ে চলে আসবেন না। বিপদ থেকে উদ্ধার করতে না পারলেও উদ্ধারের চেষ্টা করুন। দেখবেন আপনার বিপদেও তিনি এগিয়ে আসবেন। আবার যদি কখনও এমন কোন সময় আসে যে কাজে অনেক ঝুঁকি রয়েছে তবে অন্য কাউকে সামনে না দিয়ে নিজে সেই ঝুঁকি নিন।
যদি কখনও কারো জন্য কিছু করেন তবে তা কখনও বিফলে যাবে না। আপনার বিপদেও কেউ না কেউ এগিয়ে আসবে। তাই জীবনের এই অভ্যাসের চর্চা করা খুব বেশী জরুরী। তাহলে কখনও জীবনে বাধার সম্মুখীন হলে পাশে কাউকে না কাউকে পাবেন। তাই এই অভ্যাস চর্চা করুন।
৩. প্রতিজ্ঞা রক্ষা করুন
ব্যক্তিগত জীবন হোক কিংবা ব্যাবসায়িক; কাউকে যদি কখনো কোন কিছু প্রতিজ্ঞা করেন তবে তা রক্ষা করুন। প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করবেন না। আপনার কাছে কেউ যদি এসে জীবনের কো কথা বলে তবে তা অন্য কাউকে বলা থেকে বিরত থাকুন। জীবনের জন্য প্রতিজ্ঞা রক্ষা করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি অন্যের কথা রক্ষা না করেন তবে পরবর্তীতে কেউ আপনার কথা রাখবে না। আপনি যদি কথা রাখতে না পারেন তবে ওয়াদা করবেন না। আপনি যদি ওয়াদা রক্ষা করেন তবে বাকি মানুষের বিশ্বাস অর্জন করবেন আর এটা বলার প্রয়োজন পড়ে না যে, আশেপাশের মানূষের বিশ্বাস অর্জন করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
৪. ভালো কাজে টাকা বিনিয়োগ করুন
টাকা উপার্জন করা সহজ কাজ নয়। সৎ উপায়ে টাকা উপার্জন করা খুব কষ্টের কাজ। আর সেই টাকা কখনও কোন অপ্রয়োজনীয় খাতে নিয়োগ না করে এমন কাজে নিয়োগ করুন যেখান থেকে আপনি নিজে কিছু অর্জন করবেন। সবসময় সেই খাতে টাকা বিনিয়োগ করুন যেখান থেকে আপনি সবচেয়ে বেশী পরিমাণ লাভ করতে পারবেন।
ধরুন আপনি কম দামে এক জোড়া জুতা কিনলেন, খুব বেশীদিন টিকবে না। এর থেকে কিছু দাম দিয়ে জুতা কিনে তা দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা লাভজনক, তাই নয় কি?
৫. সরলতা
সবসময় যে কোন কাজের জন্য সহজ উপায় খুঁজুন। কেউ যদি আপনার কাছে কোনো প্রশ্নের উত্তর চায় তবে তাকে সেই প্রশ্নের উত্তর সহজ ভাষায় দিন। কোনো কাজ জটিল না করে সহজ উপায়ে করুন। দেখবেন জীবনও অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। অনেক সময় অনেক সহজ কাজ থাকে কিন্তু আমরা তার উত্তর খুঁজে পাই না। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন, দেখবেন উত্তর আপনার চোখের সামনে।
৬. ব্যক্তিগত আর ব্যবসায়িক জীবন কখনও এক করবেন না
জীবনের প্রথম শর্ত হওয়া উচিত এটি। ব্যবসায়িক আর ব্যক্তিগত জীবনকে যদি এক করে ফেলি তবে অনেক গরমিল হয়ে যাবে। অফিসের কাজ বাসায় এসে বলবেন না আবার বাসার কথা অফিসে গিয়ে নয়। দুইটির মাঝেই সমন্বয় রক্ষা করা প্রয়োজন তা না হলে জীবনে অনেক জটিলতা দেখা দিবে।
৭. মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করুন
ধরুন আপনার জীবনে খুব খারাপ সময় যাচ্ছে, কিন্তু কেউ এসে আপনার সাথে কথা বলতে চাইলো। আপনার মেজাজ খারাপ বলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন তা কিন্তু হবে না। তাকে সুন্দর করে বলতে হবে। এই অভ্যাসের চর্চা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৮. বিশ্বাস হারাবেন না
কখনও বিশ্বাস হারাবেন না। আপনি যেমন জানেন রাতের অন্ধকারের পর দিন আসবেই তেমনি আপনার জীবনে খারাপ সময়ের পর সুন্দর দিন আসবেই। কখনই বিশ্বাস হারাবেন না।
৯. জীবনের মাঝে সমন্বয় করুন
কাজ আর পরিবারের মাঝে সমন্বয় করুন। জীবনে কাজ করাও যেমন জরুরী তেমনি পরিবার, কাছের মানুষকেও সময় দেয়া জরুরী। সমন্বয় করুন, জীবন অনেক সুন্দর হয়ে যাবে।
১০.কাজ করতে থাকুন
ততক্ষণ পর্যন্ত কাজ করতে থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত মনে না হবে যে কাজটি সঠিকভাবে হয়েছে। যে কাজই করুন না কেন তা সবসময় সঠিক ভাবে করুন।
১১. সবসময় নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি কী চান
নিজের সাথে কথা বলুন, নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন আপনি কী চান। দেখবেন খুব সহজ হয়ে যাবে কাজ। নিজের সাথে কথা বললেই সব কাজ সহজ হয়ে যাবে। কারণ আপনি নিজে জানেন নিজে কোন কাজে পারদর্শী, নিজে কোন কাজ সবচেয়ে ভালভাবে করতে পারবেন। তাই নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, দেখবেন সব কাজ করতে পারছেন।