পরীক্ষায় ভালো কে না চায়। আপনি কি চান না আপনার মননশীল মনকে আরেকটু মসৃণ করতে? নিশ্চয়ই চান? সেজন্য আপনাকে জানতে হবে খুব চমৎকার কিছু টেকনিক, যা আপনাকে বলে দিবে যেভাবে ভালো ফলাফল করা যায় পরীক্ষায়। আর সবকিছু বিস্তর জানতে পড়তে হবে নিচের আর্টিকেলটি। তবে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক কি সে নিয়মগুলো-
মনোযোগ

ক্লাসে মনোযোগ দিন, ক্লাসের উপস্থাপনা মন দিয়ে শুনুন। মনে রাখবেন একটি শ্রেণীকক্ষ আপনাকে অনেক কিছুই দিতে পারে যদি আপনার মনোযোগী মনোভাবটা থাকে।
তথ্য টুকে রাখুন
যখন আপনি পড়তে বসবেন তখন বইয়ের মূল তথ্যগুলোকে খাতায় টুকে রাখুন। এতে করে পরীক্ষার আগে বিশেষ তথ্যগুলোর দিকে চোখ বুলানো সহজ হবে এবং মনে থাকবে।
হোমওয়ার্ক
পরীক্ষায় ভালো করার আরেকটি বিশেষ উপায় হলো প্রতিদিনের হোমওয়ার্ক। প্রতিদিনের হোমওয়ার্ক প্রতিদিনই সম্পূর্ন করুন। দরকার হলে হোমওয়ার্ক করবার জন্য আলাদা শান্তিপূর্ণ স্থান বাছাই করুন।
ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ুন
আমরা অনেকেই বেশি পড়াশোনা দেখলে কুঁকড়ে যাই। ভাবি এত বড় অংক, এত বড় প্যারাগ্রাফ কী করে মনে রাখবো? কিন্তু পরীক্ষা হল কী আর সেই নিশ্চয়তা দেয় যে, ছোটখাট সব কিছুই দিবে আপনাকে! নিশ্চয়ই না। তার জন্যও দরকার একটা বিশেষ টেকনিক। আর তা হচ্ছে, ধরুন আপনাকে একটি সাল মনে রাখতে হবে, সালটি ১৬ নভেম্বর ১৯৯৭। কিন্তু এইভাবে পড়ে মনে রাখতে পারছেন না? টেনশন করার কিছু নেই। আপনি সালটিকে এইভাবে পড়ুন ১৬-১৯-৯৭। দেখুন তো মনে ধরে কিনা?
আবার ধরুন একটা ফোন নাম্বার ৯৮৭৬৭৮৭৯,মনে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এর ক্ষেত্রেও আপনি একই পদ্ধতি অনুসরণ করুন। এখন আপনাকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সম্পর্কে প্যারাগ্রাফ শিখতে বলা হলো। পড়েই যাচ্ছেন পড়েই যাচ্ছেন, কিন্তু হচ্ছে না? সেক্ষেত্রে মূল শব্দগুলো অর্থাৎ কি ওয়ার্ড বা মূল শব্দ বাছাই করে পড়ে দেখুন। আশা করি, কাজে লাগবে।
নিজেকে যাচাই করুন
অনেক বেশি চর্চা করুন। শ্রেণী শিক্ষকের সহায়তা নিন অথবা অনলাইন থেকে সংগ্রহ করুন। এতে আপনি কী জানেন কিংবা কী জানেন না সে ব্যপারে স্পষ্ট একটা ধারণা পাবেন। যা খুবই দরকারি।
স্থান নির্বাচন
সবকিছুর জন্য একটি নির্ধারিত স্থান চাই। জনকোলাহলে সঠিকভাবে মনোযোগ দেয়া যায় না।

বিরতি
প্রত্যেক ৩০ মিনিট পরপর অন্তত ৫ মিনিট বিরতি নেয়া উত্তম। যাতে আপনার মস্তিষ্ক কাজ করবে দ্রুত এবং চাপও কম পড়বে।
নিজের স্টাইলে পড়ুন
প্রত্যেক মানুষের পড়ালেখায় একটা নিজস্বতা বিদ্যমান। কেউ স্বাভাবিক ভাবে অনর্গল পড়েই যায়, কেউ শরীরের অঙ্গভঙ্গিমায়, আবার কেউ কেউ মিউজিককে সঙ্গে নিয়ে খুব দ্রুতই পড়া মনে গাঁথতে পারে। তাই নিজের জন্য সঠিক উপায়টি গ্রহণ করুন।
নিজেকে বোঝা
একবার ভাবুন তো আপনার এমন কোনো স্মৃতি কিংবা ঘ্রাণ কি পছন্দের তালিকায় নেই যা আপনাকে প্রতিনিয়ত রিফ্রেশমেন্ট উপহার দেয়। পড়ার সময় তবে এই স্মৃতিচারণ হয়ে যাক! আর যে ঘ্রাণ আপনার ভালো লাগে সেটা স্প্রে করে পড়তে বসে দেখুন তো কাজে আসে কিনা?
খাবার
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তাই সব কিছুর আগে নিজের খাওয়া, গোসল ঠিক রাখুন। যে খাবার খেলে আপনার পরিপূর্ণ তৃপ্তি আসে সে খাবারই খেতে চেষ্টা করুন। এতে আপনার মস্তিষ্ক দ্রুত কাজ করবার সক্ষমতা অর্জন করবে।
ঘুম
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান। এতে শরীর একটি নির্দিষ্ট সিস্টেমের আওতায় আসবে।
দরকারি সব তথ্য সংগ্রহ
যেকোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পূর্বে পরীক্ষা সংক্রান্ত সব জিনিস সংগ্রহে রাখুন।
প্রচুর পানি পান করুন
প্রচুর পানি পান করুন। এতে মনে আলাদা একটা আমেজ আসবে।
আত্মবিশ্বাস
আত্মবিশ্বাসী হোন। কখনোই নিজেকে খাটো করে দেখবেন না। আপনার সফলতার হার অনেকটাই আপনার আত্মবিশ্বাসের উপর নির্ভর করে।
ভুল
নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ভুল থেকে শিক্ষা নেবার বিকল্প নেই।
দল বেঁধে পড়াশোনা করুন
অযথাই সময় নষ্ট না করে নেমে পড়ুন গ্রুপ স্টাডি বা দল বেঁধে পড়াশোনায়। গ্রুপ স্টাডি পরীক্ষায় সফলতার হার অনেকাংশেই বাড়িয়ে দেয়। প্রচলিত একটি কথা তো সবারই জানা আছে, প্রথমে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী।

বাস্তববাদী
বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বুঝতে শিখুন। অর্থাৎ আপনি যা পড়ছেন তার সাথে সামঞ্জস্য কিছু অবশ্যই এই পরিবেশে বিদ্যমান। এই দুইয়ের মধ্যে তুলনা করতে শিখুন। এতে আপনার বাড়তি জানার আগ্রহ জন্মাবে।
পরীক্ষার খাতা
কথা প্রসঙ্গে বলা যায়, পরীক্ষা সবারই ভালো হয়। কিন্তু খারাপ হয় কেবল ফলাফল। কিন্তু এর দায়ভারটা সম্পূর্ণই আপনার ব্যক্তিগত।

কেননা আমরা অনেকেই পরীক্ষার খাতায় অপ্রাসঙ্গিক কথা টেনে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে যাই। এতে যেমন আপনার সময় নষ্ট হচ্ছে ঠিক তেমনি পরীক্ষায় নম্বর পাবার ব্যাপারটিও কমে যাচ্ছে। তাই অপ্রাসঙ্গিক কিছু না টেনে, সহজ সাবলীল ভাবে প্রাসঙ্গিক কিছু লিখুন।
রিভিশন
পরীক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে অংশটি নিয়ে না বললেই নয়, তা হচ্ছে রিভিশন। আপনি অনেক লিখলেন। কিন্তু দেখা গেলো, আপনি বিষয় কোডটাই দিলেন না কিংবা বানান ভুল লিখলেন বা কোনো প্রশ্নের উত্তর লিখতে ভুলে গেলেন! তাই রিভিশনের ব্যাপারটি মাথায় রেখেই এগোবেন। রিভিশন পার্টটিকে আলাদা ভাবে গুরুত্ব দেবার অবশ্যই দরকার আছে।
আশা করি, উপোরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল সম্ভব।